বিদায়ী অর্থবছরে রেমিটেন্স কমেছে ১৭ হাজার কোটি টাকা
জাফর আহমদ : বিদায়ী ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রবাসী (রেমিটেন্স) আয় কমেছে ১৭ হাজার কোটি টাকা। সদ্য বিদায়ী ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রবাসীরা এক হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ ডলার রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন। যা ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ছিল এক হাজার ৪৯২ কোটি ৬২ লাখ মার্কিন ডলার। সে অনুযায়ী ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রেমিটেন্স কমেছে ২১৬ কোটি ১৭ কোটি ডলার বা ১৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ। প্রতি ডলারে ৮০ টাকা ধরে টাকার অংকে রেমিটেন্স কমেছে ১৭ হাজার ২৯৪ কোটি টাকা।
বাংলাদেশের অধিকাংশ প্রবাসী শ্রমিক মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত আছে। দেশে আসা প্রবাসী আয়ের বড় অংশই সেখান থেকে আসে। সাম্প্রতিক সময়ে মধ্যপ্রাচ্যে তেলের দাম কমে যাওয়া, মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে যুদ্ধ-বিগ্রহ. ডলারের মুল্য হ্রাস, মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহে প্রবাসী আয়ের উপর করারোপ ও অর্থনৈতিক মন্দার কারণে দেশে প্রবাসীদের আয় কমে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী বিরোধী সরকার ক্ষমতায় আসা ও বেক্সিটের প্রভাবে ইউরোপে থেকেও প্রবাসী আয় কমেছে। একইভাবে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা আসাও রেমিটেন্স কমার অন্যতম কারণে বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক ও প্রবাসী শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করছেন এমন বিশেষজ্ঞরা
রেমিটেন্সের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত দুই বছর ধারাবাহিক রেমিটেন্স কমে সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরের গত ৫ বছরে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। গত ২০১১-১২ অর্থবছর থেকে ধারাবাহিকভাবে বাড়লেও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তা আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, গত ২০১১-১২ অর্থবছরে প্রবাসীদের রেমিটেন্স পাঠানোর পরিমাণ এক হাজার ২৮৪ কোটি ৩৪ লাখ ডলার ছিল। এরপর থেকে প্রতি বছরই প্রবাসী আয় ১৪ হাজার ডলারের উপরে ছিল। কিন্তু চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে হঠাৎ প্রবাসী আয় কমে ১ হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ ডলারে নেমে এসেছে। যা গত ৫ বছরের তুলনায় সর্বনিম্ন রেমিটেন্স।
এদিকে গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দেশে প্রবাসী আয় ছিল ১৪ হাজার ৯৩১ দশমিক ১৫ মিলিয়ন ডলার। আর ২০১৪-১৫ অর্থবছরে প্রবাসী আয় ছিল ১৫ হাজার ৩১৬ দশমিক ৯১ মিলিয়ন ডলার। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ছিল ১৪ হাজার ২২৪ দশমিক ৩১ মিলিয়ন ডলার। ২০১২-১৩ অর্থবছরে ছিল ১৪ হাজার ৪৬১ মিলিয়ন ডলার।
প্রবাসী আয় কমে যাওয়ার কারণ ও তার প্রতিকারে করণীয় অনুসন্ধানে কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ ব্যাপারে একটি গবেষণা টিমও গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। টিম ইতোমধ্যে টাকা পাঠানোর পদ্ধতি সহজ করার সুপারিশ করেছে। এ টিম এখনো কাজ করছে। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ