বেসরকারি শিক্ষকদের অবসরভাতা মিলছে না ৬ বছরেও
ফারুক আলম : চাকরি জীবন থেকে অব্যাহতি পাওয়ার পর বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারিদের অবসর সুবিধা পাওয়ার জন্য বোর্ডের শরণাপন্ন হলেও ৫-৬ বছরেও মিলছে না অবসর ভাতা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বয়সের ভারে ন্যুজ্ব শিক্ষকরা অবসর সুবিধার জন্য বোর্ডে এসে ধরণা দেয়। শুধুমাত্র চাকরির শেষ জীবনের পর কিছু পুঁজিকে আঁকড়ে ধরে বাঁচার চেষ্টায়। তবে সেই অবসরভাতা ও কল্যাণ তহবিলের টাকা পেতে বছরের পর বছর লেগে যায়।
এ প্রতিবেদকে ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার ভুক্তভোগী স্কুল শিক্ষক শ্রী রতন কুমার শীল জানান, ২০১২ সালে চাকরি থেকে অবসর নেয়ার পর সেসময় অবসরভাতা ও কল্যাণ তহবিলের টাকার জন্য আবেদন করি। অনেক ঘোরাঘুরির পর কল্যাণ তহবিলের টাকা পেয়েছি। গত কয়েক মাস আগে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি চলতি বছরের ৪ জানুয়ারিতে অবসরভাতা চেক স্কুলের নামে ইস্যু করা হয়েছে। কিন্তু চেকটা আমার স্কুলে পৌঁছেনি। গত মাসে খবর নিতে আসলে অবসর সুবিধা বোর্ড থেকে বলা হয় থানা ও জেলার পোস্ট অফিসে খোঁজ নিতে। আমি সেখানে গিয়েও খুঁজেছি কিন্তু চেক পাওয়া যায়নি। তারা আবার পরে বলেছে চেক হারিয়ে গেছে এই মর্মে থানায় জিডি করে কাগজ জমা দিতে। আক্ষেপ করে স্কুল শিক্ষক রতন কুমার বলেন, ৬ বছর হয়ে গেলো আবার কবে এ চেক পাবো।
এ বিষয়ে বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী অবসর সুবিধার বোর্ডের পরিচালক মো. খসরুল আলম বলেন, বাজেট ঘাটতি কারণে শিক্ষক-কর্মচারীর অবসরভাতার অর্থ দিতে একটু দেরি হয়ে যায়। তবে মৃত্যুজনিত শিক্ষক-কর্মচারিদের এ অর্থ দ্রুত নিষ্পত্তি করা হয়। বর্তমানে প্রায় ৪৮ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীদের ফাইল জমা আছে। বর্তমানে ২০১৩ সালের চেকগুলো দ্রুত ছেড়ে দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, সারাদেশের এই বিশাল শিক্ষা পরিবারের কাজ এক জায়গাতে হওয়ায় একটু বেশি সময় লেগে যায়। এরপর আবার বাজেটে ঘাটতি তো আছেই। তবে গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এই খাতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে কিছু অর্থ দেয়ায় আমরা এখন এগুলো দ্রুত দেয়ার চেষ্টা করছি। আগামী ৩ মাসের মধ্যে ১৩ সালের চেক দেওয়া হয়ে যাবে বলে আশা করা যায়।
অবসর সুবিধা বোর্ডের কাউন্টারে অনেকেই সঠিক তথ্য পায় না বলে প্রশ্ন করলে এই পরিচালক বলেন, আমাদের অফিসে কর্মকর্তা-কর্মচারি মিলিয়ে সর্বমোট ২৫ জন জনবল। এই অল্পসংখ্যক জনবল দিয়ে কাজ করতে একটু-আধটু সমস্যা হতেই পারে।
দেশের বিভিন্ন দূরপ্রান্ত থেকে শিক্ষকদের ঢাকায় এসে খোঁজ নেয়ায় অনেক কষ্ট হয় এ ব্যাপারে প্রশ্ন করলে অবসর সুবিধার বোর্ডের পরিচালক খসরুল আলম ব্যাক্তিগত অভিমত থেকে বলেন, আমার মনে হয় ঢাকার পাশাপাশি দেশের বড় বিভাগীয় শহর চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহীতে অবসর সুবিধার বোর্ডের অফিস কার্যক্রম পরিচালনা করলে ওই সকল শিক্ষকদের কষ্ট কিছুটা লাঘব হবে। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ