মামার কাছ থেকে সালামি পেতে ভাই-বোনেরা একজোট হতাম
শৈশব অনেক আনন্দের, অনেক সুখের হয়। বেদনাও যুক্ত হতে পারে কখনো কখনো। তবে সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা যা-ই ঘটুক জীবনে সবটাই স্মৃতিময়। ঈদ অন্যতম একটি আনন্দ উপলক্ষ্য শিশুদের জন্য। মানুষের শৈশব অনেক স্মৃতিতে মোড়ানো থাকে। বিশেষ করে আমরা যারা গ্রামে বড় হয়েছি তাদের জন্য ঈদ মানে অন্যরকম আনন্দ। একমাত্র বড় উৎসব হচ্ছে, ঈদ। দেখা যায় ঈদে নতুন জামা-কাপড়, সালামি নেওয়া প্রধান একটা আকর্ষণ থাকে ঈদকে কেন্দ্র করে। ঈদকে কেন্দ্র করে আমার জীবনেও অনেক স্মৃতি আছে। একটি মজার স্মৃতির কথাই বলি। আমার বড় মামা, খুব হিসেবি মানুষ। সবকিছুতেই হিসেব তার। তার কাছ থেকে সহজে কিছু আদায় করা দুরূহ। এই কঠিনকেই আমরা ভাই-বোনেরা সহজ করার হিসাব কষি। বিশেষ করে ঈদ এলে, সালামি পেতে। যে করেই হোক, মামার কাছ থেকে সালামি আদায় করতে হবে। ঈদ সালামি দিতে চান না মামা। যত ভাগ্নে-ভাগ্নি আছি, মামার কাছ থেকে সালামি পেতে ভাই-বোনেরা একজোট হতাম। বুদ্ধি এঁটে তার কাছে যেতাম ঈদ সালামির জন্য। পরিস্থিতি এমন হতো যে, সালামি না দিয়ে আর মামা নিস্তার পেতেন না। দাবি আদায় হলে আমাদের আনন্দের সীমা থাকত না। অনেক আনন্দ হতো। সেসব স্মৃতি এখনো মনে পড়ে। এমন আরও অনেক আনন্দের স্মৃতি আছে, মজার সব স্মৃতি আজও তাজা। গ্রামে ঈদের মজাই আলাদা। অনেক মজা হতো। সাধারণত ঈদ উৎসবেই আমরা চাচাতো-মামাতো, খালাতো ভাই-বোন সবাই একত্র হতাম। ঈদে সবার সঙ্গে দেখা হতো, একটা মহাসম্মেলনের মতো ছিল। সবাই মিলে অনেক মজা করতাম। সেই জায়গাটি এখন আর নেই, সবাই এখন বড় হয়ে গেছি। অহরহ এখন আর গ্রামের বাড়িতেও যাওয়া হয় না। এখনকার সংস্কৃতিটাও আগের মতো বোধ হয় নেই। ঈদে গ্রামের বাড়ি যাওয়া, একটা হৈ হৈ, রৈ রৈ ব্যাপারটা এখন কম। এখন যারা শিশু তারা বড় হচ্ছে, আমার ধারণা এরা এটা একসঙ্গে একটা বড় পরিবারে ঈদ করার যে আনন্দ খুব মিস করে।
পরিচিতি: মুখপাত্র, গণজাগরণ মঞ্চ
মতামত গ্রহণ: তানভীন ফাহাদ
সম্পাদনা: আশিক রহমান