অপচয়কারী শয়তানের ভাই
মাহফুজ আল মাদানী
অপচয়। আরবিতে বলে ইসরাফ। ‘বৈধ কাজে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ব্যয় করাকে অপচয় বলে’। এই দুনিয়াতে আল্লাহ তায়ালা যা কিছু হালাল করে দিয়েছেন তা প্রয়োজনের তাগিদে যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু ভক্ষণ করতে হবে, তার বেশি গ্রহণ করা সমীচীন নয়। যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু পানাহার করা আবশ্যক। সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যদি কেউ পানাহার বর্জন করে, ফলে মৃত্যুমুখের যাত্রী হলে বা দুর্বল হয়ে পড়লে, যাতে ফরজ কার্যাবলি সম্পাদন করতে অক্ষম হয় তাহলে সে পাপী হবে। আবার ক্ষুধা ও প্রয়োজনের চাহিদার বেশি পানাহার ইসরাফের মধ্যে গণ্য।
অপচয় করা ইসলাম কখনো সমর্থন করে না। বরং আল্লাহ তায়ালা অপচয় করতে নিষেধ করেছেন। অপচয় ছাড়া পানাহার বা স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করতে কোনো অপরাধ নেই। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা খাও ও পান কর, কিন্তু অপচয় করো না। নিশ্চয়ই তিনি অপচয়কারীদের ভালবাসেন না’ -(সুরা আল আ’রাফ : ৩১)। অপচয় ছাড়া সকল কাজে মধ্যমপন্থা অবলম্বনের ব্যপারে ইসলাম নির্দেশ প্রদান করেছে। অপচয় দারিদ্র্য আনে, আর দারিদ্র্য মানুষকে কুফুরির দিকে ধাবিত করে। তাই অপচয় নয়, নয় কৃপণতা। যারা অপচয় এবং কৃপণতা করে না তাদেরকে আল্লাহ তায়ালা রহমানের বান্দা হিসেবে আখ্যায়িত করে তাদের গুণাবলি বর্ণনা করেছেন। এদের গুণাবলির একটি হলো, আল্লাহ পাকের বাণী, ‘এবং তারা যখন ব্যয় করে, তখন অযথা ব্যয় করে না। আর কৃপণতাও করে না এবং তাদের পন্থা এতদুভয়ের মধ্যবর্তী’ -(সুরা আল ফুরকান : ৬৭)। আমাদেরকে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করে চলতে হবে। সর্বদা অপচয়কে বর্জন করতে হবে। আর অপচয় বর্জন করা হবে ইমানদার আর প্রকৃত মুসলমানের কাজ। অপচয় করা মুসলমানের কাম্য নয়। তাই সর্বক্ষেত্রে অপচয়কে বিসর্জন দিতে হবে। অপচয়কে রোধ করে সমাজ জাতির কল্যাণে এগিয়ে আসলে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন সহজতর হবে।
অপচয় করা জায়েজ নেই। অপচয়কারী শয়তানের ভাই। মহান রাব্বুল আলামিন অপচয়কারীকে শয়তানের ভাই উল্লেখ করে অপচয় না করার জন্য নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘কিছুতেই অপব্যয় করো না। নিশ্চয় অপচয়কারী শয়তানের ভাই। (চলবে-১)
লেখক: এম. ফিল গবেষক, প্রাবন্ধিক, কলামিস্ট
সম্পাদনা: আশিক রহমান