বছরজুড়ে চলছে তদন্ত
মাসুদ আলম : গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলার এক বছরেও তদন্ত শেষ হয়নি। আজ শনিবার হলি আর্টিজানে হামলার বিভীষিকাময় এক কছর। কবে নাগাদ তদন্ত শেষ হবে জানা নেই তদন্ত কর্মকর্তার। তবে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন খুব শীঘ্রই হলি আর্টিজান হামলার তদন্ত কাজ শেষ করে চার্জশিট দেওয়া হবে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের পরির্দশক হুমায়ুন কবির বলেন, নতুন করে বলার মতো কিছু নেই। তবে হলি আর্টিজান হামলার ঘটনায় তদন্ত কাজ শেষের দিকে। তবে কবে নাগাত মামলার চার্জশিট দেওয়া হবে তা স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।
কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, গুলশান হলি আর্টিজান হামলায় যারা সরাসরি অংশ নিয়েছিল তাদের কেউ বেঁচে নেই। এ ঘটনায় জড়িত চারজন পুলিশের হাতে গ্রেফতার রয়েছে। এ ঘটনায় এক বছরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে আটজন নিহত হয়েছেন। ওই হামলায় কোনো না কোনোভাবে জড়িত অন্তত পাঁচজনের খোঁজ চলছে। পাঁচজনের মধ্যে দুয়েকজনকে গ্রেফতার করতে পারলেও এই মামলার তদন্ত আমরা শেষ করব। এই পাঁচ জঙ্গির মধ্যে সোহেল মাহফুজ, রাশেদুল ইসলাম ওরফে র্যাশ ও বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেট সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। মামলার তদন্ত কাজ শেষের দিকে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছিলেন, গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় নজিরবিহীন সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার মামলার চার্জশিট শিগগিরই দেওয়া হবে। এখানে আমাদের শুধু দেশি নয়, ইতালিয়ান, জাপানিজ, ইন্ডিয়ান ও বাংলাদেশ বংশোদ্ভূত আমেরিকান নাগরিক নিহত হয়েছেন। আমরা সে জন্য অত্যন্ত দুঃখিত।
জানা গেছে, গত বছরের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। এতে নিহত হয় তিন বাংলাদেশি নাগরিকসহ ২০ জন। অন্যদের মধ্যে ৯ জন ইতালির, ৭ জন জাপানের এবং একজন ভারতীয়। এছাড়া জঙ্গিদের হামলার শুরুতেই তাদের আক্রমণে দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। এছাড়া রাতের বিভিন্ন সময় উদ্ধার করা হয় আরও অন্তত ৭ জনকে। অপারেশন থান্ডারবোল্টের পর রেস্তোরাঁ থেকে ৫ জঙ্গিসহ ৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এরা হলো নিবরাজ ইসলাম, মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল ওই হামলায় অংশ নিয়েছিল বলে দাবি পুলিশের। এছাড়া পালাতে গিয়ে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরেক রেস্তোরাঁকর্মী। এরপর বিভিন্ন অভিযানে নিহত তামিম চৌধুরী, জাহিদুল ইসলাম, তানভীর কাদেরী, নুরুল ইসলাম মারজান, আবু রায়হান তারেক, সারোয়ার জাহান, আব্দুল্লাহ মোতালেব ও ফরিদুল ইসলাম আকাশ ওই হামলায় কোনো না কোনোভাবে সম্পৃক্ত ছিল বলে জানান তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। হামলায় জড়িত গ্রেফতার চারজনের মধ্যে মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে ‘রাজীব গান্ধী’ ও রাকিবুল হাসান রিগান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সর্বশেষ মিজানুরকে গ্রেফতার করা হয়। সেই রাতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে হলি আর্টিজানে আটকে থাকা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আবুল হাসনাত রেজাউল করিমও কারাগারে আছেন। হলি আর্টিজান মামলার অভিযোগপত্র জমার তারিখ এর আগে সাতবার পিছিয়েছে। এ মামলার পরবর্তী তারিখ রয়েছে ১৬ জুলাই। তবে আগামী তারিখে অভিযোগপত্র জমা দিতে পারবে কিনা তাও নিশ্চিত নয় তদন্ত কর্মকর্তা। সম্পাদনা : ইসমাঈল হুসাইন ইমু