শ্রীমদ্ভাগবত পাঠের গুরুত্ব
া মিত্র গোপা কৃষ্ণ দাস
শ্রীমদ্ভাগবত যে অভাবটি পূর্ণ করবে: আধুনিক যুগের প্রবণতা হচ্ছে যেন সমস্ত পৃথিবী জুড়ে একটি রাষ্ট্রে অথবা একটি মানব সমাজ গড়ে উঠবে। শ্রীমদ্ভাগবতের নির্দেশ অনুসারে আধ্যাত্মিক সাম্যবাদের আদর্শ হচ্ছে সমগ্র মানব সমাজের ঐক্য সাধন করা। না, কেবলমাত্র মানব সমাজেরই ঐক্য সাধন নয়, সমগ্র জীব সমাজের ঐক্য সাধন করা। এই আদর্শকে ফলপ্রসূ করার প্রয়োজনীয়তা মহান চিন্তাশীল মানুষেরা অনুভব করেছেন। . এত শিক্ষা সংস্কৃতির প্রসারের পরেও সমাজ ব্যবস্থায় কোথায় যেন একটি গলদ রয়ে গেছে এবং তাই অত্যন্ত নগন্য বিষয় নিয়েও ব্যাপকভাবে কলহ-বিবাদ হচ্ছে। শ্রীমদ্ভাগবতই ভগবৎচেতনার পুনর্বিকাশের মাধ্যমে সকলকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারে।
. স্কুল ও কলেজগুলোতে শ্রীমদ্ভাগবত সম্বন্ধে শিক্ষাদানের প্রচলন করা উচিত। সমাজের আসুরিক ভাব ধারার পরিবর্তনের জন্য প্রহ্লাদ মহারাজ এ কথা বলেছেন,
কৌমার আচরেৎ প্রাজ্ঞো ধর্মান্ ভাগবতানিহ।
দুর্লভং মানুষং জন্ম তদপ্যধ্রুবমর্থদম্।(ভাঃ ৭/৬/১)
অনুবাদ: প্রাজ্ঞ ব্যক্তি মনুষ্য জন্ম লাভ করে জীবনের শরু থেকেই, অর্থাৎ বাল্যকাল থেকেই, অন্য সমস্ত প্রয়াস ত্যাগ করে ভাগবত-ধর্ম অনুষ্ঠান করবেন। মনুষ্যজন্ম অত্যন্ত দুর্লভ, এবং অন্যান্য শরীরের মতো অনিত্য হলেও তা অত্যন্ত অর্থপূর্ণ কারণ মনুষ্য-জীবনে ভগবানের সেবা সম্পাদান করা সম্ভব। নিষ্ঠাপূর্বক কিঞ্চিৎ মাত্র ভগবদ্ভক্তির অনুষ্ঠান করলেও মানুষ পূর্ণসিদ্ধি লাভ করতে পারে।
. আধুনিক বিজ্ঞান স্থাবর ও জঙ্গম সব কিছুরই যে একটা পরম উৎস রয়েছে তা কেউই অস্বীকার করতে পারে না। এই পরম উৎসটি যুক্তিপূর্ণ এবং তা প্রামাণিকভাবে শ্রীমদ্ভাগবতে বর্ণিত হয়েছে।
শ্রীমদ্ভাগবত অধ্যায়নের লাভ : নিষ্ঠা সহকারে গ্রন্থটি পাঠ করলেই যথাযথভাবে ভগবানকে জানতে পারেন এবং নাস্তিক্যবাদের ভয়ঙ্কর আক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা তথা অপরকে ভগবন্মূখী হতে অনুপ্রাণিত করতে পারেন।
শ্রীমদ্ভাগবতের শুরু: সর্বকারণের পরম কারণের সংজ্ঞা নিরূপণের মাধ্যমে।
এই গ্রন্থটি পাঠের যোগ্যতা : একমাত্র যোগ্যতা হচ্ছে ধাপে ধাপে অত্যন্ত সাবধানতার সঙ্গে অধ্যায় থেকে অধ্যায়ে অগ্রসর হওয়া।
. প্রথম নটি স্কন্ধ পাঠ করলেই যে কোনো পাঠক অবশ্যই ভগবত্তত্ত্ব হৃদয়ঙ্গম করতে পারবেন।
. সকলের পক্ষে অল্প অল্প পরিমাণে এটি পাঠ করাই সমীচীন।
. এক নাগারে পড়ে গেলে তার ভাব যথাযথভাবে গ্রহণ করা সম্ভব হবে না।
শ্রীমদ্ভাগবত অধ্যয়ন করতে হয় ব্যক্তি ভাগবত বা যিনি শ্রীমদ্ভাগবতের শিক্ষার মাধ্যমে নিজের জীবনকে পরিচালনা করেন তার তত্ত্বাবধানে।
উপলব্ধি: শ্রীমদ্ভাগবত মানব সমাজ ব্যক্তিজীবনের সমস্ত সমস্যা দূর করতে সক্ষম। যে কেউ বিনয়ী হয়ে অধ্যয়নের মাধ্যমে নিজ জীবনকে সফল করতে পারেন। লেখক : ডিরেক্টর ,ইস্কন ইয়ুথ ফোরাম, ঢাকা