পুলিশকে পিটিয়ে আসামি ছিনতাই যুবলীগ নেতার
মাহমুদুল হাসান রতন, ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : ময়মনসিংহ শহরে এক চাঁদাবাজকে গ্রেফতারের ঘটনায় আসামি ছিনতাই, পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা চালিয়ে বাদীকে তুলে নেয়ার চেষ্টা ও পুলিশকে মারধরে ঘটনা ঘটেছে। মহানগর যুবলীগ নেতা মনিরুজ্জামান রনি ও তার অনুগতরা এ কা- ঘটনায়। বৃহস্পতিবার রাতে শহরের কলেজ রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রনির লোকজনদের সশস্ত্র হামলায় ফাঁড়ির ইনচার্জ ফারুক হোসেনসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে যুবলীগ কর্মী শান্ত, সাজ্জাদ ও তানভিরকে আটক করেছে পুলিশ।
এছাড়া যুবলীগ নেতা মনিরুজ্জামান রনি, আসাদুজ্জামান অপু, সোহাগ ও শান্তসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে ৮-১০ জনের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নুরে-ই আলম জানান, শহরের জবেদ আলী রোডের ব্যবসায়ী হযরত আলীর কাছে চাঁদা দাবি করে আসাদুজ্জামান অপু। ব্যবসায়ী চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাড়ি ফেরার পথে কলেজ রোডে গতিরোধ করে তার মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। আসাদুজ্জামান অপু ও মনিরুজ্জামান রনির নেতৃত্বে এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
তিনি বলেন, খবর পেয়ে ২নং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ফারুক হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে হযরত আলীকে উদ্ধার এবং অপুকে আটক করে।
এসময় হামলাকারীরা পুলিশের কাছ থেকে অপুকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে শুধু ব্যবসায়ী হযরত আলীকে নিয়ে ফাঁড়িতে ফিরে যায় পুলিশ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, রাত সাড়ে ১১টার দিকে যুবলীগ নেতা রনির নেতৃত্বে ৫/৭টি মোটরসাইকেলযোগে ১০/১৫ জন সশস্ত্র অবস্থায় হামলা চালায় ফাঁড়িতে। তারা ফাঁড়ির চেয়ার-টেবিলসহ বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর চালিয়ে হযরত আলীকে উঠিয়ে নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। এ হামলায় ফাঁড়ির এসআই ফারুক হোসেন, এ এস আই শিবলী, লুৎফর এবং কনস্টেবল রাজন ও আফসার আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
এদিকে হামলার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে যুবলীগ কর্মী শান্তকে আটক করে। পরে রাতভর অভিযান চালিয়ে সাজ্জাদ ও তানভিরকে আটক করে।
ফাঁড়িতে হামলার ঘটনায় শহরের কলেজ রোড়, গোলাপজান রোড, জবেদ আলী রোডসহ আশপাশের এলাকায় গ্রেফতার ও হামলা আতংকে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, বাদীকে মারধর ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনতাই, এরপর ফাঁড়িতে এসে পুলিশের ওপর সশস্ত্র হামলা ও ভাঙচুর এটা দুঃসাহসিক কাজ।
তিনি বলেন, এসব সন্ত্রাসীকে ছাড় দেয়া হবে না। যেকোনো মূল্যে গ্রেফতার করা হবে।
কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি কামরুল ইসলাম জানান, আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনায় ২নং ফাঁড়ির ইন্সপেক্টর মো: সজিব ফাঁড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় ফাঁড়ির এসআই ফারুক হোসেন বাদী হয়ে দ্রুত বিচার আইনে দুটি মামলা এবং মারধর ও মোটরসাইকেল ভাঙচুরের ঘটনায় হযরত আলী বাদী আরও মামলা দায়ের করেছেন। তিনি জানান, ছিনিয়ে নেয়া আসামি অপুর বিরুদ্ধে গোলাপজান রোডে বাড়িতে আগুন, কলেজ রোডে ওপেন নামে একজনকে কুপিয়ে আহত করা ও চাঁদাবাজিসহ ৫টি মামলা রয়েছে।