বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তির আবহ সংক্ষিপ্ত স্কোর : বাংলাদেশ ১ম ইনিংস ৩০৫; অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস ৩৭৭/৯
এল আর বাদল : একটু স্বস্তিতে মুশফিকবাহিনী। এই স্বস্তিটা আসে দিনের তৃতীয় ও শেষ সেশনে। শেষ বিকালে অস্ট্রেলিয়ার উইকেটগুলো টপাটপ পড়ে যাওয়া স্বস্তির কারণ। অস্ট্রেলিয়ার হাতে এখনো ১ উইকেট আছে। সেটা ভাবাচ্ছে না মুশফিক-সাকিবদের। আজ চতুর্থ দিনের শুরুতেই অস্ট্রেলিয়ার ওই উইকেটা সহজেই হজম করে ফেলবে যে কোনো টাইগার বোলার। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ৩০৫ রানের জবাবে ৯ উইকেটে ৩৭৭ রান তুলে ফেলেছে সফরকারীরা। ৭২ রানের লিড নিয়ে আজ কতটা পথ এগুতে পারবে স্মিথবাহিনী।
যাই হোক, দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশ ব্যাট করতে নেমে অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। প্রথমত : অস্ট্রেলিয়ার লিড টপকাতে হবে। এরপর বড় রানের স্কোর গড়ার লক্ষ্যে লড়তে হবে অজিদের বিরুদ্ধে।
গতকাল প্রথম ইনিংসে ১৫০ থেকে ২০০ রানের লিড অস্ট্রেলিয়ার নাগালের মধ্যেই ছিল। কিন্তু হঠাৎই দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। মুস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজের বোলিং নৈপুণ্যে অজিদের লিড লাগামের বাইরে যেতে দেয়নি টাইগাররা। টেস্টের তৃতীয় দিনে বৃষ্টির কারণে সোয়া একটায় খেলা শুরু হয়। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের করা ৩০৫ রানের জবাবে ২ উইকেটে ২২৫ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামা অস্ট্রেলিয়া দিন শেষে ৯ উইকেটে ৩৭৭ রান সংগ্রহ করেছে। দিন শেষে স্টিভ ও কিফ ৮ এবং নাথান লায়ন ০ রানে অপরাজিত রয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ডেভিড ওয়ার্নার ১২৩ রানের দারুণ ইনিংস খেলেন। ৬ষ্ঠ অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান হিসেবে এশিয়ার মাটিতে ব্যাক-টু-ব্যাক সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন এই বাঁহাতি ওপেনার। এছাড়া সফরকারীদের হয়ে পিটার হ্যান্ডসকম্ব ৮২, স্টিভেন স্মিথ ৫৮ এবং ম্যাক্সওয়েল করেন ৩৮ রান। অ্যাস্টন অ্যাগার ২২ এবং হিলটন কার্টরাইট করেন ১৮ রান। বাংলাদেশের হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন মুস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজ। এছাড়া একটি করে উইকেট নেন সাকিব ও তাইজুল ইসলাম।
দুর্দান্ত শুরুর পর ৭৯ রানের ব্যবধানে ৬ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। ফলে বড় লিড নেওয়ার স্বপ্ন ভেঙে যায় দলটির। আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান ওয়ার্নার ও হ্যান্ডসকম্ব গতকাল শুরু থেকেই সাবলীল ছিলেন। সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যান ৮৮ রান নিয়ে দিন শুরু করা ওয়ার্নার। সেঞ্চুরির স্বপ্ন দেখছিলেন হ্যান্ডসকম্বও। এসময় বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক-থ্রু এনে দেন সাকিব। ওয়ার্নার তখন ৯৯ রানে দাঁড়িয়ে নাসির হোসেনের করা ৭৪তম ওভারের তৃতীয় বলে এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের শট চলে যায় স্কয়ার লেগে। সতীর্থের সেঞ্চুরির জন্য যেন তাড়া পেয়ে বসে হ্যান্ডসকম্বকে। বিপজ্জনক রানের জন্য দৌড় দেন। ওয়ার্নার তাকে ‘নো’ কল করেন। ক্রিজে ফেরার চেষ্টা করেন হ্যান্ডসকম্ব। তবে সাকিবের সরাসরি থ্রো স্টাম্পে আঘাত হানলে সাজঘরে ফিরতে হয় এই অজি ব্যাটসম্যানকে।
আউট হওয়ার আগে অস্ট্রেলিয়াকে ঠিকই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ এনে দেন হ্যান্ডসকম্ব। তৃতীয় উইকেটে ১৫২ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়ে অস্ট্রেলিয়াকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ এনে দেন এই টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান। দ্বিতীয় টেস্টের যতো নাটকীয়তা আজ চতুর্থ দিনেই মঞ্চায়ন হবে। এদিন মূলত জানান দিবে টেস্টের ভাগ্য কোন দিকে যাচ্ছে। সম্পাদনা : মোহাম্মদ রকিব হোসেন