সচিবদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও ক্ষোভ মন্ত্রণালয় পৃথকীকরণ নিয়ে বিপাকে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা
হুমায়ুন কবির খোকন : কয়েকটি মন্ত্রণালয়কে ভাগ করে আলাদা মন্ত্রণালয় ও বিভাগ করা হলেও মন্ত্রণালয়গুলোর কাজের গতি বৃদ্ধি পাচ্ছে না। প্রশাসন সংশ্লিষ্ট অনেকেই মনে করছেন, মন্ত্রণালয়গুলোর কর্মকর্তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও কাজের অর্গানোগ্রাম না হওয়ায় এই সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে সংকটে পড়েছেন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরাও। উল্লেখ্য, বিভিন্ন সময়ে অর্থ, স্বাস্থ্য, স্বরাষ্ট্র, শিক্ষা ও মন্ত্রণালয়কে দুটি করে ভাগ করে তিন মন্ত্রণালয়ে দুজন করে সচিবের পদ সৃষ্টি করা হলেও এর সুফল মিলছে না। মন্ত্রণালয়গুলোর দাফতরিক কাজ উল্টো বাধাগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি কর্মকর্তাদের মধ্যে দলাদলির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সুনির্দিষ্ট অর্গানোগ্রাম না থাকায় এ সমস্যা হচ্ছে বেশি। বিভাগ ও মন্ত্রণালয় ভাগ করা হলেও কর্মকর্তাদের বসারও নির্দিষ্ট স্থান সংকুলান হচ্ছে না।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সম্প্রতি এক নোটে বলেছেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয় দুটি বিভাগে ভাগ করার সময় থেকে কাজের গতি শ্লথ হয়ে গেছে। সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর রুম বা জায়গা নেই। কারও কারও মনে ক্ষোভ-হতাশাও রয়েছে। কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের স্থানের অভাব বড় সংকট। অনেক চেষ্টা করেও কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না। অবিলম্বে এর সমাধান করতে হবে।
কাজের সুবিধার নামে গত ৩০ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে দুই ভাগে বিভক্ত (মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগ) করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এর ফলে দুই বিভাগে দুজন সচিব নিয়োগের পাশাপাশি কর্মকর্তার পদায়নও বেড়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর ।
একই অবস্থা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ক্ষেত্রেও। এ মন্ত্রণালয়কে দুই ভাগ করা হয়। স্বাস্থ্যবিভাগ এবং স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগ। দুই সচিবের দাফতরিক কাজের সমস্যা নিয়ে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. সিরাজুল হক খান আর স্বাস্থ্যশিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম। সচিবদের মধ্যে কাজের পরিধি নিয়ে সমস্যা বিরাজ করছে, প্রায়ই মন্ত্রীর কাছে সচিবরা গিয়ে অভিযোগ করেন, তাদের কাজের পরিধি কম হওয়া কাজ করতে পারছে না। পৃথক দফতরও না হওয়ায় কাজও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দুই ভাগে ভাগ করে, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব করা হয় ড. কামালউদ্দিন আহমেদকে এবং সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব করা হয় ফরিদউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরীকে। সেখানে কর্মকর্তাদের বসার সংকুলান নিয়ে সমস্যা চলছে।
দুই ভাগে বিভক্ত মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সমস্যার বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ওইসব মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতেই ভাগ করা হয়েছে। তবে আমরা আশা করছি, মন্ত্রণালয়গুলোতে যেসব সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে সেগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে। সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. সা’দত হোসাইন বলেন, বিষয়গুলো নতুনভাবে করা হয়েছে। এর সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধানে কাজ করতে হবে। ধীরে ধীরে এর সমাধান হয়ে যাবে। সম্পাদনা : বিশ্বজিৎ দত্ত