চিড়িয়াখানার জন্য নতুন প্রাণীসহ ওয়াটারবোট সংগ্রহের উদ্যোগ
তরিকুল ইসলাম সুমন : জাতীয় চিড়িয়াখানার জন্য প্রাণী, বিলুপ্তপ্রায় মাছ ও ওয়াটার বোট সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। গত ২৬ জুন এবং ১ জুলাই প্রাণী সম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক চিড়িয়াখানা পরিদর্শনকালে সংশ্লিষ্টদের এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
জাতীয় চিড়িয়াখানার এস্টেট অফিসার ও নিরাপত্তা কর্মকর্তা অসীম কুমার দাস এই প্রতিবেদককে জানান, চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ সব সময় দর্শনার্থীদের অধিকার ও প্রত্যাশা অনুযায়ী সবটুকুই বিনোদন দিতে কাজ করছে। দর্শনার্থীদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা চিড়িয়াখানার ৩২ একরের দুটি লেকে প্যাডেল চালিত ওয়াটার বোট চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রাণী সম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালকের কাছে চিঠি দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, এটি আমাদের প্রাথমিক উদ্যোগ হলেও আমরা দর্শনার্থীর নিরাপত্তার (সাতার না জানা), দুর্ঘটনায় পড়লে কিভাবে উদ্ধার কাজ করা, লেকে মৎস্য শিকারিদের কথা বিবেচনা করে এ লেকে বোট নামানোর বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। পরীক্ষামূলকভাবে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ এ বোট সার্ভিস চালু করবে। এটি সফল হলে পরবর্তীতে প্রাইভেট সেক্টরে ছেড়ে দেওয়া হবে। এতে করে একদিকে দর্শনার্থীরা নৌ ভ্রমণ করতে পারবে। পাশাপাশি সরকারি রাজস্ব বাড়বে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, উট প্রজাতি বা এ ধরনের কিছু প্রাণী যা আমাদের দেশে নেই এবং প্রদর্শনীর উপযোগী সে সব প্রাণী আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে সংগ্রহ করা হবে। চিড়িয়াখানার মধ্যকার দুটি (দক্ষিণ ও উত্তর) লেকে চলাচলের উপযোগী প্যাডেল চালিত বোট সংগ্রহ, অভ্যন্তরীণ রুটগুলোর দুপাশ থেকে ময়লা আবর্জনা এবং ঘাসজাতিয় উদ্ভিদ অপসারণ, বাঘ, সিংহ, ভল্লুকের খাঁচায় ডাল পালাসহ গাছ রোপণ, চিড়িয়াখানার মধ্যকার প্রাণী জাদুঘরে রক্ষিত (একুরিয়াম ফিস) বিভিন্ন বিদেশি মাছের সঙ্গে দেশীয় প্রজাতির দুষ্প্রাপ্য এবং বিলুপ্তপ্রায় মাছ সংরক্ষণ, চিড়িয়াখানার বিভিন্ন খাঁচা মেরামত, সাইনবোর্ড স্থাপনসহ বিভিন্ন বিষয় পরিপালনের জন্য নির্দেশনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৫০ সালে হাইকোর্ট চত্বরে জীবজন্তু প্রদর্শনের ৪-৫ একর জায়গায় ঢাকা চিড়িয়াখানা স্থাপন করা হয়। যা ১৯৭১ সালে হাইকোর্ট চত্বর থেকে মিরপুরে ১৮৬.৬০ একর জায়গায় চিড়িয়াখানাটি স্থানান্তর করা হয়। ১৯৭৪ সালের ২৩ জুন দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। ২০১৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় চিড়িয়াখানা হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। এখানে বর্তমানে ১৩৮ প্রজাতির ২ হাজার ৬২২টি প্রাণী ও পাখি রয়েছে। প্রতি বছরে প্রায় ৪০ লক্ষ দর্শনার্থী এটি পরিদর্শন করেন।