পবিত্রতাই মুগ্ধতা
মুহাম্মদ নাজমুল ইসলাম
পবিত্র ও পবিত্রতা। এটি আরাবি শব্দ। পবিত্রতাকে আরাবিতে বলা হয় ‘তাহারাত’। আর তাহারাত শব্দটি আরবি ব্যাকরণ অনুসারে ‘মাসদার’ এবং অর্থ পবিত্রতা। দেখুন! মন ও স্থানের পবিত্রতা সম্পর্কে মহান আল্লাহ তাআলার নির্দেশ, ‘আমার সঙ্গে কোনো শরিক স্থির করো না এবং আমার ঘরকে পবিত্র রেখ।’ (সূরা-২২ হজ, আয়াত: ২৬)। পাশাপাশি পবিত্রতা আনুষ্ঠানিক ও সাধারণ পবিত্রতা ও পবিত্রকরণের পরিভাষা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ইসলাম ধর্মে পবিত্রতা একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। কারণ, পবিত্রতা ইমানের অর্ধাংশ। আবু মালিক আশয়ারি রা বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘পবিত্রতা অর্জন করা হচ্ছে ইমানের অর্ধেক।’ (মুসলিম, মিশকাত হাদিস, ২৮১)। তিনি আরও বলেন, ‘জান্নাতের চাবি হলো সালাত এবং সালাতের কুঞ্জি পবিত্রতা।’ (মুসনাদে আহমদ, আবু দাউদ, তিরমিজি, দারেমি, ইবনে মাজা, মিশকাত/৩৯ ও ৪০ পৃ.)। পবিত্রতা নবী-রাসূলগণের বিশেষ গুণ বা বৈশিষ্ট্য। তাদের পরিচয় বিবৃত করে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই তারা এমন লোক, যারা অতি পবিত্র হতে চায়।’ (সূরা-৭ আরাফ, আয়াত: ৮২; সূরা-২৭ নমল, আয়াত: ৫৬)। এছাড়াও সমস্ত শরীর ও লেবাস-পোশাককে সব রকম নাপাক জিনিস থেকে পাক রাখা এবং সালাতের রুকন যথা রুকু, সিজদা প্রভৃতি দ্বারা শরীরকে শোভিত করা। এটা হলো সর্বসাধারণ মুসলমানদের পবিত্রতা। কারণ মুসলমান ও কাফেরের মধ্যে পার্থক্যই হলো এই সালাত। সুতরাং এই পবিত্রতাও ইমানের অর্ধেক। (বাজলুল মানফায়াহ লি ইজাহিল আরকানিল আরবাআহ/পৃ. ৯) দ্বিতীয়ত হচ্ছে, পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্নতা। দেখুন! পরিবেশ মানুষকে স্বচ্ছন্দ্যতা জোগায়। যেখানে যত ভালো পরিবেশ সেখানে বসবাস করা মানুষগুলোর ধ্যান ধারণা আচার-আচরণে ততই মুগ্ধতা পরিলক্ষিত হয়। অনেক ক্ষেত্রেই মানুষ পরিবেশ দ্বারা প্রভাবিত হয়। বলা যেতে পারে, ভালো পরিবেশ মানুষকে ভালো করে। আর গান্ধেগি পরিবেশ মানুষকে নোংরামির প্রতি ধাবিত করে। তাই পরিবেশ-এর স্বচ্ছতা, শৃঙ্খলাতার প্রতি গুরুত্বারোপ দেওয়া সকলেরই কাম্য। আর এর জন্য সবচেয়ে বেশি যে জিনিসটার প্রতি দৃষ্টি দেওয়া বাঞ্ছনীয় সেটা হলোÑ পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্নতা। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে পবিত্র পরিচ্ছদ গ্রহণ বা পোশাক পবিত্রকরণ ও আবিলতামুক্ত হওয়ার বিষয়ে আল্লাহ তাআলার আদেশ: ‘হে বস্ত্রাচ্ছাদিত! উঠুন, সতর্ক করুন; এবং আপনার প্রতিপালকের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করুন। আপনার পরিচ্ছদ পবিত্র রাখুন, অপবিত্রতা পরিহার করে চলুন। (সূরা-৭৪ মুদ্দাছছির, আয়াত: ১-৪)। (চলবে-১)
লেখক: দেওবন্দ, ভারত