চার প্রস্তাবনা নিয়ে ভাবছে বিএনপি! চলতি মাসেই সহায়ক সরকারের রূপরেখা দেওয়ার সম্ভাবনা
শাহানুজ্জামান টিটু : চিকিৎসার জন্য লন্ডনে না গেলে চলতি মাসেই নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা দিতে পারেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ঈদের পরই সহায়ক সরকারের রূপরেখা দেওয়া হবে বলে আগে জানিয়ে ছিলেন খালেদা জিয়া। এই সহায়ক সরকারের রুপরেখা, চেহারা কেমন হবে তা নিয়ে ইতোমধ্যে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। সেখানে চার প্রস্তাবনা আলোচনা হয়েছে।
দলটির সূত্র জানায়, সম্ভাব্য খসড়ায় চার প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে এক. নির্বাচনকালীন সময়ে ৯০-এর আদলের সরকার তবে সেই সরকারে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকতে পারবেন না। দুই, প্রধানমন্ত্রী থাকবেন কিন্তু তিনি ছুটিতে থাকবেন, নির্বাচনকালীন সরকার চালাবেন দেশের বিশিষ্ট নাগরিকদের সমন্বয়ে গঠিত মন্ত্রিসভা। তিন. প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী ক্ষমতা কমিয়ে সর্বদলীয় সরকার গঠন এবং চার. ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রাণালয় ভাগাভাগির যে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল সেই আলোকে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন। তবে এসব প্রস্তাবনার মধ্যে দলটির নীতিনির্ধারকরা প্রথম প্রস্তাব ৯০-এর আদলে নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন। এই চার প্রস্তাবনার বাইরে আরও কোনো বিকল্প নিয়েও চিন্তাভাবনা চলছে বিএনপিতে। সহায়ক সরকারের চূড়ান্ত ঘোষণায় বিএনপি চেয়ারপারসন সরকারকে সংলাপে বসার আহ্বান জানাবেন। নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা ঘোষণার পর তা যদি মেনে না নেয় বা সংলাপে বসার কোনো আগ্রহ না দেখায় তাহলে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে তার ফয়সালা জনগণ করবেন। এমনটা জানিয়েছে দলটির একাধিক নেতা।
দলটির সিনিয়র এক নেতা বলেন, যেহেতু সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের কোনো বিধান নেই। দেশে একটা সুষ্ঠু সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছার উপর নির্ভর করছে বিষয়টি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের বিকল্প নেই। আর বর্তমান সরকারের অধীনে ওই ধরনের নির্বাচনের সম্ভাবনা একেবারেই শূন্যের কোটায়। ফলে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সহায়ক সরকারের প্রয়োজনীয়তা এখন গণ দাবিতে পরিণত হয়েছে। আর সে কারণেই আমাদের নেত্রী দ্রুতই সহায়ক সরকারের প্রস্তাব দেবেন। সেখানে ক্ষমতাসীন দলকে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানাবেন চেয়ারপারসন। যদি প্রস্তাবে সাড়া না দেয় তাহলে জনগণের ভোটাধিকার রক্ষায় রাজপথেই সহায়ক সরকারের ফয়সালা হবে।
এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যাওয়ার কথা ছিল চলতি মাসের ৬ তারিখে। কিন্তু ওই দিন দুর্নীতির দুই মামলায় আদালতে হাজিরা দেওয়ার দিন ধার্য রয়েছে। এ কারণে তিনি যেতে পারছেন না। তবে চলতি মাসের যেকোনো দিন তার যাওয়ার কথা রয়েছে। যদি তিনি লন্ডনে না যান তাহলে চলতি মাসেই সহায়ক সরকারের রূপরেখা ঘোষণা করতে পারেন বলে বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করতে চায় বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা। তবে তার আগে নির্বাচনকালীন সরকারের চেহারা কেমন হবে সে বিষয়ে সরকারের কাছ থেকে সুস্পষ্ট ধারণা পেতে চায় দলটি। সম্পাদনা : হুমায়ুন কবির খোকন