হিজবুল জঙ্গিদের পাকিস্তানে যেতে সাহায্য, কাঠগড়ায় হুরিয়ত
অরিজিৎ দাস চৌধুরি, কলকাতা থেকে : পাকিস্তানের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদে উসকানি দিচ্ছে হুরিয়ত কনফারেন্স। মদত দেওয়া হচ্ছে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপেও। এই অভিযোগ নতুন নয়। বস্তুত, এই অভিযোগের ভিত্তিতে হুরিয়ত কনফারেন্সের বিরুদ্ধে তদন্তও শুরু করেছে এনআইএ। আর এবার ভারতের কাশ্মীরের এক হিজবুল জঙ্গিকে পাকিস্তানে যাওয়ার ভিসা পাইয়ে দেওয়ার ঘটনায় নাম জড়াল উপত্যকার এক বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের।
সম্প্রতি দেশটির কাশ্মীরের বারামুল্লা জেলায় জঙ্গি গোষ্ঠী হিজবুল মুজাহিদিনের জঙ্গি নিয়োগ করার এক চক্রের সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। ঘটনায় আনসারুল্লা তান্তারায়, আবদুল রশিদ ভাট ও মেহেরাজুদ্দিন কাক নামে তিন জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্তে জানা গিয়েছে, গত মে মাসে পাকিস্তানে গিয়েছিল আবদুল রশিদ ভাট। পাক অধিকৃত কাশ্মীরে হিজবুলের শিবিরে প্রশিক্ষণ ন্য়ে সে। তবে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে নয়, দিল্লির পাক হাই কমিশন থেকে ভিসা নিয়েই পাকিস্তানে যায় আবদুল। হুরিয়ত কনফারেন্সের গিলানি গোষ্ঠীর সুপারিশে ওই হিজবুল জঙ্গিকে ভিসা দিয়েছিল পাক হাই কমিশন।
কাশ্মীর পুলিশের আইজি মুনীর খান জানিয়েছে, এই নিয়ে গত দেড় বৎসরে পাঁচবার এমন ঘটনা ঘটল, যেখানে জঙ্গিদের ভিসা নিয়ে পাকিস্তানে যাওয়ার বিষয়টি সামনে এল। গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে এক রিপোর্ট পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ।
জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, হিজবুল জঙ্গিকে ভিসা দেওয়ার বিষয়টি পাক হাই কমিশনের নজরে আনা হবে কিনা, সে বিষয়ে কেন্দ্রই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। তবে কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের যে পাক হাই কমিশন মদত দিচ্ছে, তা এই ঘটনা থেকেই স্পষ্ট।
বস্তুত, দীর্ঘদিন ধরেই পাকিস্তানে রীতিমতো শিবির করে জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে হিজবুল মুজাহিদিন, লস্কর-ই-তৈবার মতো বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠী। এতদিন সেইসব জঙ্গি শিবিরে প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে যেত উপত্যকায় জঙ্গিরা।
কিন্তু, এখন পাকিস্তানে যাওয়ার জন্য ভিসা, পাসপোর্টের মতো সরকারি নথি ব্যবহার করছে তারা। গত ফ্রেরুয়ারিতে কাশ্মীরের দু’জন জঙ্গিকে নিকেশ করে নিরাপত্তাবাহিনী। তদন্তে জানা যায়, আইনি পদ্ধতিতে মেনে ওয়াঘা সীমান্তে পেরিয়ে পাকিস্তানে গিয়ে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিয়েছিল তারা।