জঙ্গিদমন, ঝুঁকি ও আশঙ্কা
মে. জে. (অব.) আব্দুর রশীদ
আমরা জানি হলি আর্টিজানের হামলার অস্ত্র সরবরাহকারী ছিল জঙ্গি সোহেল। নিরাপত্তা বাহিনীর তদন্ত থেকে আমরা আরও জানতে পারি, ৫ জন জঙ্গি এখন বাইরে আছে। এই ৫ জনকে ধরতে পারলে হলি আর্জিটান হামলার তদন্ত সমাপ্ত হবে। হলি আর্টিজানের তদন্ত সমাপ্তির ক্ষেত্রে সোহেল গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সেক্ষেত্রে সেটির দিকে সুবিধা হবে তদন্ত সম্পন্নের ক্ষেত্রে। দ্বিতীয় হচ্ছে তার কর্মকা- থেকে বোঝা যায় ভারতের জঙ্গিদের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক আছে। তাকে ধরার পর এই সম্পর্কের লাইনটাও ছিন্ন হলো। সে গ্রেফতার হওয়ায় হলি আর্টিজানের তদন্তের ক্ষেত্রে আরও নতুন তথ্য বের হয়ে আসবে। নতুন সূত্র পাওয়া যাবে। আরেকটা হচ্ছেÑ তাদের যে শীর্ষ নেতা নব্য জেএমবিতে যারা কাজ করত তাদের মধ্যে প্রায় সবাই নিহত হয়েছে। সে একটি গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষ নেতৃত্বের দায়িত্ব পালন করছিল। সেক্ষেত্রে তার অনুপস্থিতি সংগঠনের যতটুকু অস্তিত্ব আছে, শক্তি আছে, সেটি আরও খর্ব হবে।
বাংলাদেশে হলি আর্টিজানের আক্রমণের পরেই জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে যে অভিযান সেটি একটি সার্থকতা পেয়েছে। সারাবিশ্বে অনেক প্রশংসা পেয়েছে। বিশ্বে যতগুলো জঙ্গি আক্রান্ত দেশ আছে তার ভেতরে বাংলাদেশ দ্রুত ভিত্তিতে জঙ্গি শক্তিগুলোকে অবদমন করতে পেরেছে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা হচ্ছে বড় ধরনের জঙ্গি আক্রমণের যে ঝুঁকি সেটি কমেছে। যে জিনিসটা রয়ে গেছে, সেটা হচ্ছে জঙ্গি নির্মূল। জঙ্গি নির্মূল করতে গেলে যে জিনিসটা নির্মূল করতে হবে সেটি হলো মৌলবাদ।
জঙ্গিবাদ দমনে তৎপরতা হচ্ছে রাজনৈতিক ও সামাজিক তৎপরতা। এখানে পুলিশ পুলিশের দায়িত্ব খুব ভালোভাবে পালন করছে জঙ্গিদের নিধন করার জন্য। কিন্তু জঙ্গিবাদ নির্মূল করার জন্যে যে রাজনৈতিক এবং সামাজিক তৎপরতা আছে সেই তৎপরতাকে আরও তীব্র করতে হবে। যাতে সমাজের সব অংশে এই যে হিংসা মতাদর্শ সেটি বিলুপ্ত করার জন্য বা সেটি যেন প্রসার লাভ করতে না পারে সেদিকে আমাদের বিভিন্ন ধরনের কর্মকা- ও বহুমুখী কৌশল তৈরি করে বিভিন্ন ধরনের কর্মকা- পরিচালনা করলে আমরা আগামী দিনে জঙ্গিবাদের হুমকি থেকে অনেক দূরে থাকব। আরেকটি হচ্ছে জঙ্গিবাদের পেছনে যারা মদদ দিচ্ছেন সেই মদদদাতাদের জঙ্গিবাদ থেকে আলাদা করতে হবে। তাহলে এটি অবদমন করতে সহজ হবে।
পরিচিতি: নিরাপত্তা বিশ্লেষক
মতামত গ্রহণ: তানভীন ফাহাদ/সম্পাদনা: আশিক রহমান