অমরত্ব পেতে বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করছেন পৃথিবীর শীর্ষ ধনীরা
পরাগ মাঝি : পৃথিবীর শীর্ষ ৫ ধনী ব্যক্তির মধ্যে অন্যতম অ্যামাজন বস জেফ বিজোস। তার বর্তমান সম্পদের পরিমাণ ৮৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। যা প্রায় আমাদের দেশের মোট রিজার্ভের তিনগুণ। এই পরিমাণ অর্থ থাকলে একজন মানুষের আর কিসের অভাব থাকতে পারে? তবে একটি অভাব ভালোভাবেই অনুভব করেছেন জেফ বিজোস। আর তা হলোÑ যৌবন। এই পৃথিবীর সবাই চির যৌবন চায়। কিন্তু চির যৌবন লাভের উপায়টি প্রাণীকূলের এখনো অনাবিষ্কৃত। ৫৩ বছর বয়সের জেফ বিজোস এখনো শারীরিকভাবে যথেষ্ট সক্ষম। তার বেশিবহুল হাত এবং শারীরিক গঠন এখনো সুঠাম স্বাস্থ্যের প্রতিচ্ছবি। চিরদিন এটি ধরে রাখা সম্ভব না হলেও, দীর্ঘ বছর এটিকে ধরে রাখতে চান বিজোস। তাই, তার কোম্পানি এই খাতে অর্থ বিনিয়োগ করতে চায়।
ক্যান্সার সেল ধ্বংস করতে সক্ষম এবং প্রতিনিয়ত নতুন সেল তৈরির মাধ্যমে মানুষের যৌবনের সম্প্রসারণ ঘটানো সম্ভব। সম্প্রতি ইঁদুরের উপর এক গবেষণায় বিজ্ঞানীরা এমন ধারণা দিয়েছেন। এখন এই প্রকল্পে কয়েক মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছেন বিজোস।
দীর্ঘ কিংবা চির যৌবন প্রকল্পে কেবল বিজোসই বিনিয়োগ করতে চান না। এই প্রকল্পে বিনিয়োগে এগিয়ে এসেছে আরও কয়েকজন বিত্তশালীও। পে-পাল-এর প্রতিষ্ঠাতা ৪৯ বছর বয়সী পিটার থিয়েল এদের মধ্যে অন্যতম। তিনি সম্প্রতি বলেছিলেন, ‘বেশিরভাগ রোগই বার্ধক্যের সঙ্গে জড়িত।’ তিনি আরও বলেন, ‘আপনার বয়স যদি ৩০ বছর হয়, তবে প্রতি ১ হাজার জনের একজন হিসেবে আপনার ক্যান্সার হতে পারে। আর যদি আপনার বয়স ৮০ হয়, তবে প্রতি ১০ জনের একজন হিসেবে আপনার ক্যান্সার হতে পারে। তাই আমাদের অবশ্যই ক্যান্সারের নিরাময় প্রক্রিয়াকে খুঁজে বের করতে হবে। এক্ষেত্রে আমরা যদি বার্ধক্য ঠেকিয়ে রাখার উপায় খুঁজে পাই তবে এই উপায়ে ক্যান্সারের প্রতিষেধকও খুঁজে বের করা সম্ভব।’ গত আগস্টে থিয়েল ক্যালিফোর্নিয়ার এম্ব্রোসিয়া কোম্পানির একটি প্রজেক্টে বিনিয়োগের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এই কোম্পানিটি রক্ত পরিবর্তনের মাধ্যমে বার্ধক্য ঠেকিয়ে রাখা যায় কি-না তার গবেষণা করছে।
চিরদিন বেঁচে থাকার প্রাথমিক ধাপ যৌবন ধরে রাখা। মানবদেহের কার্যক্ষমতার স্বাভাবিক সময়সীমাকে কিভাবে বাড়ানো যায় তা নিয়ে গবেষণা করছেন বিজ্ঞানীরা। দেখা গেছে, কোনো মানবশরীর ১১৫ বছর বয়স হয়ে গেলে তা আর জীবন ধরে রাখার উপযোগী থাকে না। কিন্তু এই সীমাটাকেই অতিক্রম করতে চান সিলিকনের বিলিয়নাররা।
ওরাকল’র প্রতিষ্ঠাতা ৭২ বছর বয়সী ল্যারি এলিসন ইতোমধ্যেই প্রায় ৪৩০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছেন অমরত্ব পাওয়ার আশায়। ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মায়ের মৃত্যুকে স্মরণ করে ফোর্বসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এলিসন বলেছিলেন, ‘কিভাবে একজন মানুষ- যে এখন উপস্থিত, তারপর সে হাওয়ায় মিলিয়ে যায়।’ এলিসন একটি বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ ফাউন্ডেশন গড়ে তুলেছেন, যা অমরত্ব পাওয়ার উপায় নিয়ে কাজ করছে।
গুগলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ৪৩ বছর বয়সী স্যারগেই ব্রাইনও অমরত্ব প্রসঙ্গে দারুণ আগ্রহ দেখাচ্ছেন। গুগলের ক্যালিকো ১ বিলিয়ন ডলারের প্রকল্প বার্ধক্য প্রতিরোধ প্রক্রিয়া নিয়ে গবেষণা করছে। এ বিষয়ে আগ্রহ রয়েছে আরেক প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজ’রও।
স্যারগেই ব্রাইনের বান্ধবী সম্প্রতি এনবিসি টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ‘স্যারগেই আমাকে বলেছে যে, সে মৃত্যুর পরিকল্পনা করছে না।’ ডেইলি মেইল