বিচারপতিদের অপসারণ ক্ষমতা আবারও সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলে সংসদ ও বিচার বিভাগকে সমন্বিতভাবে কাজ করা উচিত
বিচারকদের জন্য ৩৯ দফা নির্দেশনা
এস এম নূর মোহাম্মদ : উচ্চ আদালতের বিচারপতিদের অপসারণ ক্ষমতা আবারও সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিলের হাতে দেওয়া হয়েছে। এর আগে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর মাধ্যমে যা সংসদের হাতে নিয়েছিল বর্তমান সরকার। ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ষোড়শ সংশোধনী জাতীয় সংসদে পাস হয়। পরে ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একই বছরের ৫ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের নয়জন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত বছরের ৫ মে হাইকোর্টের তিন বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন। পরবর্তীতে ওই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ গত ৪ জানুয়ারি আপিল করে।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি এই মামলার আপিল শুনানিতে সহায়তার জন্য আদালত ১২ জন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। ১২ জনের মধ্যে ১০ জন আদালতে তাদের মতামত উপস্থাপন করেন। তবে অ্যামিকাস কিউরি নিযুক্ত হলেও ব্যারিস্টার রফিক-উল হক ও ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ মতামত দেননি। এছাড়া বক্তব্য প্রদান করা ১০ জনের মধ্যে শুধু ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি ষোড়শ সংশোধনী রাখার পক্ষে মত দেন। আর বাকিরা এই সংশোধনী বাতিলের পক্ষে নিজেদের যুক্তি তুলে ধরেন। সংশোধনী বাতিলের পক্ষে মত দেওয়া ৯ আইনজীবী হলেন- ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, বিচারপতি টিএইচ খান, ড. কামাল হোসেন, এ এফ হাসান আরিফ, ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, আবদুল ওয়াদুদ ভূইয়া, এম আই ফারুকী, ফিদা এম কামাল এবং এ জে মোহাম্মদ আলী।
আপিলের ওপর ৮ মে শুনানি শুরু হয়, যা ১ জুন শেষ হয়। ৩ জুলাই রায়ের সংক্ষিপ্তসার ঘোষণা করেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির বেঞ্চ। রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল খারিজ করে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখা হয়। গতকাল ৭৯৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে।
রায়ে বলা হয়, ‘হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়েছে যে, অধিকাংশ সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের নজীর (রেকর্ড) এবং দেওয়ানি মামলাও রয়েছে। ১৬তম সংশোধনীর দ্বারা তারাই কার্যত উচ্চ আদালতের বিচারকদের নিয়ন্ত্রক হিসেবে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছেন। এছাড়া সংসদ সদস্যদের মধ্যে শতকরা ৭০ ভাগই ব্যবসায়ী। এসব সংসদ সদস্য আইন প্রণয়নের সময় অধিকাংশ দিন সংসদে অনুপস্থিত থাকেন। তাদের করা আইন নিম্নমানের ও ত্রুটিপূর্ণ। তারাই সুপ্রিম কোর্টের বিচারক অপসারণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত হবেন। সংসদ সদস্যদের দায়িত্ব নয় একজন বিচারকের অসদাচরণ ও অযোগ্যতার বিচার করা। হাইকোর্টের দেওয়া এসব অভিমত অপ্রত্যাশিত। এটা আমরা গ্রহণ করতে পারি না। আদালত সংসদ সদস্যদের নিয়ে এ জাতীয় মন্তব্য করতে পারে না। জাতীয় সংসদ ও আদালতের মধ্যে একটি সুসম্পর্ক থাকা উচিত। একইভাবে আদালত কার্যক্রম নিয়ে সংসদেরও এমন কোনো মন্তব্য করা উচিত নয়। সংসদ ও বিচার বিভাগকে সমন্বিতভাবে কাজ করা উচিত।
রায়ে বলা হয়, ৭ অনুচ্ছেদ সংবিধানের শ্রেষ্ঠত্ব নিশ্চিত করেছে। এতে সুপ্রিম কোর্ট শুধুই রাষ্ট্রের একটি স্বাধীন অঙ্গ নয়, সংবিধানের অভিভাবকও বটে। সংবিধানই কোনো আইনকে সংবিধান পরিপন্থী ঘোষণার এখতিয়ার সুপ্রিম কোর্টকে দিয়েছে। বিচারক অপসারণের ক্ষমতা যদি সংসদ সদস্যদের হাতে যায় তবে তার প্রভাব বিচার বিভাগে পড়বে-এতে কোনো সন্দেহ নেই। এছাড়া দীর্ঘদিন সুপ্রিম জুডিসিয়াল ব্যবস্থা না থাকায় প্রধান বিচারপতির প্রশাসনিক পদক্ষেপ গ্রহণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ অবস্থায় কেউ কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারবে না যে, আমাদের আদালতে একজন বিচারপতি কারনান (ভারতের বিচারপতি) নেই। যদি কোনো একজন বিচারকের তার বিভাগের প্রধানের প্রতি দায়বদ্ধ না থাকে তবে ওই বিভাগ অকার্যকর হয়ে পড়তে বাধ্য।
রায়ে আরও বলা হয়, উচ্চ আদালত ও নিম্ন আদালতের শৃঙ্খলার বিষয়ে দেশে কোনো বিধান নেই। যা বিচার বিভাগের জন্য আত্মঘাতী। এক্ষেত্রে অ্যাটর্নি জেনারেলের অভিমত হলো নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষই ব্যবস্থা নিতে পারবে। দেশের প্রধান আইন কর্মকর্তার কাছ থেকে এ জাতীয় মন্তব্য আদালত প্রত্যাশা করেনি। তার এ যুক্তি নির্বাহী বিভাগের বক্তব্যের প্রতিফলন। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন যে দেশে বর্তমানে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল ব্যবস্থা বলবৎ নেই। এ অবস্থায় ১৬তম সংশোধনী বাতিল হলে একটি শূন্যতার সৃষ্টি হবে। তার এ যুক্তি গ্রহণযোগ নয়। কারণ বর্তমান ব্যবস্থা বাতিল হলে আগের ব্যবস্থা অর্থাৎ সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল ব্যবস্থা দ্রুত বলবৎ হবে।
রায়ে আদালত বলেন, সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদে সংবিধান সংশোধন করার ক্ষমতা জাতীয় সংসদকে দেওয়া হয়েছে। তবে সে ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। জনগণ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক অপসারণ ক্ষমতা সংসদকে দেয়নি। এটা সংবিধানের ৮৮(খ)((আ), ৮৯(১) এবং ৯৪(৪) অনুচ্ছেদে প্রতিফলিত হয়েছে।
বিচারকদের ৩৯ দফা আচরণ বিধি
বিচারকদের আচরণ বিধি নিয়েও রায়ে বলা হয়েছে। রায়ে ৩৯ দফা আচরণ বিধি নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। ওই ৩৯ দফা হলোÑ
১. বিচার বিভাগের সংরক্ষিত সততা ও স্বাধীনতার জন্য একজন বিচারকের উচ্চতর মান বজায় রেখে বিচারকাজে অংশগ্রহণ করা উচিত।
২. দেশের সংবিধান ও আইনের প্রতি সম্মান রেখে বিচারকের কাজ করা উচিত, যাতে বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা বজায় থাকে।
৩. একজন বিচারকের রায় পারিবারিক, সামাজিক বা অন্যান্য সম্পর্কের দ্বারা প্রভাবিত হবে না। নিজের বা অন্য কারো ব্যক্তিগত স্বার্থে বিচারকাজ প্রভাবিত হবে না।
৪. আইনানুযায়ী একজন বিচারকের পেশাদারী যে এখতিয়ার বা ক্ষমতা রয়েছে তা আইনের প্রতি সম্মান ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে প্রয়োগ করতে হবে। কোনো জনগণের দাবি বা সমালোচনার ভয়ে প্রভাবিত হওয়া যাবে না।
৫. প্রত্যেক বিচারকের বিচারকাজ পরিচালনায় ধৈর্যশীল হতে হবে। সম্মান, শ্রদ্ধাবোধ পক্ষপাতদুষ্টহীনভাবে আইনজীবী ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ আচরণের মাধ্যমে বিচারকাজ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
৬. ঘোষিত রায় বা আদেশ প্রকাশ করতে অযাচিত বিলম্ব করা উচিত নয়। দ্রুত নিষ্পত্তি করা উচিত। একটি রায় ঘোষণার পর ছয়মাসের বেশি সময় পর স্বাক্ষর করা ঠিক নয়। তার আগেই স্বাক্ষর করতে হবে।
৭. মূলতবি বা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় থাকা মামলার ক্ষেত্রে বিচারককে জন মন্তব্য এড়াতে হবে।
৮. বিচারকের নিরপেক্ষতা যদি ব্যাপকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হয় তবে সেই মামলার বিচারের ক্ষেত্রে নিজেই নিজেকে অযোগ্য ঘোষণা করা উচিত।
৯. কোনো ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, কোনো মামলার সঙ্গে আগে সম্পর্ক ছিল বা আগে ওই মামলায় তিনি আইনজীবী হিসেবে লড়েছেন বা মামলার কোনো পক্ষের সঙ্গে বা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিল এই ক্ষেত্রে নিজেকে ওই মামলার বিচারকাজে তিনি অযোগ্য ঘোষণা করবেন।
১০. একজন বিচারক ওই বিষয়ে শুনানি গ্রহণ করবেন না, যেটায় তার স্ত্রী বা সন্তানেরা ও আত্মীয়স্বজন কোনোভাবে জড়িত থাকেন। অথবা এমন কোনো ব্যক্তি জড়িত থাকেন, যার দ্বারা বিচারক প্রভাবিত হতে পারেন।
১১. বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থায় নিরবচ্ছিন্নতা ও বিচার বিভাগীয় কার্যালয়ের শপথ রাখার সনদ থাকতে হবে একজন বিচারকের।
১২. বিচার কার্যালয়ের মর্যাদার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ আচরণ অনুশীলন করতে হবে বিচারককে।
১৩. একজন বিচারক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নিজে বা কোনো সংগঠন বা সমিতির সঙ্গে ব্যবসায় জড়িত থাকতে পারবেন না।
১৪. বিচারকের কার্যালয়ের সম্মানহানি হয় জনগণের অপ্রত্যাশিত এমন কোনো কাজ বিচারক করবেন না। অবশ্যই তাকে সচেতন থাকতে হবে যে, তিনি জনগণের নজরদারির মধ্যে আছেন।
১৫. দেশ বিদেশের কোনো রাজনৈতিক কর্মকা-ে কোনো বিচারক জড়িত থাকতে পারবেন না।
১৬. একজন বিচারকের সম্পদ ও দায়-দায়িত্ব নিয়ে প্রধান বিচারপতির কাছে জবাবদিহিতা থাকতে হবে।
১৭. শুধু বিচার করলেই হবে না। দৃশ্যমান হতে হবে যে, একজন বিচারক ন্যায় বিচার করেছেন। উচ্চ আদালতের বিচারকের জনগণের বিশ্বাসকে বিবেচনা করতে হবে। নিরপেক্ষতার সঙ্গে তা করতে হবে।
১৮. আইনজীবী সমিতির কোনো সদস্যের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে এমন কেউ তার আদালতে মামলা পরিচালনা করলে সেটা পক্ষদোষে দোষী হবে।
১৯. একজন বিচারকের স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে, শ্যালক, শ্যালিকা বা ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজন যারা আইনজীবী সমিতিতে অনুশীলন করেন তাদের কাউকে তার আদালতে মামলা পরিচালনার অনুমতি ওই বিচারক দিবেন না।
২০. পরিবারের সদস্য নয়, কিন্তু আইনজীবী সমিতির সদস্য এমন কোনো ব্যক্তিকে কোনো বিচারক তার বাসস্থানে রাখতে পারবেন না।
২১. একজন বিচারক বিতর্কে অংশ নিতে পারবেন না। প্রকাশ্যে কোনো রাজনৈতিক বিতের্কেও অংশ নিতে পারবেন না। এমনকি বিচার বিভাগে মুলতবি রয়েছে এমন কোনো বিষয়েও বিতের্ক জড়াতে পারবেন না।
২২. একজন বিচারক রায় দেবেন, নিজেদের মধ্যে কথা বলবেন। কিন্তু কোনোভাবেই গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেবেন না।
২৩. বিচারক যদি কোনো মামলায় সিদ্ধান্ত দিতে অক্ষম হন, তাহলে তিনি ওই মামলা থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেবেন।
২৪. একজন বিচারক নিজেই যুক্তিসঙ্গত পর্যবেক্ষণ দ্বারা নির্ধারণ করবেন যে, তার আচরণ বা তিনি যা করছেন তা সঠিক।
২৫. একজন বিচারককে তার আচরণ ও কাজ দিয়ে বিচার বিভাগের মর্যাদা ও জনগণের বিশ্বাস অর্জন করতে হবে।
২৬. অসদাচরণ ও অযৌক্তিক কার্যাবলী থেকে একজন বিচারক সব সময় বিরত থাকবেন।
২৭. সাধারণ জনগণের কথা বিবেচনা করে ন্যায় বিচারের স্বার্থে একজন বিচারকের ব্যক্তিগত সীমাবদ্ধতা গ্রহণ করে কাজ করা উচিত।
২৮. জজ আদালতে অনুশীলন (মামলা পরিচালনা করেন) করেন এমন কোনো নিকটাত্মীয়কে বিচারকের এড়িয়ে চলা উচিত। যাতে কোনো প্রকার পক্ষপাতিত্বের সন্দেহ কেউ করতে না পারে।
২৯. বিচারকের পরিবারের কোনো সদস্য যদি কোনো মামলার কোনো পক্ষের প্রতিনিধিত্ব করে তাহলে ওই বিষয়ে বিচারক অংশ নিতে পারবেন না।
৩০. আইন পেশায় জড়িত রয়েছেন এবং মক্কেল গ্রহণ করেন এমন কোনো ব্যক্তিকে বিচারকের বাসস্থানে স্থান দেবেন না।
৩১. একজন বিচারকের পরিবারের কোনো সদস্যকে তার আদালতের কোনো বিষয়ে সামাজিক বা অন্য কোনো সম্পর্কের দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার অনুমতি দেবেন না।
৩২. একজন বিচারক কারো সম্পদ ব্যবহার করতে পারবেন না বা কারো কাছ থেকে ঋণ নিতে পারবেন না। যে ব্যক্তির দ্বারা বিচারকাজে প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পরিবারের সদস্যদেরও এমন কাজ থেকে বিরত রাখবেন।
৩৩. বিচার বিভাগে কর্মরত থাকা অবস্থায় একজন বিচারক ব্যক্তিগত চেম্বার ব্যবহার করতে পারবেন না বা আইন পেশায় অংশ নিতে পারবেন না।
৩৪. বিচারক বা বিচারকের পরিবারের সদস্যরা বিচার বিভাগীয় দায়িত্ব পালনের জন্য কোনো উপহার চাইবেন না, উপহার গ্রহণ করবেন না বা কোনো ঋণ গ্রহণ করবেন না।
৩৫. একজন বিচারক শালীনতা বজায় রেখে আদালতে উপস্থিত বিচারপ্রার্থী তথা সাক্ষী, আসামি, বাদী, বিবাদী, আইনজীবী, আদালতের কর্মচারীদের নিয়ন্ত্রণ করবেন। প্রত্যেকের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করবেন।
৩৬. একজন বিচারক বিচার বিভাগীয় দায়িত্বের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ কোনো আচার আচরণ করবেন না।
৩৭. প্রধান বিচারপতি কর্তৃক বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী একজন বিচারক এজলাসে উঠেবেন ও নামবেন। দৈনন্দিন কার্যতালিকায় থাকা বিচারকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি আদালতের সময়সীমার আগে এজলাস ত্যাগ করতে পারবেন না।
৩৮. কোনো বিচারকের অসদাচরণ বা বিচারকাজের অযোগ্যতা সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে বা অন্য কোনো সূত্রে যদি প্রধান বিচারপতি জানতে পারেন, এই অভিযোগ তদন্তে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগে তার পরবর্তী দুইজন সিনিয়র বিচারপতিকে নিয়ে কমিটি করবেন। চূড়ান্ত তদন্ত হওয়ার পর প্রধান বিচারপতি অভিযুক্ত বিচারপতিকে অপসারণের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবেন।
৩৯. উপরোক্ত আচার আচরণ মেনে না চললে একজন বিচারক অসদাচরণ করেছেন বলে গণ্য করা হবে।