বিলাসিতা কমিয়ে পোশাকশ্রমিকদের বেতন-বোনাস দিন
জলি তালুকদার
বিনা নোটিসে কর্মী ছাঁটাই ও বেতন-বোনাস না দেওয়া মালিকপক্ষের গাফিলতির কারণেই হয়ে থাকে। মেরিডিয়ান ফ্যাশন পোশাক কারখানাতে ঈদের আগে কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে। শুধু মেরিডিয়ান ফ্যাশন নয়, গত রমজানের ঈদের আগে বড় বড় পোশাক কারখানাতেও প্রচুর কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছিল। এই ছাঁটাইটা করা হয়েছে খুব কৌশল অবলম্বন করে। ছুটির দিনে, ঈদের আগের দিন বিনা নোটিসে তারা কর্মী ছাঁটাই করেছে। ডেনিম ফ্যাশন কারখানাতেও এ রকম বিনা নোটিসে কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছিল। মালিকপক্ষ কর্মী ছাঁটাই করছে অধিক লাভের আশায়। এমনভাবে ছাঁটাই করা হয়, যাতে করে একজন শ্রমিক পাঁচ বছরের কর্ম অভিজ্ঞতা লাভ করতে না পারে। কারণ, তারা যে সার্ভিস ও অভিজ্ঞতার বেনিফিট পায়, পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা হলে এটা তার জন্য আরও ভাল হয়। এই বেনিফিটটা মালিকপক্ষ দিতে চান না। ফলে তাদের বিনা কারণে, বিনা নোটিসে ছাঁটাই করা হয়। সারাবছর ধরেই তারা ছাঁটাই করছে কিন্তু ঈদের আগে ছাঁটাই করলে যেটা হয়, শ্রমিকরা একটু বেশি আতঙ্কিত হয়। তারা রাস্তায় নেমে আন্দোলন করে। ফলে একটা অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
গত ঈদেও এ রকম শ্রমিক ছাঁটাই হয়েছে কিন্তু আন্দোলন সৃষ্টি হয়নি, কারও নজরে আসেনি। মালিকদের চরিত্র হলো তারা অধিক লাভের আশায় কর্মী ছাঁটাই করে থাকেন। যে শ্রমিকদের কাজে দেশ সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে, সর্বোচ্চ রপ্তানি আয় করছে, সরকার এবং কারখানা মালিকরা যদি তাদের ব্যাপারে সচেতন না হয়, আন্তরিক না হয়, তাহলে শ্রমিকদের এই কষ্ট দূর হবে না। লক্ষ্য করলে দেখা যায়, সব পোশাক কারখানার মালিকেরা ঈদের আগে পরিবার নিয়ে বিদেশ ভ্রমণে যায়। তারা দেশের বাইরে গিয়ে কেনাকাটা করে। পরিবার নিয়ে কানাডা, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর গিয়ে অবকাশ যাপন করে। তাদের এই উগ্র বিলাসিতা একটু কমিয়ে দিলেই পোশাক শ্রমিকেরা কিছুটা ভালো থাকতে পারে। এই উগ্র বিলাসিতা কমিয়ে শ্রমিকদের প্রাপ্য বেতন-বোনাস দেওয়া এবং শ্রমিকদের ছাঁটাই ও নির্যাতন বন্ধ করতে হবে, এটা খুবই জরুরি।
পরিচিতি: সাধারণ সম্পাদক, গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র
মতামত গ্রহণ: সাগর গনি
সম্পাদনা: আশিক রহমান ও মোহাম্মদ আবদুল অদুদ