এই সংকটের ভর্তুকিটা দেবে কে?
যতীন সরকার
শিক্ষাব্যবস্থার সমস্যা নিয়ে আগেও অনেকবার কথা বলেছি। এ খাতে যেসব সমস্যা এখন আমরা দেখছি তা হচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অব্যবস্থাপনার ফল। শিক্ষামন্ত্রীর যতই সদিচ্ছা থাকুক শিক্ষামন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট যেসব কর্মকর্তা আছে, যে সমস্ত কার্যপ্রণালি হয় তা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে একেবারে ধ্বংস করে দিচ্ছে। সেই ধ্বংসেরই একটা নমুনা একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীর বই সংকট। এই যে এগারো লাখ শিক্ষার্থীর জন্য ছয় লাখ বই ছাপানো, অতিরিক্ত মূল নির্ধারণ এগুলোর পেছনে লুটপাটতন্ত্রের অর্থনীতির সংযোগ আছে বলেই মনে হয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে শিক্ষামন্ত্রীর সদিচ্ছার উপর বিশ্বাস রাখতে চাই। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের গাফিলতি, দুর্নীতির কারণে আজকে শিক্ষাব্যবস্থার এই পরিণতি। এখন এই যে অর্ধেক শিক্ষার্থীকে কপি করা বই বেশি দামে কিনতে হবে, এই ভর্তুকিটা কে দেবে? এর জন্য দায়ী কারা? এগুলো আসলে শুধু প্রশ্ন আকারেই থেকে যায়। অনেক প্রকাশনা আছে, যারা নি¤œমানের কাগজে নকল বই ছাপিয়ে অধিক মূল্যে শিক্ষার্থীদের কাছে বই বিক্রি করবে। এতে যেমন শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হচ্ছে, পাশাপাশি অভিভাবকদের উপরেও একধরনের চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। যারা দরিদ্র শিক্ষার্থী, তারা তো আর অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে বই কিনতে পারবে না। তাদের পুরনো বইয়ের উপর ভরসা রাখতে হবে। এছাড়া জাতীয় পাঠ্যপুস্তক বোর্ডও একটা রয়্যালিটি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যেটা অর্থনীতির উপর একটা প্রভাব ফেলবে। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে আরও সতর্ক হতে হবে। এর বিরুদ্ধে তাদের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা অতি জরুরি। এভাবে চলতে থাকলে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা একেবারে ধ্বংসের মুখে চলে যাবে।
পরিচিতি: শিক্ষাবিদ ও গবেষক
মতামত গ্রহণ: সাগর গনি
সম্পাদনা: আশিক রহমান