নব্য জেএমবির আদলে ‘ব্রিগেড আদ্-দার-ই-কুতনী’ ৩ জঙ্গি গ্রেফতার
মাসুদ আলম : নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন (জেএমবি) সারোয়ার-তামিম গ্রুপের বর্ণিত নেতা ইমাম মেহেদী হাসান-এর নেতৃত্বে ‘ব্রিগেড আদ্-দার-ই-কুতনী’ দেশের বিভিন্ন স্থানে সদস্য সংগ্রহ করছে। ব্রিগেডটি কর্মীদের মধ্যে কিছু অংশকে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করে তাদের মাধ্যমে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে গত বুধবার বিকালে টাঙ্গাইল জেলার ভূয়াপুর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে সংগঠনের ৩ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৩। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র্যাব-৩-এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ।
তিনি বলেন, নব্য জেএমবির সারোয়ার-তামিম গ্রুপের আদলে নতুনভাবে সংগঠিত হচ্ছে ব্রিগেড আদ্-দার-ই-কুতনী নামক জঙ্গি সংগঠনটি। গ্রেফতারকৃতরা হলো আব্দুল মান্নান (৩০), শমসের ফকির (৩৩) ও জহুরুল খা (৩৫)। গ্রেফতারকৃতরা সংগঠনের বড় হুজুর ইমাম মেহেদীর নেতৃত্বে শপথ নেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করে যে, তারা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন (জেএমবি) সারোয়ার-তামিম গ্রুপের সক্রিয় সদস্য। তারা ‘ব্রিগেড আদ দার-ই-কুতনীর কমান্ডার বড় হুজুর ইমাম মেহেদীর নেতৃত্বে জঙ্গিবাদে অংশগ্রহণ করার জন্য টাঙ্গাইলের ভূয়াপুরে জঙ্গি মান্নানের বাড়িতে শপথ (বাইয়্যাত) নেয় এবং কমান্ডারের নির্দেশে যেকোনো পরিস্থিতিতে দেশের যেকোনো স্থানে জঙ্গিবাদী কার্যক্রমের জন্য প্রস্তুত ছিল।
এছাড়াও এই শপথ (বাইয়্যাত) এর একটি ভিডিও পাওয়া যায়, যা সোশ্যাল মিডিয়াতে বিভিন্ন এ্যাপসের মাধ্যমে বিভিন্ন উগ্রবাদী চ্যানেলে প্রচার করে জঙ্গিবাদে অংশগ্রহণের জন্য অন্যান্যদের উদ্বুদ্ধ করার কাজে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও ব্রিগেড আদ্-দার-ই-কুতনীকে শক্তিশালী করতে তারা বড় হুজুর ইমাম মেহেদীকে নিয়মিত বিভিন্ন মাধ্যমে ইয়ানত (অর্থ) প্রদান করত। তার মাধ্যমে শপথ (বাইয়্যাত) নেওয়া একজন ইতোমধ্যে একটি জঙ্গি আস্তানায় নিহত হয় বলে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া যায়। জঙ্গিবাদে অংশগ্রহণের জন্য অন্যান্যদের উদ্বুদ্ধ করার কাজে ব্যবহৃত হতো।
তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ বলেন, আব্দুল মান্নান ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটের বিভিন্ন স্থানে ফার্নিচারের কাজ করে। পরে টাঙ্গাইলের ভূয়াপুরের অন্য একটি ফার্নিচারের মালিক জহুরুলের সাথে কাজ শুরু করে। তার পাশের ফার্নিচারের দোকানের মালিক শমসের ও তার দোকানের মালিক জহুরুল তাকে প্রাথমিকভাবে দ্বীনের দাওয়াত দেয়। তারা বড় হুজুর ওরফে ইমামের সহযোগীদের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়। শমসের ফকির এবং জহুরুল খাঁ টাঙ্গাইলে ফার্নিচারের দোকান দেয়। সে এবং জহুরুলের সঙ্গে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ স্থানীয় ২ যুবকের পরিচয় হয়। তখন বড় হুজুরের ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে কথিত জিহাদের নানা দিক নিয়ে আলোচনা করে। এরপর বড় হুজুর তাদের উদ্বুদ্ধ করে এবং মান্নানের বাড়িতে শপথ (বাইয়্যাত) নেওয়ার ব্যবস্থা করে। শমসেরের দায়িত্ব ছিল ব্রিগেড আদ-দার-ই কুতনীর জন্য ফান্ড এর ব্যবস্থা করা। সম্পাদনা : গিয়াস উদ্দিন আহমেদ