তুফান ঝড় বন্ধে প্রয়োজন তার”ণ্যের জাগরণ
মোমিন মেহেদী
‘ধর্ষণ’ নিয়ে আমাদের আইনে বলা হয়েছেÑ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) আইন, ২০০৩-এর প্রস্তাবিত সংশোধনীতে ২(ঙ) ‘ধর্ষণ’ অর্থ ধারা ৯ এর বিধান সাপেক্ষে, চবহধষ ঈড়ফব, ১৮৬০ (অপঃ. ঢখঠ ড়ভ ১৮৬০) এর ঝবপঃরড়হ ৩৭৫-এ সংজ্ঞায়িত ৎধঢ়ব ‘তবে, বয়স চৌদ্দ ও তের বৎসরের স্থলে আঠার বৎসর পড়িতে হইবে’ এর স্থলে প্রস্তাবিত সংশোধনীতে বলা হয়েছেÑ এই ধারায় উল্লেখিত ব্যতিক্রম ব্যতীত যদি কোনো পুর”ষ কোনো নারীর সহিত প্রথমত, তাহার ইচ্ছার বির”দ্ধে; দ্বিতীয়ত, তাহার সম্মতি ব্যতীত; তৃতীয়ত, মৃত্যু বা জখমের ভয়ভীতি প্রদর্শনপূর্বক আদায়কৃত সম্মতিসহ; চতুর্থত, তাহার স্বামী নহেন জানিয়াও তিনি তাহার বিবাহিত স্ত্রী এরূপ বিশ্বাস স্থাপনপূর্বক সম্মতিসহ; পঞ্চমত, আঠার বৎসরের কম বয়সের কোনো নারীর সহিত তাহার সম্মতিসহ বা সম্মতি ব্যতীত যৌন সঙ্গম করেন তাহা হইলে তিনি উক্ত নারীকে ধর্ষণ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে।’ ধর্ষণ, নারী নির্যাতন বন্ধের জন্য ৩ মাসের মধ্যে ফাঁসি কার্যকরের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ এবং তুফান সরকারের কুশপুত্তলিকা দাহ কর্মসূচিতে পুলিশি বাধা শুধু আমাকে অবাকই করে দেয়নি; সচেতন করে দিয়েছে। চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে দেশের মানুষ সত্যিকারার্থেই ভালো নেই। যে দেশের মানুষ ভালো থাকে, সে দেশে অন্তত এভাবে বাধাগ্রস্ত করতে পারে না গণতান্ত্রিক কোনো চাওয়া পাওয়ার আন্দোলনকে।
আগস্ট মানে নতুন প্রজন্ম জানে শোকের মাস; পিতা হারাবার মাস। আর সেই আগস্টেরই ৪ তারিখ ছিল আমার জীবনে নতুন করে ব্যথিত হওয়ার দিন। এদিন নতুনধারার রাজনীতিকগণ তাদের বক্তব্যে বলেছিলেন, দেশের মানুষ নৈরাজ্য থেকে মুক্তি চায়। নতুন প্রজন্ম অন্যায় আর অপরাধের রাজত্ব থেকে মুক্তির জন্য নারী নির্যাতন মুক্ত সমাজ চায়। ৫৭ ধারা বাতিলের মধ্য দিয়ে অবাধ মুক্ত প্রবাহের গণমাধ্যম চায়। তাদের সেই চাওয়া পাওয়াকে বাস্তবায়নের মধ্যদিয়েই কেবল বায়ান্নর প্রেরণা, একাত্তরের চেতনা জাগিয়ে রাখা সম্ভব। তা না হলে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ মুখ থুবড়ে পড়বে। যা নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধিরা চায় না। তারা চায় না রাজনৈতিক ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে আর কোনো তুফান ঝড় তুলুক, কষ্টের নষ্টামি শুর” কর”ক। ঠিক যেভাবে বগুড়া শহর শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক ও কিশোরী ছাত্রী ধর্ষণের হোতা তুফান বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক বনে গিয়েছিল। গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যানুযায়ী আওয়ামী শ্রমিক লীগের আহ্বায়কের পদকে হাতিয়ার করে অল্প সময়ের মধ্যেই তার এই উত্থান।
অনৈতিক কাজে জড়িত থাকায় সংগঠন থেকে তাকে বহিষ্কারের রঙধনু ওঠালেও পুলিশি সর্বাত্মক সহযোগিতা এই ধর্ষকের সঙ্গেই আছে। যে কারণে নতুনধারা বাংলাদেশ এনডিবি ধর্ষক তুফানের বিচারের দাবিতেÑ ৩ মাসের মধ্যে ধর্ষকের ফাঁসির দাবিতে অনুষ্ঠিত সমাবেশ ও কুশপুত্তলিকা দাহ কর্মসূচিতে বাধা প্রদান করা হয়েছিল বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি। যারা ধর্ষক-নারী নির্যাতক তুফান সরকারের কুশপুত্তলিকা দাহ ও সমাবেশে বাধা দিতে এসেছিলেন, সেই পুলিশ ভাইদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাইÑ মনে রাখবেন আপনারও বোন আছে মেয়ে আছে। আজ যদি ৩ মাসের মধ্যে ফাঁসির উদ্যোগ না নেয়; তাহলে আগামীতে মুক্তি পাবে না আমাদের মা বোনেরাও। যা আমাদের কারোই কাম্য নয়; কাম্য নয় বিধায়ই উত্তরণ চাই, প্রতিরোধ চাই। সকলের জানা প্রয়োজন যে, এসব ধর্ষক হায়েনারা রাতারাতি দলীয় প্রভাব খাটিয়ে অর্থ-বিত্তশালী হওয়ায় অন্ধকার আর আলোর পার্থক্য বোঝে না। আর তাই চাই আইনের প্রয়োগ, সচেতনতা ও নতুন প্রজন্মের ঐক্যবদ্ধতা সকল অন্যায় আর অপরাধের রাজনীতির বির”দ্ধে।
লেখক: চেয়ারম্যান, নতুনধারা বাংলাদেশ-এনডিবি
সম্পাদনা: আশিক রহমান