তারেক মাসুদের কাজগুলো ঐতিহাসিক সম্পদ হবে
জুনায়েদ আহমদ হালিম
তারেক মাসুদ আমার খুব কাছের একজন বন্ধু। আমরা দীর্ঘ ২৫ বছর একসঙ্গে চলাফেরা করেছি। জীবনযাপন করেছি। বেশিরভাগ সময়ই আমি তার বাসায় থাকতাম। একসঙ্গে কাজ করতাম। চলচ্চিত্রের মাধ্যমে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক জায়গায় মানুষের মধ্যে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরির চেষ্টাটি তারেক মাসুদের ছিল। আমার বিবেচনায় বাংলাদেশের বিনোদন জগতের নিজস্ব জাতিসত্তা, ঐতিহ্য, স্মৃতি, আশা-আকাক্সক্ষা, মানুষের জীবন ভাবনা তার মতো করে তিনি সিনেমায় তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন।
তারেক মাসুদ অনেক বেশি আলাদা বা স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যের চলচ্চিত্র নির্মাতা ছিলেন। সবচেয়ে বড় কথা, তারেক মাসুদ আমাদের সমসাময়িক এবং ইতিহাসকে সে তার কাজে প্রামাণ্যকরণ করেছেন। সেটা ভবিষ্যতে আমাদের নিজস্ব জাতিসত্তার যে ঐতিহাসিকতা সেখানে গুরুত্বপূর্ণ দালিলিক প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত হবে। তারেক মাসুদের কাজগুলো আমাদের জাতীয় ঐতিহাসিক সম্পদ হবে। তারেক মাসুদের কর্মজীবনের প্রায় পুরোটা সময় সহযোগী, সহকর্মী হিসেবে পাশে ছিলাম। অন্যদিকে তার সঙ্গে যাদের ঘনিষ্ঠতা ছিল না, তার কাজের সঙ্গে পরিচিত ছিল না বা বিশ্লেষকের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার সুযোগ যাদের ঘটেনি তাদের কাছে তো তার গুরুত্বটা এখন উপলব্ধি হচ্ছে না। কিন্তু আমি মনে করি, অনাগত দিনে তার কাজগুলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে থাকবে। তারেক মাসুদ বেঁচে থাকলে আরও ভালো ভালো কাজ করতে পারতেন। একই সঙ্গে তরুণ প্রজন্মকে আরও উদ্বুব্ধ করতেন, তাতে আমরা আরও অনেক বেশি সংখ্যক তরুণকে চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে পেতাম। তার এই অকাল প্রয়াণ তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতা বা প্রত্যাশী নির্মাতাদের জন্য অনেক বড় একটা ক্ষতি হয়ে গেল। তাকে আমরা অনেক মিস করব।
পরিচিতি: চেয়ারম্যান, ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়
মতামত গ্রহণ: ফাতেমা-তুজ-জোহরা
সম্পাদনা: আশিক রহমান