সুশীলরাও আগামী নির্বাচনে সেনাবাহিনী চায়
সাইদ রিপন : বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মতো সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরাও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েনের কথা বলেছেন। নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক করা, সেনা মোতায়েন এবং ‘না’ ভোটের বিধান চালু, নির্বাচনকালীন সরকারের ধরনসহ বিভিন্ন বিষয়ে মত দিয়েছেন তারা।
গতকাল নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ধারাবাহিক সংলাপে সুশীল সমাজের প্রতিনিনিধিরা এ পরামর্শ দিয়েছেন। সকাল ১১টা থেকে নির্বাচন কমিশন ভবনে এ সংলাপে আমন্ত্রিত ৫৯ জনের মধ্যে অর্ধেকই উপস্থিত ছিলেন না। অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের ছবি তোলার অনুমতি দেওয়া হলেও মতবিনিময় সভায় কাউকে থাকতে দেওয়া হয়নি। তবে সংলাপ থেকে বেরিয়ে নাগরিক সমাজের কয়েকজন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। পরে কমিশনের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করেন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, রিটার্নিং অফিসার নিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এক্ষেত্রে নিজস্ব লোকও হতে পারে, অথবা ইসির চিহ্নিত জেলা প্রশাসকও হতে পারে। এ কর্মকর্তা নিয়োগেও সক্রিয় থাকতে হবে। অভিযোগ আমলে নিয়ে সঠিক পদক্ষেপ নিলে অনেক অনিয়ম রোধ করা সম্ভব হবে।
নির্বাচনকে ঘিরে ভোটার, প্রার্থী, প্রস্তাবক-সমর্থক, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তারা আতঙ্কে থাকেন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ভয়মুক্ত নির্বাচন করতে সেনা মোতায়েনের বিষয়টা গুরুত্ব পেয়েছে। তাদের দৃশ্যমানতা গুরুত্ব পেয়েছে। সেনা মোতায়েন দৃশ্যমান করতে হবে। নির্বাচনের সময় কোন ধরনের সরকার থাকবে তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ হওয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক আরেক উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেন, সব দলকে ভোটে আনতে হবে এবং সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজনে আইনে ঘাটতি থাকলে তার ব্যবস্থা নিতে হবে। আগামীতে ১ কোটি প্রবাসী নাগরিকের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে ভোট দেওয়ার সুযোগ তৈরির পরামর্শ দেন তিনি।
সিপিডির সম্মানিত ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ইসিকে মানুষের আস্থা অর্জন করতে হবে। দৃঢ় স্বাধীন ভূমিকা নিয়ে মানুষের কাছে তা দৃশ্যমান করতে হবে এবং প্রমাণ করতে হবে। নির্বাচনি আইন কার্যকর করার ক্ষেত্রে অনেক দুর্বলতা দেখা দিয়েছে। প্রশাসন কীভাবে নিরপেক্ষ থাকবে এবং তাদের নিরপেক্ষ রাখতে ইসি কীভাবে ভূমিকা রাখবে তা দেখতে হবে।
অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ইসিকে তার ইমেজ পুনরুদ্ধার করতে হবে, বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনতে হবে। কমিশনকে সক্রিয় হতে হবে। সকল দলকে নির্বাচনে নিয়ে আসতে হবে। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে হবে। প্রার্থী, পোলিং এজেন্ট ও ভোটারের মনে যে ভীতি রয়েছে তা দূর করতে হবে। এটা নিয়ে কারও দ্বিমত ছিল না। এবং আইন শৃঙ্খলবাহিনীর সঙ্গে সেনাবাহিনীকে রাখার মত দিয়েছেন তিনি। সম্পাদনা : হাসান আরিফ