এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ গড় পাস ৬৮.৯১ শতাংশ, ফেল ৩১.০৯
শীর্ষে সিলেট বিপর্যয়ে কুমিল্লা
তরিকুল ইসলাম সুমন : ২০১৭ সালের উচ্চমাধ্যমিক বা এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় দশ বোর্ডে এবার পাস করেছে ৮ লাখ ১ হাজার ৭১১ জন যা মোট পরীক্ষার্থীর ৬৮ দশমিক ৯১ শতাংশ। গত বছর এ হার ছিল ৭৪ দশমিক ৭০ শতাংশ। ফেল করেছে ৩ লাখ ৬১ হাজার ৬৫৯জন। যা ৩১ দশমিক ০৯শতাংশ। গতবছরের তুলনায় এবার পাসের হার ৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ কমেছে। পাসের হারে এবার সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে সিলেট শিক্ষাবোর্ডে। এ বোর্ডে ৭২ শতাংশ পাস করেছে। তবে গতবারের মতো এবারও ফল বিপর্যয় হয়েছে কুমিল্লা শিক্ষাবোর্ডে। এখানে পাস করেছে মাত্র ৪৯ দশমিক ৫২ শতাংশ।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ গতকাল দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেন। এর আগে সকাল ১০টার দিকে শিক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফলাফলের কপি তুলে দেন।
অপরদিকে দেশের আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের আলিম ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসিতে (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৭ হাজার ৯৬৯ জন। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ৫৮ হাজার ২৭৬ জন। গত বছরের চেয়ে এবার জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থী কমেছে ২০ হাজার ৩০৭ জন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নের পদ্ধতি পরিবর্তনের কারণে এসএসসির মতো এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হার ও জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের সংখ্যা কমেছে।
এবার এইচএসসিতে আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডে গড় অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থী ৯ লাখ ৬৪ হাজার ৯৩৮ জন, যা গত বছর ছিল ১০ লাখ ৭ হাজার ৫৩ জন, কমেছে ৪২ হাজার ১১৫ জন। পাস করেছে ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৯৪২ জন, গত বছর পাস করেছিল ৭ লাখ ২৯ হাজার ৮০৩ জন, কমেছে ৮৪হাজার ৮৬১ জন। পাসের ৬৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ। গত বছর এ হার ছিলো ৭২ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
আট বোর্ডের অধীনে এইচএসসিতে ৯ লাখ ৬৪ হাজার ৯৩৮ পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে পাস করেছে ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৯৪২ জন। মাদ্রাসা বোর্ডে ৯৬ হাজার ৮০২ জনের মধ্যে পাস করেছে ৭৪ হাজার ৫৬১ জন। কারিগরি বোর্ডে ৯৭ হাজার ১৪ জন পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে ৭৮ হাজার ৯০৪ জন।
ঢাকা বোর্ডে ৩ লাখ ৩৩ হাজার৭৩৮ জনের মধ্যে পাস করেছে ২ লাখ ৩২ হাজার ৭৪১ জন, যা মোট পরীক্ষার্থীর ৬৯.৭৪ শতাংশ। জিপিএ- ৫ পেয়েছে ১৮ হাজার ৯৩০ জন এর মধ্যে ছাত্র-১০ হাজার ১০৫ ছাত্রী ৮৮২৫ জন।
রাজশাহী বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ২১ হাজার ৮৩৬ জন। এর মধ্যে পাস করেছে ৮৬ হাজার ৮৭২ জন। গড় পাসের হার ৭১.৩০ শতাংশ। জিপিএ- ৫ পেয়েছে ৫ হাজার ২৯৪ জন এর মধ্যে ছাত্র ২ হাজার ৯৩৯ ছাত্রী ২৩৫৫ জন।
কুমিল্লা বোর্ডের মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৩৭২ জনের মধ্যে পাস করেছে ৪৯ হাজার ৭০৪ জন। গড় পাসের হার ৪৯.৫২ শতাংশ। জিপিএ- ৫ পেয়েছে ৬৭৮ জন এর মধ্যে ছাত্র-৩২৫ ছাত্রী ৩৫৩ জন।
যশোর বোর্ডে মোট পরক্ষার্থী ৯৫ হাজার৬৯২ জনের মধ্যে পাস করেছে ৬৭ হাজার ২ জন। মোট পাসের হার ৭০ .০২ শতাংশ। জিপিএ- ৫ পেয়েছে ২ হাজার ৪৪৭ জন এর মধ্যে ছাত্র ১৩৫০ ছাত্রী ১১৪২ জন।
চট্টগ্রাম বোর্ডের মোট পরীক্ষার্থীর ৮২ হাজার ৪১৪ জনের মধ্যে পাসকরেছে ৫০ হাজার ৩৪৭ জন। মোট পাসের হার ৬১.০৯ শতাংশ। জিপিএ- ৫ পেয়েছে ১ হাজার ৩৯১ জন এর মধ্যে ছাত্র ৭৬৭ ছাত্রী ৬২৪জন।
বরিশাল বোর্ডের মোট পরীক্ষার্থী ৬০ হাজার ৪৮৬ জরেন মধ্যে পাস করেছে ৪২ হাজার ৫০৭ জন। মোট গড় পাসের ৭০.২৮ শতাংশ। জিপিএ- ৫ পেয়েছে ৮১৫ জন এর মধ্যে ছাত্র ৩৯৭ ছাত্রী ৪১৮ জন।
সিলেট বোর্ডের ৬৫ হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৪৬ হাজার ৭৯৭ জন। মোট গড় পাস ৭২ শতাংশ। জিপিএ- ৫ পেয়েছে ৭০০ জন এর মধ্যে ছাত্র ৪৫৫ ছাত্রী ২৪৫জন।
দিনাজপুরের মোট পরীক্ষার্থী ১ লাখ ৫ হাজার ৪০০ জনের মধ্যে পাস করেছে ৬৯ হাজার ৯৭২ জন। জিপিএ- ৫ পেয়েছে ২ হাজার ৯৮৭ জন এর মধ্যে ছাত্র ১ হাজার ৭৯১ ছাত্রী ১১৯৬ জন।
মাদ্রাসা বোর্ডের অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থী ৯৬,৮০২ জন, যা গত বছর ছিল ৮৯,৬০৩ জন, বেড়েছে ৭,১৯৯ জন। পাস করেছে ৭৪,৫৬১ জন, গত বছর ছিল ৭৯,০২০ জন, কমেছে ৪,৪৫৯ জন। পাসের হার ৭৭.০২ শতাংশ, গত বছরের তুলনায় কমেছে ১১.১৭ শতাংশ। জিপিএ- ৫ পেয়েছে মোট ১,৮১৫ জন, ছাত্র ১ হাজার ৩১৬ ছাত্রী ৪৯৯ জন। গত বছর ছিল ২,৪১৪ জন, কমেছে ৫৯৯ জন।
কারিগরি বোর্ডে অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থী ৯৭,০১৪ জন, যা গত বছর ছিল ১,০২,২৪৮ জন, কমেছে ৫,২৩৪ জন। পাস করেছে ৭৮,৯০৪ জন, গত বছর ছিল ৮৬,৪৬৯ জন, কমেছে ৭,৫৬৫ জন। পাসের হার ৮১.৩৩ শতাংশ, যা গত বছরের তুলনায় কমেছে ৩.২৪ শতাংশ।
জিপিএ- ৫ পেয়েছে ২,৬৬৯ জন, এর মধ্যে ছাত্র ১ হাজার ৩ জন, ছাত্রী ১৬৬৬ জন। গত বছর ছিল ৬,৫৮৭ জন, কমেছে ৩,৯১৮ জন।
ডিআইবিএস (ঢাকা) পরীক্ষার্থী ছিল ৪৬১৬ জন, পাস করেছে ৩ হাজার ৩০৪ জন, পাসের হার ৭১.৫৮ শতাংশ। জিপিএ- ৫ পেয়েছে ২৪৩ জন এর মধ্যে ছাত্র ১৩২ জন ছাত্রী ১১১ জন।
এ বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয় গত ২ এপ্রিল। তত্ত্বীয় (লিখিত) পরীক্ষা শেষ হয় ১৫ মে। ব্যবহারিক পরীক্ষা ১৬ মে শুরু হয়ে শেষ হয় ২৫ মে।
সংবাদ সম্মেলন শেষ হওয়ার পর থেকেই পরীক্ষার অনলাইন ও মোবাইলের মাধ্যমে ফল সংগ্রহ করা যাবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
সম্পাদনা:হুমায়ুন কবির খোকন