রূপালী ব্যাংকের জিএম লাঞ্ছনার ঘটনায় ৩ সিবিএ নেতা চাকরিচ্যুত
মাসুদ মিয়া : কর্মকর্তাদের সঙ্গে অসদাচরণের দায়ে রূপালী ব্যাংকের ৩ সিবিএ নেতাকে চাকরিচ্যুতসহ ৮ জনকে চূড়ান্ত শাস্তি দিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। গত বুধবার রূপালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। সিবিএ নেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার ঘটনায় রূপালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ও অর্থনীতিবিদ ড. খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ।
তিনি বলেন, উচ্ছৃঙ্খল সিবিএ নেতাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা পুরো আর্থিক খাতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। যারা ট্রেড ইউনিয়ন করার নামে আর্থিক খাত-বিরোধী কর্মকা-ে জড়িত তারা একটা কঠোর বার্তা পাবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। আর্থিক খাতের জন্য এটা উদাহরণ হয়ে থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই সাহসী পদক্ষেপের জন্য আমি ব্যাংকের বোর্ড ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ জানাই। বিশেষ করে ব্যাংকটির শীর্ষ নির্বাহী আতাউর রহমান প্রধান যেভাবে সাহসিকতার সঙ্গে বিষয়টা সমাধান করেছেন, এটা প্রশংসনীয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সাবেক একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, এ ঘটনা সরকারি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতেও সহায়তা করবে। এর ফলে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো লাভবান হবে।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, তৎকালিন নির্বাচিত সিবিএ নেতা মহিউদ্দিনকে মোস্তাক-কাবিল গ্রুপ তৎকালিন ম্যানেজমেন্টকে চাপ দিয়ে বদলি করান। তখন মহিউদ্দিন যোগদান না করে এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন। হাইকোর্ট তখন বদলি স্থগিত করে এবং আদালত আবমাননার রুল জারি করে। তখন আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী লোকাল অফিস ৪ ডিসেম্বর ২০১৬ সালে মহিউদ্দিনকে যোগদান করার জন্য চিঠি দেয়।
এ বিষয়ে মহিউদ্দিন এ প্রতিবেদককে বলেন, ৫ ডিসেম্বরে যোগ দিতে গেলে মোস্তাক-কাবিল গ্রুপ আমাকে বাধা দেয় এবং লোকাল অফিসে বিশৃঙ্খলা শুরু করে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতবছরের ৫ ডিসেম্বর স্থানীয় কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক নুরুজ্জামানসহ (বর্তমানে কৃষি ব্যাংকের ডিএমডি) কয়েকজন কর্মকর্তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে লাঞ্ছিত করে মোস্তাক ও কাবিল গ্রুপের নেতৃত্বাধীন সিবিএ নেতাকর্মীরা। এরই প্রেক্ষিতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ দায়িদের সাময়িক বরখাস্ত করে এবং তদন্ত কমিটি গঠন করে। তারই ধারাবাহিকতায় এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে চূড়ান্তভাবে প্রশাসনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে ব্যাংকটি। যাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তারা হলেন- রূপালী ব্যাংকের সিবিএ সভাপতি খন্দকার মোস্তাক আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মো. কাবিল হোসেন কাজী ও কেয়ারটেকার মো. আরমান মোল্লা। এই ৩ জনকে স্থায়ীভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে ড্রাইভার মো. আবুল কালাম আজাদকে। আর ঢাকার বাইরে বদলি করা হয়েছে কেয়ারটেকার মো. আনোয়ার হোসেন, ছাব্বির আহমেদ ভূঁইয়া ও মনিরুল ইসলামসহ এ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার (গ্রেড-১) মো. আহসান হাবিবকে। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ