মেয়ে সন্তানের বাবা জান্নাতি
া জাকারিয়া হারুন
মেয়ে শিশু ফুলের মতো। মেয়েহীন পরিবার মরুভূমির মতো। আর একজন মেয়েই এক সময় মায়ের স্থানে আসেন। হয়ে যান মাথা গোঁজার স্বস্তির জায়গা। মায়ের আঁচল পৃথিবীর সবচেয়ে নিরাপদ স্থান। আর আমাদের সমাজে উল্টো চিত্র। যদি মেয়ে শিশু জন্মগ্রহণ করে তাহলে বাবার মুখ কালো হয়ে যায়। সে তার শক্তি খর্বের কারণ মনে করে। অথচ ইসলামে মেয়ে সন্তানের বাবার জন্য জান্নাতের ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
আম্মাজান হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, একবার আমার ঘরে একজন নারী এলেন। সঙ্গে দুই কন্যা। ওরা ক্ষুধার্ত। তারা আমার কাছে সাহায্য চাইল। আমার কাছে একটি মাত্র খেজুর। নারীর হাতে এগিয়ে দিলাম। সে দুই কন্যার হাতে ভাগ করে দিল। তার মুখে কিছুই দিল না। নারীটি বিদায় নিয়ে চলে গেল। এমন সময় আল্লাহর রাসুল (সা.) ঘরে আসলেন। আমি ঘটনাটি নবীজি সা.-এর কাছে বললাম। তিনি বললেন, যে মা-বাবা কন্যাদের ব্যাপারে সমস্যার সম্মুখীন হয় এবং তাদের সঙ্গে উত্তম আচরণ করে; বিচারের দিবসে এই কন্যাগণই তার জন্য জাহান্নামের আগুনের অন্তরায় হবে। (বুখারি শরিফ ও মুসলিম শরিফ মিশকাত হা : ৪৯৪৯)
মহানবী (সা.) আরও বলেছেন, যার কন্যা সন্তান আছে, সে কন্যাকে জীবিত কবর দেয়নি, কন্যাকে দীনহীন ও লাঞ্ছিত করেও রাখেনি, আল্লাহ তাকে জান্নাতে স্থান দেবেন। (সুনানে আবু দাউদ)। মহানবী (সা.) আরও বলেন, যে বাবার তিনটি কন্যা আছে, এ জন্য সে যদি ধৈর্য করে এবং নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী তাদের ভালো কাপড় পরায়, তাহলে তারা তার জন্য জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় হবে। (আদাবুল মুফরাদ ও সুনানে ইবনে মাজাহ)
রাসুলে কারিম (সা.) আরও বলেন, যে ব্যক্তি দুটি কন্যাকে বিয়ে-শাদী দেওয়া পর্যন্ত লালন-পালনের দায়িত্ব পালন করবে, আমি এবং সেই ব্যক্তি কেয়ামতের দিন এভাবে একত্রে থাকব। এই বলে নবীজি নিজ হাতের আঙুল মিলিয়ে ধরলেন। (মুসলিম শরিফ, মিশকাত হা : ৪৯৫৩)
হজরত আয়েশা (রা.) সূত্রে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সা.) বলেন, এমন স্ত্রী উত্তম ও বরকতময় যার মোহরের পরিমাণ কম। এমন স্ত্রী উত্তম ও বরকতময় যার প্রথম সন্তান মেয়ে। মহানবী (সা.) আরও বলেন, যার ঘরে কন্যা সন্তান জšে§ছে; সেই বাবা কষ্ট দেয়নি, তার উপর অসন্তুষ্টও হয়নি এবং পুত্র সন্তানকে প্রাধান্যও দেয়নি, এমন বাবাকে আল্লাহতায়ালা শুধু মেয়ের কারণে জান্নাত প্রদান করবেন। (মুসনাদে আহমদ : ১/২২৩)