চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনের সংগঠনগুলো একজোট হলো
আনোয়ারুল করিম : দেশীয় চলচ্চিত্রে বিদেশি শক্তির আগ্রাসন ঠেকানো এবং চলচ্চিত্রকে আপন গতিতে ফেরাতে অনিয়ম ঠেকানোর আন্দোলনে থাকা চলচ্চিত্র পরিবার তথা এফডিসিভিত্তিক চলচ্চিত্রের ১৮টি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হলেন ছোটপর্দার অভিনয় শিল্পী, কলাকুশলী ও পরিচালকদের সংগঠনগুলো। গতকাল বৃহস্পতিবার এফডিসিতে টেলিভিশন প্রোগ্রাম প্রডিউসার অ্যাসোসিয়েশন, অভিনয় শিল্পী সংঘ ও ডিরেক্টরস গিল্ডের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সভায় মিলিত হন চলচ্চিত্র পরিবারের নেতারা। বৃহস্পতিবার এফডিসিতে এক সভায় এমন সিদ্ধান্তে মিলিত হন সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ। সভায় পারস্পরিক স্বার্থ সুরক্ষায় একসঙ্গে পথ চলার প্রত্যয় নিয়ে শিগগিরই একটি ফেডারেশন করার প্রস্তাব উঠে আসে। টেলিভিশন-চলচ্চিত্র ঐক্যজোট নামকরণের প্রস্তাব করেন পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার। সভায় বক্তারা চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনের চলমান নানা সংকট নিয়ে বক্তব্য রাখেন। বড়পর্দায় যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র ও সাফটা চুক্তিকে আশ্রয় করে ভারতীয়দের বড়পর্দা দখলের অপ্রপয়াসের নিন্দা ও তা রুখে দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন নেতারা।
সভায় ভারতীয় আগ্রাসন ঠেকাতে গণমাধ্যমের আরও সচেতন ভূমিকা পালনের অনুরোধ জানান মামুনুর রশিদ। তিনি তার বক্তব্যে আরও বলেন, ‘আমরা যেন সেই ভীরু হাতিটার মতো হয়ে গেছি। যেন আমাদের মেরুদ- বেঁকে গেছে। সময় এসেছে আমাদের মেরুদ- সোজা করে দাঁড়াবার। আজ তার শুভ সূচনা হয়েছে। শিগগিরই একটা রুলস, একটা ফেডারেশন তৈরি করে একটা কাজের সূচনা করতে হবে।’
প্রযোজক ও অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজল বলেন, ‘ফেডারেশন করলে মনে হয় আমরা বাঁচতে পারবো। ফিল্মকে ধ্বংস করার অনেক চেষ্টা চলছে।’
চলচ্চিত্র ও নাটকের বিশিষ্টজন সৈয়দ হাসান ইমাম বলেন, ‘টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের লোকগুলো প্রায় একই। টেলিভিশন করতে করতে চলচ্চিত্রে আসেন, চলচ্চিত্র করতে করতে টেলিভিশনে যান। এটা আমাদেরই জায়গা। টেলিভিশনের যেসব নেতৃবৃন্দ আজ বক্তব্য রাখলেন তারা চলচ্চিত্রেরই লোক। শুধু সংগঠনগুলো স্বতন্ত্র। এ সংগঠনগুলোকে একটি কেন্দ্রীয় আওতার মধ্যে আনা যেতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার অবাক লাগছে, কি করে আইন অমান্য করে দুটি ছবি মুক্তি পেতে পারে? তাহলে আইনের দরকার কি? নীতিমালা সংশোধন করা তো পরের ব্যাপার। কিন্তু আইন অমান্য করে ছবি মুক্তি দেওয়া হলো এ নিয়ে সরকারের যেমন কোনো পদক্ষেপ নেই, আইনের যারা রক্ষক তাদেরও কোনো পদক্ষেপ নেই, এমনকি সেন্সরবোর্ডে যারা আছেন তারাও চোখ বন্ধ করে আছেন। আমরা ইরানের সংস্কৃতি দেখবো, ভারতের সংস্কৃতি দেখবো কিন্তু সেটা বিদেশি সংস্কৃতি হিসেবে, দেশের সংস্কৃতি হিসেবে নয়।’
সভায় সমাপনী বক্তব্য রাখেন চলচ্চিত্র পরিবারের আহ্বায়ক চিত্রনায়ক ফারুক। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন পরিচালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম খোকন। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ