দেড় বছরের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে চূড়ান্ত রোডম্যাপ প্রকাশিত হচ্ছে আজ
সাইদ রিপন : আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করার লক্ষ্যে দেড় বছরের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জানা গেছে, বর্তমান কমিশনের ৫ মাস পার হওয়ার পরে আজ চূড়ান্ত রোডম্যাপ প্রকাশ করা হবে। রোডম্যাপের মোড়ক উন্মোচন করবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদা। নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ জানান, আগামী সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে ইসি। সবকিছু যাচাই-বাছাই করে তা বই আকারে প্রকাশ হয়েছে। আনুষ্ঠানিক এ রোডম্যাপ ধরেই আগামী নির্বাচনের কাজ বাস্তবায়ন হবে। এ কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে সবার কাছে ইসির সব কাজ তুলে ধরা হবে। তাদের মতামত নিয়ে সবার অংশগ্রহণে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করা হবে। তবে শুরু থেকেই ইসির এই কর্মপরিকল্পনাকে ‘অর্থহীন’ বলেছেন বিএনপি। তারা নির্বাচনকালীন সরকারের উপরই গুরুত্ব দিচ্ছে। কিন্তু নির্বাচন আয়োজনকারী সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি বলছে সবার মতামতের ভিত্তিতে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্যই এ কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। এ নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে ৭টি বিষয়ে রাজনৈতিক দলসহ ৬ ধরনের অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। জানা গেছে, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতদের গেজেট প্রকাশের সময় নির্দিষ্ট করে দেওয়া, রাজধানীর মতো বড় শহরের আসন সীমিত করা, আরপিও-সীমানা নির্ধারণ অধ্যাদেশ বাংলায় রূপান্তরের প্রস্তাবও থাকছে কর্মপরিকল্পনায়।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, সংলাপে শেষ মুহূর্র্তে নারী সংগঠনের নেত্রীদের সঙ্গে বসার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ৩১ জুলাই থেকে অক্টোবর নাগাদ এ সংলাপে পর্যায়ক্রমে নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম, রাজনৈতিক দল, নির্বাচন পর্যবেক্ষক, নারী সংগঠনের নেত্রী ও নির্বাচন পরিচালনা বিশেষজ্ঞদের আমন্ত্রণ জানানো হবে।
কর্মপরিকল্পনায় বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত সময়ে সংসদ নির্বাচন করতে দৃঢ়তার সঙ্গে ও সুচিন্তিত পন্থায় এগিয়ে যাচ্ছে। দেশবাসী একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অপেক্ষায় রয়েছেন। সার্বিকভাবে দেশে জাতীয় নির্বাচনের একটি অনুকূল আবহ সৃষ্টি হয়েছে। ইসি কর্মপরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলো নিয়ে অংশীজন, গণমাধ্যম, দলসহ সংশ্লিষ্টদের সামনে উপস্থাপন করে সবার মতামত নেবে। সবার মতামতের আলোকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন আইনানুগ ও গ্রহণযোগ্য করে তোলা সম্ভব বলে ইসি বিশ্বাস করে। কর্মপরিকল্পনায় ৭টি করণীয়গুলো হচ্ছে- আইনি কাঠামোসমূহ পর্যালোচনা ও সংস্কার, নির্বাচন প্রক্রিয়া সহজ ও যুগোপযোগী করতে সংশ্লিষ্ট সবার পরামর্শ গ্রহণ, সংসদীয় এলাকার নির্বাচনী সীমানা পুনঃনির্ধারণ, নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও সরবরাহ, বিধি অনুসারে ভোটকেন্দ্র স্থাপন, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন এবং নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নিরীক্ষা, সুষ্ঠু নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট সবার সক্ষমতা বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ।
উল্লেখ্য, দশম সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয় ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি। সেক্ষেত্রে ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির আগের ৯০ দিনের মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচনের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এছাড়া ১৬ ফেব্রুয়ারি ইসি দায়িত্ব নেওয়ার পর ২৩ মে আগামী দেড় বছরের কাজের খসড়া সূচি ঘোষণা করেন সিইসি নূরুল হুদা।
সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ