চীন-ভারত সংকট নিরসনে দরকার কার্যকর উদ্যোগ
ড. আব্দুল্লাহ হেল কাফী
চীনের সঙ্গে ভারতের বেশকিছু সীমান্ত সংযোগ রয়েছে। ভূখ-গত সমস্যার কারণে দু’দেশের সীমানায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, যুদ্ধ বাধে ১৯৬২ সালে। সেই যুদ্ধে চীন ভারতকে পরাজিত করে। আবার নতুন করে ডোকলাম সীমান্তে চীনের রাস্তা নির্মাণকে কেন্দ্র করে তাদের মাঝে বেশ উত্তেজনা বিরাজ করছে। ডোকলাম অঞ্চলে দু’দেশের সৈন্যরা মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। যদিও তাদের এই উত্তেজনা একমাসেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। অন্যদিকে চীন তার ভূখ-ে ভারতীয় সৈন্যদের অনুপ্রবেশ বেশিদিন সহ্য করবে না। চীন নয়াদিল্লির প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে যে, সহ্যের একটা সীমা আছে। অন্যদিকে চীন ওই অঞ্চলে ব্যাপক সামরিক মহড়া চালিয়েছে। চীন সেখানে ছোট আকারে যুদ্ধেরও চিন্তা-ভাবনা করছে। তবে ডোকলাম অঞ্চল নিয়ে যদি তাদের মাঝে ছোট আকারের য্দ্ধু বেঁধে যায়, তাহলে সেটা আর ছোট আকারে থাকবে না।
কেননা, আমরা দেখি যে প্রথম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ছোট আকার থেকেই শুরু হয়েছিল। পরবর্তীতে সেটা সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল। সে দুটি যুদ্ধের ভয়াবহতার কথা ভেবে এখনো মানুষ ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। তাই যুদ্ধ কোনো সমাধান নয়। সেটা ছোট কিংবা বড় আকারের যুদ্ধই হোক না কেন। সীমান্ত সমস্যা যদি সমাধান না হয় বা চীন যদি ছোট আকারে সামরিক হামলা চালায়, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই ভারত পাল্টা হামলা চালিয়ে তার জবাব দেবে। যদি এ রকম কোনোকিছু হয়, তাহলে সেটা আর ছোট আকারে থাকবে না।
তাদের সেই উত্তেজনা বা যুদ্ধ এশিয়ার পার্শ্ববর্তী অন্যান্য অঞ্চল থেকে সারাবিশ্বেই ছড়িয়ে পড়তে বেশি সময় লাগবে না। যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে তাদের উত্তেজনার ফলাফল সারাবিশ্বই ভোগ করবে। এজন্যই আমি মনে করি, জাতিসংঘকে জরুরি ভিত্তিতে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধানের যেন উদ্যোগ নেয়। তাদের মধ্যে সৃষ্ট উত্তেজনা যেন কোনোভাবেই যুদ্ধের মতো রূপ লাভ না করে, সেই প্রচেষ্টা চালায়। এমনকি তাদের এই ভূখ-গত সমস্যা সমাধানের জন্য রাশিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপান এগিয়ে আসতে পারে।
পরিচিতি: অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, জাবি
মতামত গ্রহণ: বায়েজিদ হোসাইন
সম্পাদনা: আশিক রহমান ও মোহাম্মদ আবদুল অদুদ