সরকারি আমলাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া যায়
ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী
সরকারি আমলাদের অবসর গ্রহণের ৩ বছর পর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে বলে যে বিধান আছে, সেটা কমে আসতে পারে বলে যে সংবাদ গণমাধ্যমে এসেছে, এটা আসলে নির্ভর করে সরকারের উপর। সরকারি চাকরিজীবী চাকরি থেকে পদত্যাগ করা বা অবসর নেওয়ার তিন বছর পর নির্বাচন করতে পারবে।
এক্ষেত্রে একজন সরকারি চাকরিজীবী যদি মনে করেন রাজনীতি করবেন, তাহলে সরকারি কর্মচারী তো আর সাধারণ মানুষকে রাজনৈতিক সুবিধা দেয় না । একজন রাজনীতিবিদ চাইলেই সাধারণ মানুষকে সুবিধা দিতে পারে কিন্তু একজন সরকারি চাকরিজীবী চাইলেই এটা করতে পারেন না। এটা তিনি করলেও তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে দিতে হয়। এই আইনের যৌক্তিকতা আমার জানা নেই, কেন এই আইনটা করা হয়েছে। আমার বিবেচনায় মনে হয়, একজন সরকারি কর্মকর্তা যদি মনে করেন, তিনি পদত্যাগ করবেন বা তার চাকরির অবসর নেওয়ার পরে ইলেকশনে দাঁড়াবেন, সেক্ষেত্রে তার দাঁড়াতে পারা উচিত।
এতে বাধা দেওয়ার কোনো কারণ দেখি না। তবে বাধা দেওয়া যেতে পারে বা বাদ দেওয়া যেতে পারে তখনই, যখন প্রশ্ন দেখা দেয় তিনি কোনো অপরাধ করেছেন কিনা? হতে পারে তিনি ফৌজদারী অপরাধ করেছেন, অতএব সে কারণে পরবর্তী পাঁচ বছর কোনো নির্বাচন করতে পারবেন না। আমি মনে করি, কোনো সরকারি কর্মকর্তার যদি আইনগত কোনো অপরাধ না থাকে তাহলে তাকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের কোনো বাধা থাকা উচিত নয়। সমস্যা হলো রাজনীতির। এমনিতেই আমাদের দেশের রাজনীতিতে ব্যবসায়ী লোকজনের সমাগম।
প্রকৃত অর্থে ডেডিকেটেড রাজনীতিবিদ যারা দেশের জন্য কাজ করেন, জনগণের কল্যাণের জন্য কাজ করেন, আইন প্রণেতাদের মধ্যে এরকম লোকের সংখ্যা খুবই নগন্য। এটা ৩০ শতাংশও নয়। আর যে ৩০% শতাংশ আছেন, যারা ব্যবসায়ী নন, তাদের সম্পর্কে আবার সমালোচনাও আছে। তাদের কেউ কেউ নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকা-ের সঙ্গে জড়িত। কেউ কেউ আছেন মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত, কেউ মানবপাচারকারী, দুর্নীতিবাজ এইরকম লোকের সংখ্যাই এখন বেশি। এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের জন্য রাজনীতি স্বচ্ছ হওয়া দরকার। রাজনৈতিক অঙ্গনকে কোন নাগরিকের জন্য বা কোন বিশেষ শ্রেণির জন্য সংকীর্ণ করা ঠিক নয়।
পরিচিতি: সম্পাদক, দৈনিক দিনকাল
মতামত গ্রহণ: সাইফুল ইসলাম
সম্পাদনা: মোহাম্মদ আবদুল অদুদ