সন্দেহের জন্য আমার ছেলেকে প্রাণ দিতে হলো : শাওনের মা
হুমায়ুন কবির খোকন : হলি আর্টিজানে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় বাবুর্চির সহকারী জাকির হোসেন শাওনের মা দাবি করেছেন, তার সন্তানকে সন্দেহজনকভাবে হত্যা করেছে। তিনি এই হত্যার বিচার দাবি করেন।
গতকাল শনিবার দুপুরে হলি আর্টিজান বেকারিতে ওই হামলার এক বছর পূর্তিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে এসে তিনি এ দাবি জানান।
শাওনের মা মাসুদা বেগম বলেন, পুলিশ তো আমার ছেলেকে আমার কোলে ফিরিয়ে দিতে পারত। কিন্তু তারা তা করেনি। শুধুমাত্র সন্দেহের জন্য আমার ছেলেকে প্রাণ দিতে হলো। এভাবে সন্দেহ করলে সব ঘরের ছেলেকেই জীবন দিতে হবে।
এ সময় শাওনের বাবা আবদুস সাত্তারও সঙ্গে ছিলেন। ছেলের ছবি দেখিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে মাসুদা বেগম বলেন, আমরা গরিব মানুষ। পিঠা বিক্রি করি। আজকে আমার ছেলে বেঁচে থাকলে বেতন, বোনাস পাইতো। আমাদের দিত। একজন গরিব মা আমি। ছেলে থাকলে আমার কতটা বড় শক্তি ছিল। আজ আমাকে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কের হলি আর্টিজান বেকারিতে একদল জঙ্গির হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা ও ১৭ বিদেশিসহ ২২ জন প্রাণ হারান। পরদিন সকালে কমান্ডো অভিযান চালিয়ে হলি আর্টিজানের নিয়ন্ত্রণ নেয় নিরাপত্তা বাহিনী। অভিযানে নিহত হয় ৬ জঙ্গি। ওইদিন হামলার কয়েক ঘণ্টার মাথায় ওই এলাকা থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় জাকির হোসেন শাওনকে পুলিশ আটক করে। সেই জাকির হোসেন শাওন এক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পর হাসপাতালে মারা যান।
পরিবারের দাবি, শাওন প্রায় একবছর ধরে হলি আর্টিজান বেকারিতে বাবুর্চির সহকারী হিসেবে কাজ করছিলেন। তিনি কোনো অপরাধে জড়িত ছিলেন না। ওই অভিযানের আগেই ঘটনাস্থলের কাছ থেকে পুলিশ রক্তাক্ত অবস্থায় শাওনকে আটক করে। সন্দেহজনক মনে হওয়ায় তাকে পুলিশ পাহারায় ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। সম্পাদনা : শাহানুজ্জামান টিটু