নারীর ইসলাম
া হাফসা ইসলাম
একটা ছেলের যেমন স্বাবলম্বী হওয়া প্রয়োজন, ঠিক তেমন একটা মেয়েরও স্বাবলম্বী হওয়া প্রয়োজন। মেয়েদের অবশ্যই নিজের পায়ে দাঁড়ানো উচিত। এই পিছিয়ে থাকা সমাজকে বোঝানো উচিত আমরাও পারি ছেলেদের মত করে পথ চলতে….
হাজার ও নারীর মুখে এমন স্লোগান শোনা যায়, তারা চলনে বলনে বেপরোয়া ও লাগামহীন। ইসলাম বলে নারীর ক্যারিয়ার তার ঘরে, বাহিরে নয়। এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সা.)এর হাদীস, সাহাবা (রা:)দের দৃষ্টান্ত, উলামাদের বক্তব্য ১৪০০ বছর ধরে সুবিদিত। কোন হকপন্থী আলেম নারীদের ঘরের বাহিরে কাজ করার ব্যাপারে অনুমতিজ্ঞাপক ফাতাওয়া দেননি। সেকুলারদের কথা বাদই দিলাম অনেক প্র্যাক্টিসিং মুসলিমাহ দাবিদাররাও নিজেদের ক্যারিয়ারিস্ট ছাড়া যেন ভাবতেই পারেন না। ক্যারিয়ার গড়তে হবে, নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে, হেন করতে হবে তেন করতে হবে কতো যুক্তি। মুসলিম নারীদের ক্যারিয়ার তার ঘরে, বাহিরে নয়। এটাই ইসলামের দাবি।
“হিজাব করে মহিলারা পুরুষদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে পারবে” একটি বহুল প্রচলিত শয়তানি ধোঁকা। নারীদের সেই পুরনো উক্তি “মেয়েরা কি পড়াশোনা করছে ঘরে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকার জন্য? “হিজাব করে মেয়েরা কেন বাহিরে কাজ করতে পারবে না?” ইত্যাদি। অবশ্যই নারী ডাক্তার, নার্স, নারী টিচার প্রয়োজন নারীদের জন্যই। এইজন্য নারী শিক্ষা অবশ্যই প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের সিস্টেমটা এমন যে নারী সারাজীবন শিক্ষা অর্জন করার পর তাকে এমন পরিবেশে চাকরি করতে হয় যে পরিবেশকে ইসলাম হারাম ঘোষণা করেছে। যেখানে পুরুষ সহকর্মী পাশে বসা থাকে ওই পরিবেশে হিজাব করে চাকরি করার কথা বলা ধর্মের সাথে মশকারা ছাড়া কিছুই না। হয়ত আপনি হিজাবের সংজ্ঞা বুঝেন না, আর না হয় শয়তানি ধোঁকায় আপনি আক্রান্ত।
একটা মা খুব ভালো করেই জানেন তার অনুপস্থিতিতে তার বাচ্চাকে কাজের মেয়ে বা বুয়া কিভাবে লালনপালন করবে। অথচ তথাকথিত ক্যারিয়ারের দোহাই দিয়ে এখনকার কিছু মায়েরা তাদের সন্তানদের দেখাশোনা করার পরিবর্তে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অফিস করে তার ক্যারিয়ারের মর্যাদা রক্ষা করে। অথচ তার স্বামীর ইনকাম দিয়ে তাদের সংসার খুব ভালো করেই চলে যেত। টাকা রোজগারের জন্য সন্তানকে ঘরে কাজের লোকের কাছে ফেলে রেখে তার বাহিরে কাজ করতে যাওয়ার কোনই প্রয়োজন ছিল না। যারা গার্মেন্টসে চাকুরী করেন, কম-বেশি তাদেরটা প্রয়োজনের তাগিদেই! কিন্তু, কর্পোরেট ওয়ার্ল্ডে যারা আছেন, তাদের অধিকাংশই বিলাসিতাকে আরেকটু বাড়ানোর জন্য চাকুরিতে নিজেকে নিয়োজিত করে থাকেন। আমাদের প্রতিযোগিতা হবে, জান্নাতি তথা অনুকরণীয়দের সাথে, ‘সেকুলারদের’ সাথে নয়! কোনভাবেই নয়! কখনোই নয়!
‘প্রয়োজন’ আর বিলাসিতা এক জিনিস নয়। কেননা প্রয়োজন পূরনের জন্য তার বাবা বা স্বামীই যথেষ্ট! শাইখ উসাইমিন (রহ.) বলেন, “নারীরা যেখানে কাজ করবে, সে কর্মক্ষেত্র শুধুমাত্র নারীদের জন্যে হতে হবে। যেমন, বালিকাদের শিক্ষাদান, কারিগরি সহায়তা পরিচালনা, নিজ ঘরে মহিলাদের জন্য নারী দর্জি এবং অন্যান্য। পুরুষদের সাথে মাঠে কাজ করা নারীদের জন্য জায়েয নয়, কারণ পুরুষের সাথে তাকে মিশতে হতে পারে, যা মারাত্মক ফিতনাহ (কুকর্মে প্ররোচনা এবং নানা সমস্যার উৎস) তাই এটা উপেক্ষা করা উচিত। মূলনীতির একটি হল, নারীরা গৃহে অবস্থান করবে এবং প্রয়োজনীয় উদ্দেশ্যে ছাড়া বাইরে যাবেনা। আল্লাহ বলছেন: “আর তোমরা গৃহে অবস্থান করো এবং জাহিলি যুগের মতো নিজেদের প্রদর্শন করে বেড়াবে না।” [সূরা আল আহযাব : ৩৩]