বড় শহরের আসন কমানোর কথা ভাবছে ইসি
সাইদ রিপন : একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বড় বড় শহরের আসন সংখ্যা কমানোর চিন্তা করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এবার শুধু জনসংখ্যার উপর ভিত্তি করে নয় জনসংখ্যা, ভোটার সংখ্যা এবং সংসদীয় এলাকার পরিমাণ বিবেচনায় নিয়ে সীমানা পুনঃনির্ধারণের কথা ভাবা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এছাড়া বিলুপ্ত ছিটমহলগুলো যোগ করা হবে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকার সঙ্গে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইসির চূড়ান্ত করা রোডম্যাপে বলা হয়েছে, সময়ের পরিবর্তনে এবং জনগণের শহরমুখী প্রবণতার কারণে বড় বড় শহরগুলোতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। জনসংখ্যার আধিক্য অথবা ঘনত্ব বিবেচনা করা হলে শহর এলাকায় সংসদীয় আসন সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। অন্যদিকে পল্লী অঞ্চলে আসন সংখ্যা কমে যাবে। ফলে শহর এবং পল্লী অঞ্চলের সংসদীয় আসনের বৈষম্য সৃষ্টির সুযোগ হবে। সীমানা নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় শুধু জনসংখ্যার উপর ভিত্তি না করে জনসংখ্যা, ভোটার সংখ্যা এবং সংসদীয় এলাকার পরিমাণ বিবেচনায় নিয়ে সীমানা নির্ধারণ করার জন্য আইনি কাঠামোতে সংস্কার আনা প্রয়োজন। কেননা ভোটার তালিকা প্রতিবছর হালনাগাদ করা হয়। জনসংখ্যা, মোট আয়তন ও ভোটার সংখ্যা উভয়কে প্রাধান্য দিয়ে বড় বড় শহরের আসন সংখ্যা সীমিত করে দিয়ে আয়তন, ভৌগোলিক অখ-তা ও উপজেলা ঠিক রেখে সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ বিষয়টি কমিশনের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে।
রোডম্যাপে বলা হয়েছে, নতুন সৃষ্ট প্রশাসনিক এলাকা এবং বিলুপ্ত ছিটমহলগুলো মূল ভূখ-ের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় সংশ্লিষ্ট জাতীয় সংসদ নির্বাচনি এলাকার সীমানা পুনঃনির্ধারণের প্রয়োজন হবে। এতে আরও বলা হয়েছে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৫ অনুচ্ছেদে সমগ্র দেশে প্রত্যক্ষ নির্বাচনভিত্তিক ৩০০ সংসদীয় আসনের কথা উল্লেখ রয়েছে। উবষরসরঃধঃরড়হ ড়ভ ঈড়হংঃরঃঁবহপরবং ঙৎফরহধহপব, ১৯৭৬ (ঙৎফরহধহপব ঘড়. ঢঠ ড়ভ ১৯৭৬) অনুযায়ী প্রতিটি জাতীয় সংসদ সাধারণ নির্বাচনের পূর্বে সীমানা নির্ধারণের কাজ সম্পন্ন করা হয়ে থাকে। বর্তমানে প্রচলিত আইন অনুসারে বিগত আদমশুমারির জনসংখ্যার ঘনত্বের ভিত্তিতে এই সীমানা নির্ধারণের কাজটি করা হয়ে থাকে। এ বিষয়ে প্রশাসনিক অখ-তা বজায় এবং যাতায়াত সুবিধার বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকলেও ভোটার সংখ্যা ও আয়তনের বিষয়টি আইনে গুরুত্ব পায়নি।
ইসি সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৩ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত সীমানা নির্ধারণ মোটামুটি একই পদ্ধতিতে হয়। ২০০৮ সালে সীমানা নির্ধারণে জনসংখ্যার ঘনত্বকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল। সর্বশেষ কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন কমিশন দশম সংসদ নির্বাচনের আগে জনসংখ্যার বিভাজনকে তেমন প্রাধান্য না দিয়ে ছয় নীতি অনুসরণে সীমানা পুনঃনির্ধারণ করে। প্রতিটি জেলার ২০০৮ সালের মোট আসনসংখ্যা অপরিবর্তিত রাখা, আগের নির্ধারিত সীমনা যতদূর সম্ভব বহাল রাখা, সংসদীয় আসনের এলাকা অন্য জেলায় সম্প্রসারণ না করা, যতদূর সম্ভব উপজেলা অবিভাজিত রাখা, ইউনিয়ন/সিটি/পৌর ওয়ার্ড বিভাজন না করা এবং জনগণের যাতায়াতের সুবিধা অনুসরণ করা হয়। এবার আসন্ন সংলাপে রাজনৈতিক দলসহ অংশীজনের মতামতকে প্রাধান্য দিয়েই সীমানা পুনঃনির্ধারণের কাজ শেষ করার কথা রয়েছে। সম্পাদনা : মাকসুদা লিপি