ইসলামে স্বপ্নের বাস্তবতা কী?
া আবু তালহা তারীফ
স্বপ্ন সম্পর্কে মানুষের মধ্যে কম বেশি কৌতুহল সর্বজনীন। কম বেশি আমরা সকলে স্বপ্ন দেখতে পাই। কিন্তু সবগুলো স্বপ্ন আমরা স্মৃতিতে ধরে রাখতে পারি না। ইমাম গাজ্জালী (রহ:) বলেন, এই জগত ব্যতিত আরও একটি জগত আছে। তার নাম “আলমে আরওয়াহ”বা অদৃশ্য জগত। মানুষ যখন ঘুমায় তখন পার্থিব জগতের চিন্তা হতে মন অবসর গ্রহণ করে “আলমে আরওয়াহ”বা অদৃশ্য জগতে ভ্রমণ করে, সেখানে যা দেখে তাই স্বপ্ন। রাসুল (স:) বলেন, স্বপ্ন তিন প্রাকার হয়ে থাকে। এক শয়তানি স্বপ্ন। এতে শয়তানের পক্ষ থেকে কিছু বিষয় জাগ্রত হয়। শয়তান ভালো ও মন্দ উভয় প্রকার দৃশ্য ও ঘটনাবলী স্মৃতিতে জাগিয়ে দেয়। দ্বিতীয় প্রকার স্বপ্ন হল মানুষ জাগ্রত অবস্থায় যা কিছু দেখে, নিন্দ্রায় গিয়েও তাই দেখে। অর্থ্যাৎ কোন সময় মানুষ জাগ্রত অবস্থায় যে সব বিষয় ও ঘটনা প্রত্যক্ষ করে সে গুলোই স্বপ্নে নানা প্রকার আকৃতি নিয়ে দৃষ্টি গোচর হয়। এ ধরনের স্বপ্নে ভিক্তিহীন। তৃতীয় প্রকার স্বপ্ন সত্য ও বিশুদ্ধ। এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে এক প্রকার ইলহাম। যা বান্দাকে সুসংবাদ দানের উদ্দেশ্যে করা হয়। যেমন হজরত ইব্রাহিম (আ:) কে আল্লাহ স্বপ্নে দেখালেন “তুমি তোমার প্রিয় বস্তুকে আমার উদ্দেশ্যে কোরবানি কর”। (সূরা আস সফফাত) এই স্বপ্নাদেশ অনুসরণ করে তিনি তার পুত্রকে কোরবারি করেছিলেন। রাসুল (সা:) স্বপ্নকে গুরুত্ব দিতেন। হজরত আনাস (রা:) হতে বর্ণিত রাসুল (স:) বলেন, “যে আমাকে স্বপ্নে দেখবে সে সত্যিই আমাকে দেখবে কেননা আমার আকৃতি শয়তান ধারণ করতে পারে না”। কোন মুমনি ব্যক্তির স্বপ্ন মিথ্যা হতে পারে না। রাসুল (স:) বলেন, “মুমিন ব্যক্তির স্বপ্ন একটি সংযোগ বিশেষ। এর মাধ্যমে সে তার পালন কর্তার সাথে বাক্যালাপ করার গৌরব অর্জন করে”। (তবরানী) কিয়ামতের নিকটবর্তী হলেও মুমিনদের স্বপ্ন মিথ্যা হবে না। হজরত আবু হুরায়রা (রা:) বর্ণিত রাসুল (স:) বলেন, “নবী (স:) ইন্তেকালের পর পর সুসংবাদ প্রদানের মাধ্যম ছাড়া আর কিছুই থাকবে না। সাহাবীরা প্রশ্ন করলেন, সুসংবাদ প্রদানকারী মাধ্যম কি? তিনি বললেন, ভাল স্বপ্ন”। (বুখারী)
রাসুল (স:) ফজরের নামাজ পর সাহাবীদের দিকে মুখ করে বসতেন। এবং অধিকাংশ সময় সাহাবিরা স্বপ্ন দেখলে তার তাৎপর্য বলে দিতেন। তিনি নিজে স্বপ্ন দেখতেন এবং সাহাবীদের নিকট হুবহু বর্ণনা করতেন। স্বপ্ন ভাল মন্দ উভয়ই ধরনের হয়ে থাকে । রাসুল (স:) বলেন, “তোমাদের মধ্যে কেউ পছন্দনীয় বা ভাল স্বপ্ন দেখে তাহলে সে আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করবে। পক্ষান্তরে অপছন্দনীয় বা খারাপ স্বপ্ন দেখে আল্লাহর দরবারে আশ্রয় চাইবে এবং অযু করে পবিত্র কোরআন তেলয়াত করে ঘুমাবে।