বারমাসী তরমুজে ভাগ্য খুলেছে পাবনার আনিছুরের
ডেস্ক রিপোর্ট : পাবনায় বারমাসী তরমুজ চাষ করে ভাগ্য খুলেছে কৃষক আনিছুরের। দেখতে আকর্ষণীয়, খেতে সুস্বাদু এসব তরমুজের বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় চলতি মৌসুমে তার লাভ ছাড়িয়েছে লক্ষাধিক টাকা। আনিছুরের সাফল্য সাড়া ফেলেছে এলাকার অন্যান্য কৃষকের মাঝেও। -পরিবর্তন
পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া গ্রামের কৃষক আনিছুর রহমান। প্রচলিত জাতের সবজি ও ফলের পাশাপাশি শখ ও কৌতুহলের বশে গত বছর পরীক্ষামূলকভাবে শুরু করেন থাই জাতের তরমুজ চাষ। সফলতা পাওয়ায় এ বছর দেড় বিঘা জমিতে চাষ করেন কানিয়া, মুনিয়া ও সুইটব্লাক নামের তিন প্রজাতির থাই তরমুজ। ফলন ভাল ও বাজারে দাম ভাল পাওয়ায় লাভের মুখ দেখেছেন তিনি।
বারমাসী তরমুজ আবাদে আনিছুরের সফলতার খবরে ফসলটির প্রতি আগ্রহ জেগেছে স্থানীয় কৃষকদের। প্রতিদিনই আশেপাশের গ্রাম থেকে কৃষকেরা দেখতে আসছেন আনিছুরের তরমুজ ক্ষেত। সরেজমিনে আনিছুরের তরমুজ ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, জমিতে তরমুজের জন্য তৈরী করা হয়েছে সারি সারি মাচা। মাচাগুলোতে তিন ধরনের তরমুজ ঝুলছে। এদের মধ্যে কানিয়া জাতের তরমুজ গুলি ডোরাকাটা সবুজ রঙের। তবে এর ভেতরের অংশ হলুদ রঙের। পাশের মাচায় ঝুলছে হলুদ রঙের বাঙি সদৃশ তরমুজ।
জানা গেল এর নাম মুনিয়া, ভেতরের অংশ লাল। কিছু মাচায় কালচে সবুজ রঙের সুইট ব্লাক তরমুজ, এরও ভেতরের অংশ লাল রঙের।
তরমুজ চাষী আনিছুর জানান, তিন ধরনের তরমুজ চাষ করলেও বাজারে কানিয়া তরমুজের চাহিদা সবচেয়ে বেশী। এরপরই রয়েছে সুইট ব্লাক। গত বছর ঢাকা থেকে এসব তরমুজের বীজ সংগ্রহ করেন তিনি। গত মৌসুমে লাভবান হওয়ায় এ বছর চাষের পরিধি বাড়িয়েছেন। আগামীতে আরো বড় পরিসরে বারমাসী তরমুজ আবাদের পরিকল্পনা রয়েছে তার।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আনিছুর বলেন, নিত্য নতুন ফসল আবাদে আমার আগ্রহ ছোটবেলা থেকেই। গত বছর পাঁচ কাঠা জমিতে তরমুজ পরীক্ষামূলক চাষ করি। বাজারে দেখলাম ভাল চাহিদা। এ বছর দেড় বিঘা জমিতে বারমাসী তরমুজ রোপণ করে দারুণ ফলন পেয়েছি, খরচ হয়েছে ২৫ হাজার টাকা। বাজারেও ভাল চাহিদা। প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৮০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছি। ক্ষেতে আরও যা আছে তাতে সব মিলে আরো ৩০-৪০ হাজার টাকা বিক্রি হবে। স্বল্প সময়ে ভাল লাভ হওয়ায় আনিছুরের দেখাদেখি বারমাসী তরমুজ আবাদে আগ্রহী হয়েছেন এলাকার অন্যান্য কৃষকেরাও।
আনিছুরের সাফল্যে খুশি জেলার কৃষি বিভাগও। নতুন ফসল উৎপাদনে উদ্যমী চাষীদের সহযোগীতার আশ্বাসও দিলেন তারা। এ প্রসঙ্গে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ি পাবনার উপ-পরিচালক বিভূতি ভূষন সরকার বলেন, আনিছুর রহমান প্রগতিশীল কৃষক। তিনি বিভিন্ন সময় নতুন নতুন ফসল চাষে সফল হয়েছেন। এবার থাই তরমুজ চাষ করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। আমরা এ ধরনের প্রচেষ্টায় সর্বাত্মক সহযোগীতা প্রদান করছি। আশা করছি আগামীতে জেলায় বারমাসী তরমুজ উৎপাদন অনেক বৃদ্ধি পাবে।
চলতি বছর জেলায় ১৬৫ হেক্টর জমিতে বারমাসী তরমুজের আবাদ হয়েছে। চাষের প্রসার ঘটলে গরমে প্রশান্তির এ ফলটির আস্বাদ ভোক্তারা সত্যিকার অর্থেই পাবেন বারোমাস এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।