এ নিয়ে মন্তব্য না করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে আওয়ামী লীগে অস্বস্তি
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : ষোড়শ সংশোধী নিয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে অস্বস্তিতে সরকার। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। আদালত অবমাননার ভয়ে কথা বলতে পারছেন না কেউ। রায় সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সমালোচনার মুখে পড়েছেন। এই পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন,ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে যে কোনো ধরনের মন্তব্য থেকে বিরত থাকতে। কেউ যদি মন্তব্য করেন এবং আদালত অবমাননা করেন তবে তার দায় দল নেবে না।
সূত্রমতে নির্বাহী ও বিচার বিভাগের মধ্যে সৃষ্ট টানাপড়েন নিরসনের জন্য প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সিনিয়র আইনজীবীদের আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, সাবেক আইনমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুল মতিন খসরু এবং সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনসহ কয়েকজনকে নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী গতকাল রোববার দুপুরের পর প্রধান বিচারপতির কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের তিন সিনিয়র আইনজীবী প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিন্হার সঙ্গে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন। বৈঠক সম্পর্কে ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, দুপুরে বৈঠক হয়েছে। বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে বিভিন্ন ইস্যুতে যে দূরুত্ব সৃষ্টি হয়েছে তা নিরসনে ভূমিকা রাখার জন্য আমাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। ব্যারিস্টার শফিক জানান, প্রধান বিচারপতি ইউসুফ হোসেন হুমায়ুনকে ডেকেছিলেন। তিনি শফিক ও আবদুল মতিন খসরুকে নিয়ে গেছেন। আবার আমাকেও নিয়ে গিয়েছিলেন। ব্যারিস্টার শফিক বলেন, কোনো অবস্থাতেই বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে দূরত্ব থাকা উচিত নয়। আইন ও সংবিধান অনুযায়ী নিজ নিজ বিভাগের দায়িত্ব পালন করা উচিত।
আওয়ামী লীগের এক প্রেসিডিয়াম সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, গত সপ্তাহে বিচারপতিদের অভিশংসনের ক্ষমতা সংসদের হাতে রেখে সংবিধানের যে ষোড়শ সংশোধনী হয়েছিল তা অবৈধ বলে রায় দিয়ে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছেন। এই রায়ের পর পরই ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মধ্যে অস্বস্তি দেখা দেয়। তবে সিনিয়র নেতারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া জানানো থেকে বিরত থাকতে নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন। তিনি দলের সাধারণ সম্পাদককে বলেছেন, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করার উদ্যোগ নিন।
জানা গেছে, গতকালও দলের সিনিয়র আইনজীবীরা বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকে আবদুল মতিন খসরু প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনার বিষয় তুলে ধরেছেন। সম্পাদনা : হুমায়ুন কবির খোকন