ধর্ষণকা-, ধর্ষণের দন্ড হয় কী!
মোমিন মেহেদী
রুপা খাতুন সুন্দর ১টি জীবনের জন্য কষ্ট করেছে; তাকেই প্রাণ দিতে হলো নৃশংসতার শিকার হয়ে। তার মায়ের কথা ‘তাদের ফাঁসি না দিলে মাইনব না।’ আমরাও মানব না রুপার হত্যাকারীদের ফাঁসির রায় না হলে, কার্যকর না হলে। কেননা, একজন রুপাই শুধু নয়; আমরা ইয়াসমিন থেকে শরু করে বুশরা, হেনা, নাজমা, সুমাইয়া সহ ১৭ হাজার ৮ শতরও বেশি মা-বোন-প্রিয়জনকে হারিয়েছি স্বাধীনতা অর্জনের পর ৪৬ বছরে। তনুর কথা ভুলতে না ভুলতেই চলে এসেছে খাদিজার কথা, খাদিজার কথা ভুলতে না ভুলতেই চলে এসেছে চন্দ্রিমার কথা; এভাবে বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে ১০৪ জন নারী এখন নির্যাতিত-ধর্ষিত হচ্ছে বলে চিল্ড্রেন এ্যান্ড উইমেন ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন জানিয়েছে। এর মধ্যে হত্যা ও ধর্ষণের শিকার হচ্ছে প্রতিদিন ৭ থেকে ১৫ পর্যন্ত। যার অধিকাংশের তথ্যই পুলিশ-প্রশাসন ও গণমাধ্যম পর্যন্ত পৌঁছায় না। পৌঁছাত না এই ঘটনাটিও।
যে ঘটনাটি টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে ঘটেছিল। বগুড়ার চারমাথা থেকে বাসটি সন্ধ্যা ৭টার পরপর ময়মনসিংহের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। বনানী এলাকা থেকে রূপাসহ আরও পাঁচ-ছয়জন যাত্রী বাসে উঠেন। সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত সব যাত্রী নেমে যান। শুধু রূপা বাসে ছিলেন।
বাস এলেঙ্গা পার হওয়ার পর সহকারী শামীম রূপাকে জোর করে বাসের পেছনের আসনে নিয়ে যায়। তখন রূপা মুঠোফোন এবং সঙ্গে থাকা পাঁচ হাজার টাকা শামীমকে দিয়ে অনুরোধ করেন তার কোনো ক্ষতি না করার জন্য। টাকা ও মুঠোফোন নেওয়ার পরে শামীম তরুণীকে হত্যা করার ভয় দেখিয়ে প্রথমে ধর্ষণ করে। পরে বাসের অপর দুই সহকারী আকরাম এবং জাহাঙ্গীর পর্যায়ক্রমে ধর্ষণ করে। বাস মধুপুর উপজেলা সদরের কাছাকাছি পৌঁছলে রূপা চিৎকার করার চেষ্টা করেন। এ সময় শামীম, আকরাম ও জাহাঙ্গীর তার ঘাড় মটকে হত্যা করে। পরে মধুপুর শহর পার হয়ে বনাঞ্চলের প্রবেশের পরেই পঁচিশ মাইল এলাকার সুমি নার্সারির কাছে রূপার মরদেহ ফেলে রেখে যায়। এর আগেও টাংগাইলের ধনবাড়িতে চলন্ত বাসে ধর্ষণ হয়েছে। একই কায়দায় পেছনের সিটে নিয়ে। এবং তাকে ময়মনসিংহে একখানে ফেলে দেওয়া হয়। ১৬ মাসেও সেই মামলার অভিযোগ গঠন হয়নি। তিনজন আসামীর মধ্যে একজন জামিন পেয়েছে। অথচ তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়ে দোষ স্বীকার করেছিল। রুপাকে ধর্ষণ হত্যার পেছনে যে পাঁচজন জড়িত তারা স্বীকার করেছে। এরপর তাদের ফাঁসিতে লটকাতে স্বাক্ষী সাবুদ আইন ফাঁক এসব কেন? পাঁচ দিনেই ঝুলিয়ে দেওয়া হোক। ধর্ষকদের সেসব ঝুলন্ত লাশের ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হোক দেশব্যাপী। আমরা চাই ৩ মাসের মধ্যে ফাঁসি; ধর্ষক নারী নির্যাতকের ফাঁসি…
লেখক : চেয়ারম্যান, নতুনধারা বাংলাদেশ-এনডিবি
সম্পাদনা : আশিক রহমান