রাজনৈতিক দলের কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অফিসের ঠিকানাসহ নিবন্ধনের শর্ত খতিয়ে দেখছে ইসি
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী : নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৪১টি রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের শর্ত পালন করছে কিনা তা খতিয়ে দেখবে নির্বাচন কমিশন। যেসব দল নিবন্ধন পাওয়ার পর ও নির্বাচনে অংশগ্রহণের সময়ে তাদের দলের কেন্দ্রীয়, জেলা, উপজেলা পর্যায়ে অফিস দেখিয়েছিল ও অন্যান্য শর্ত পালন করেছিল। নিবন্ধন নেওয়ার পর তা এখনো আছে কিনা এবং শর্ত পালন করছে কিনা তা খতিয়ে দেখে প্রতিবেদন জমা দিবে কমিশনের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। ৪২টি দলের মধ্যে একটির নিবন্ধন আদালত বাতিল করেছে। বাকিগুলোর নিবন্ধন রয়েছে। নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, এমন অনেক রাজনৈতিক দলের অফিসের নাম তারা পেয়েছেন যাদের অফিসগুলো তেমনভাবে নেই। অনেক দলই তাদের চেয়ারম্যানের বাসার ঠিকানা অফিসের ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করছে। এই কারণে চিঠি দিলে সব সময় সাড়া মিলছে না। এতে করে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। আর এসব কারণেই প্রত্যেক দলের ফোকাল পয়েন্টও সংগ্রহ করা হয়েছে। এখন থেকে তাদের সঙ্গে কমিশন যোগাযোগ রক্ষা করবে। কিন্তু যথাযথ নিয়মে নিবন্ধনের শর্ত পালনের বিষয়গুলো দেখা হবে।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, একটি দল নিবন্ধন পাওয়ার জন্য আবেদনপত্রের সঙ্গে টাকার রশিদ ছাড়াও ১২টি নথি দিতে হয়। কমিশনের নিবন্ধন পাওয়ার অন্যতম শর্তের একটি হলো, দলীয় কেন্দ্রীয় কমিটিসহ, উহা যে নামেই অভিহিত হোক না কেন, একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় দফতর, অন্যূন এক তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর জেলা দফতর এবং অন্যূন একশতটি উপজেলা বা ক্ষেত্রমত, মেট্রোপলিটন থানায় কার্যকর দফতর এবং উক্তরূপ প্রতি উপজেলায় বা ক্ষেত্রমত, থানায় অন্যূন দুইশত ভোটার সদস্য হিসাবে দলের তালিকাভুক্ত থাকিবার সমর্থনে প্রাশাসনিক দলিল। এই শর্ত মানতে হবে। কমিশন মনে করছে বেশকিছু দল নিবন্ধন পাওয়ার পর অফিস রাখার ক্ষেত্রে নিয়ম মানছে না বলেই তাদের চিঠি দিলেও তারা তা পাচ্ছে না। এছাড়াও কিছু কিছু দলসব শর্ত পালন করছে না বলে জানা গেছে। এই কারণে খতিয়ে দেখার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
সূত্র জানায়, দলের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য কমিশনের পক্ষ থেকে ফোকাল পয়েন্ট চাওয়া হয়েছিল। সেটা দেওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলোকে মনে করা ঠিক হবে না তাদের নিবন্ধনের শর্তগুলো পালন করা বা না করার বিষয়টি দেখা হবে না।
সূত্র জানায়, প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলকে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণের আগেই দেখাতে হবে তাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের যোগ্যতা রয়েছে। এবং কমিশন থেকে নিবন্ধন বহাল রাখার জন্য যেসব শর্ত দেওয়া হয়েছিল সেসব শর্ত তারা মেনে চলছে।
নির্বাচন কমিশনের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেন, যেসব দল নিবন্ধন পাওয়ার সময় যেসব শর্ত মেনে নেওয়ার অঙ্গিকার করে নিবন্ধন নিয়েছে তারা যদি নিবন্ধন যথাযথভাবে পালন না করে তাহলে তাদের নিবন্ধন বাতিল করার ক্ষমতা কমিশনের রয়েছে।
সূত্র জানায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য যে রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে সেখানে বলা হয়েছে, পুরনো দলগুলো নিবন্ধনের শর্ত মানার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে এবং যেসব দল শর্ত পূরণ করছে সেসব নিবন্ধন বহাল থাকবে। আর যারা শর্ত মানছেন না তাদেরকে ছোটখাটো সমস্যা থাকলে সেগুলো পূরণের সুযোগ দেওয়া হতে পারে। কিন্তু যারা বেশিরভাগ শর্ত মানছেন না সেসব দলের নিবন্ধন বাতিলের জন্য কমিশন সিদ্ধান্ত নিবে এবং নোটিস দিবে।