অনলাইন মিডিয়ারও জবাবদিহিতা থাকা উচিত
কাজী সিরাজ
অনলাইন নিউজপোর্টাল মিডিয়ার একটি অংশ। এখন নিউজপ্রিন্ট ও টেলিভিশনের জন্য যদি রেজিস্ট্র্রেশন লাগে তাহলে অনলাইন পোর্টালগুলো তো একই কাজ করছে। সেদিক থেকে অনলাইন মিডিয়াকে জবাবদিহিতায় নিয়ে আসার জন্য সরকারের এই সিদ্ধান্তকে আমি সঠিক মনে করি। এই অনলাইন নীতিমালাকে আমি সমর্থন করি। তবে রেজিস্ট্র্রেশনের নামে নিয়ন্ত্রণের যেন খড়গ চাপিয়ে না দেওয়া হয়। অর্থাৎ অনলাই মিডিয়ার স্বাধীনতা যেন হরণ করা না হয় সেদিকটি নিশ্চিত করতে হবে।
দেশে যে ব্যাঙের ছাতার মতো হাজারও অনলাইন নিউজ পোর্টাল হয়ে গেছে এগুলোকে একটু জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্য হলেও নীতিমালাটি দরকার। অনেক নিউজপোর্টালের তো কোনো মান নেই। একদিকে যেমন মান নিয়ন্ত্রণ করা দরকার, অন্যদিকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতাও নিশ্চিত করতে হবে। আরেকটা বিষয় হচ্ছে, কেউ যাতে সীমা লংঘন করতে না পারে সেদিকেও খেয়াল রাখা হবে। যেমন পত্রিকাগুলো একটা জবাবদিহিতার মধ্যে থাকে, আপনি যা খুশি তাই কি লিখতে পারেন? যা খুশি তাই কি বলতে পারেন? টেলিভিশনগুলোতেও তো অনেক কিছু মেনে চলতে হয়।
কিন্তু অনলাইন নিউজপোর্টালগুলোতে অনেক কিছু মানা হয় না। যখন যার ইচ্ছা হলো তখন সে কম্পিউটার কিনে অনলাইন পোর্টাল করে ফেলল। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে যদি কেউ বিরোধিতা করে আমার মনে হয় তা হবে অকারণ বিরোধিতা। নীতিমালার ফলে সব অনলাইন নিউজপোর্টাল একটা জবাবদিহিতার মধ্যে চলে আসবে। আমরা সংবাদপত্রকে জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে চাই, টেলিভিশনগুলোকেও জবাবদিহিতার মধ্যে আনতে চাই, তাহলে অনলাইন মিডিয়ার জবাবদিহিতা থাকবে না কেন? সবাকেই জবাবদিহিতার মধ্যে থাকা উচিত।
অনলাইন মিডিয়ার এই নীতিমালাকে ইতিবাচকভাবেই দেখছি আমি, যদি তা প্রপারলি করা হয়। কিন্তু যদি ওই কণ্ঠরোধ করার চিন্তা-ভাবনা থেকে করা হয়ে থাকে তাহলে সমস্যা থেকে যাবে। হোক না শত শত বা হাজারও নিউজপোর্টাল, কেউ যদি মেইনটেন করতে পারে তাহলে অনলাইন মিডিয়া চালাবে। কিন্তু জবাদিহিতার নামে যদি বন্ধ করে দেওয়ার প্রবণতা থাকে তাহলে তো হবে না। আমার মনে হয়, যত খুশি তত অনলাইন হোক, কিন্তু জবাবদিহিতার মধ্যে থাকুক, যাতে এ বিষয়ে কেউ বাড়াবাড়ি করতে না পারে।
পরিচিতি: সিনিয়র সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক
মতামত গ্রহণ: তানভীন ফাহাদ/সম্পাদনা: আশিক রহমান