লন্ডন গেলেন খালেদা জিয়া ফিরেই সহায়ক সরকারের রূপরেখা
শাহানুজ্জামান টিটু : চিকিৎসার জন্য লন্ডন গেলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এমিরেটস এয়ার লাইন্সের একটি ফ্লাইটে তিনি লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। তাকে বিদায় জানাতে হযরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকার রাস্তার দুই পাশে জড়ো হন বিএনপির বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী। তিনি লন্ডনে তার বড় ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বাসায় থাকবেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, চেয়ারপারসনের চিকিৎসার ওপর নির্ভর করছে তার দেশে ফেরার সময়। তবে লন্ডন বিএনপির সূত্র জানায় দু’মাসের মতো সময় লন্ডনে থাকার পরিকল্পনা আছে খালেদা জিয়ার। লন্ডনে তার ঈদ-উল আজহা উদযাপনেরও পরিকল্পনা রয়েছে। ছেলে তারেক রহমানের বাসায় পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঈদ উৎসব পালন করবেন। তবে সবকিছু নির্ভর করছে চিকিৎসকের পরার্মশের ওপর। দেশে ফিরেই তিনি সহায়ক সরকারের রূপরেখা দেবেন বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য। চিকিৎসার জন্য এই সফর বলা হলেও নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা ঘোষণা এবং আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়ার আগে খালেদার এই লন্ডন সফর নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আগ্রহ রয়েছে।
এদিকে খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী না হলেও ইতোমধ্যেই লন্ডনে গেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা, সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবীর। তারা ১৭ ও ১৮ জুলাই লন্ডনের হাউজ অব লর্ডসে একটি আন্তর্জাতিক সেমিনারে অংশ নেবেন।
রাজধানীর গুলশানের ৭৯ নম্বর রোডের ১ নম্বর বাসা ফিরোজা থেকে সন্ধ্যা ৬টায় বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে বের হন খালেদা জিয়া। তার সফর সঙ্গী হিসেবে একই বিমানে লন্ডনে গেছেন তার একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার ও গৃহপরিচারিকা ফাতেমা।
বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে বিদায় জানান স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, মীর মো. নাসির, আবদুল মান্নান, আমান উল্লাহ আমান। সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুগ্ম-মহাসচিব হাবিবুন নবী খান সোহেল, খায়রুল কবির খোকন, হারুণ অর রশিদ, আবদুস সালাম, আবুল বাশার, অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, সুলতানা আহমেদ, শাম্মী আকতার, হেলেন জেরিন খান, নিলুফার চৌধুরী মনি, শামসুদ্দিন দিদার, শায়রুল কবির প্রমুখ।
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় (২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলা) হুলিয়া নিয়ে গত নয় বছর ধরে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে লন্ডনে রয়েছেন। লন্ডনে যাওয়ার আগে বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করেন খালেদা জিয়া, যেখানে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা হয়।
সর্বশেষ ২০১৫ সালে ১৬ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়া লন্ডন গিয়েছিলেন। ওই সময়ে তারেকসহ পরিবারের সবার সঙ্গে ঈদ করে দেড় মাস পর দেশে ফিরেছিলেন তিনি। এবার কোরবানির ঈদ হবে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে। ঈদ করে এলে দেড় মাসের বেশি সময় দেশের বাইরে থাকবেন বিএনপির চেয়ারপারসন।
লন্ডন থেকে দেশে ফিরেই খালেদা জিয়া ঈদ-উল আযহার পর সহায়ক সরকারের রূপরেখা ঘোষণা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে দলের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের কয়েকজন নেতা মিলে সহায়ক সরকারের রূপরেখার একটি খসড়া চেয়ারপারসনের কাছে জমা দিয়েছেন। লন্ডনে ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা হবে। সম্পাদনা : হুমায়ুন কবির খোকন