‘কাইল সকালে হইবোরে তোর বিয়া’
আশিকুজ্জামান টুলু
কিছুদিন পর সেজো মামাত ভাইয়েরা ফিরে এলো লিড গিটারিস্ট নিয়ে। ছেলেটা গানও গায়। গাইতে ও বাজাতে বললাম। ও গাইল এবং বাজল। চমৎকার গায় এবং বাজায়। প্রশংসা করলাম ওদের গায়ক গিটারিস্ট কে এবং ওদের ডিসিশন কে। ওরা প্র্যাকটিস শুরু করে দিল। আরও একমাস পরের কথা। আসলে ঘটনাগুলো খুব তাড়াতাড়ি ঘটছিল ওদের তাড়াহুড়াতে। ওরা ছিল ভালো স্টুডেন্ট বিধায় সব কাজ ঝটপট করতে পারত এবং খুব সিরিয়াসলি নিত। ওরা এলো আমার বাসায়। সেজো মামাত ভাই: ভাই, আমরা একটা প্রোগ্রাম পেয়েছি রাজশাহী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে। আমি: ওইখানে না তুই পড়িস? সেজো মামাত ভাই: হ্যাঁ ভাই, আমি ওখানে পড়ি। ফাইনাল ইয়ারের বিদায় সংবর্ধনা। ৩ হাজার টাকা দিবে। আমি: এটা তো খুবই ভালো খবর। সেজো মামাত ভাই: আপনি আমাদের সঙ্গে বাজাবেন। আমি: কি কি! কে?
সেজো মামাত ভাই: আপনি আমাদের সঙ্গে বাজাবেন। আমি: তুই কি আউলাইয়া গেসোস? সেজো মামাত ভাই: কেন? আমি: আমি বাজামু কেন তোগো লগে? সেজো মামাত ভাই: আমাদের তো কিবোরডিস্ট নাই। আমি: কিবোরডিস্ট নাই তো আমি কি করুম? সেজো মামাত ভাই: আপনি আমাদের সঙ্গে বাজাবেন। আমি: আসলেই পাগল হইয়া গেসোস। সেজো মামাত ভাই: আপনাকে বাজাতেই হবে। আমি: তোদের কি আসলেই মাথা খারাপ? কিভাবে আমাকে বাজাতে বলিস যেখানে তোরা জানিস আমার নিজের একটা ব্যান্ড আছে? সেজো মামাত ভাই: আপনার ব্যান্ডের কাউকে বলা দরকার নাই, তাহলেই তো হয়। আমরা অলরেডি প্রোগ্রাম নিয়ে নিয়েছি। আর তাছাড়া আপনি তো জানেন আমরা এখনো ব্যান্ডে কোনো কিবোডিস্ট পাই নাই। আমি: রসঢ়ড়ংংরনষব, আমি বাজাব না, আসলে আমি বাজাতে পারব না, আমার ব্যান্ড আমাকে মেরে ফেলবে। আর আমি ওদের না জানিয়ে কোনো প্রোগ্রাম করার কথা চিন্তা করতেই পারি না। সেজো মামাত ভাই: ভাই আপনাকে ৫০০ দিব।
আমি: আরে! টাকার কথা কইতেসিশ কেন? সেজো মামাত ভাই: ঠিক আছে ১০০০। আমি: আরে! আশ্চর্য! তোরা দামাদামি করা শুরু করে দিলি কেন? এটা কি দোকান নাকি? আর আমি বললাম আমার অসুবিধা আছে যাইতে, তোরা তারপরও জোরাজুরি করতেছিস, আশ্চর্য! মেজো মামাত ভাই সেজো মামাত ভাই এর দিকে তাকিয়ে বলল: ঠিক আছে, আরও ২০০ বাড়ায় দাও। সেজো মামাত ভাই: ড়শ ভাই ১২০০। আমি: আসলে আমি ঠিক বুঝলাম না! বারবার টাকার কথা কেন বলছিস? টাকার অফার দিলে কি মনে হয় আমি রাজি হয়ে যাব? এত ছোটলোক আমি? সেজো মামাত ভাই: আমরা সেটা তো বলি নাই, যেহেতু আপনি প্রফেশনাল তাই ভাবলাম টাকা বাড়ালে রাজি হতে পারেন। আমি: প্লিজ তোরা যা তো। আমি যাইতে পারব না। (চলবে-০৩)
লেখক: কলামিস্ট ও সঙ্গীতশিল্পী
সম্পাদনা: আশিক রহমান