পাড়ার ছেলেদের সঙ্গে গ্রামের পুকুরে গোসল করতাম
হাসান আজিজুল হক
ছেলেবেলার জীবন কাটে একভাবে, আর বড় হয়ে কাটে আরেকভাবে। কুরবানির ঈদের অনেক স্মৃতি মনে পড়ে। অন্য আটদশটা সাধারণ দিনের চেয়ে ঈদের দিন খুব ভোরে উঠতাম। পাড়ার সব ছেলেদের সঙ্গে গ্রামের পুকুরে গোসল করতাম। গোসল সেরে বাসায় এসে নতুন একটা শার্ট গায়ে দিতাম এবং পুরনো একটা প্যান্ট পরতাম। সমস্ত শরীরে আতর এবং চোখে সুরমা লাগাতাম। তখন সবাই মিলে মনের আনন্দে ঈদগাহে যেতাম, নামাজ আদায় করতাম। কুরবানির গরু আগে থেকেই লালন-পালন করে রাখা হতো। সেটাকেই কুরবানি দিতাম। আগে থেকেই বাবা-চাচারা ঠিক করে রাখতেন, কোন গরুটাকে কুরবানি দেওয়া হবে। এখনকার মতো গরু কিনে কুরবানি দেওয়ার প্রচলন ছিল কম। প্রায় প্রতিটি বাড়িতে গোয়াল থাকত এবং তখন গরুর সংখ্যা অনেক কম ছিল। কী কারণে কুরবানি দেওয়া হয়, সম্ভবত ৯০ ভাগ মানুষই জানত না।
প্রায় একযুগ ধরে প্রায় সব বাড়িতে এখন কুরবানি দেওয়া হয়। বাড়িতে বাড়িতে গোশত পাঠানোর প্রচলন খুবই কম ছিল। অনেক বাড়িতে গোশত ড্রাই করে রাখার একটা প্রচলন ছিল। পরিবেশটা বেশ নোংরাই হতো। মুসলমান এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে মিল থাকলেও কিন্তু কিছু জায়গায় একবার অমিল দেখা দিল। কুরবানির সময় একজন হিন্দুকে মুসলমান পাড়ায় পাওয়া যেত না। তখনকার সময় মানুষের ধন সম্পদ তেমন ছিল না। যারা একটু ধনী শ্রেণির মানুষ ছিল, তারাই কুরবানি দেওয়ার কাজটা করতেন।
পরিচিতি: কথাসাহিত্যিক
মতামত গ্রহণ: ফাতেমা-তুজ-জোহরা
সম্পাদনা: আশিক রহমান ও মোহাম্মদ আবদুল অদুদ