বার্মায় বাঙালি গণহত্যা : শেখ হাসিনা হতে পারেন আজকের ইন্দিরা গান্ধী!
মাসুদ রানা
১৯৭১ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্র কর্তৃক বাঙালি জাতির পূর্বখ- গণহত্যার শিকার হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার ঘটনা যেভাবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর জন্যে বিশ্বমঞ্চে নেতৃত্বের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার সুযোগ এনে দিয়েছিল, একইভাবে রোহিঙ্গা আত্মপরিচয়দানকারী বার্মার আরাকান তথা রাখাইন প্রদেশের বাঙালিরা রাষ্ট্রীয় গণহত্যার শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয়গ্রহণ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্যে বিশ্বনেত্রী হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ এনে দিয়েছে।
ইন্দিরা গান্ধী যেভাবে প্রথমে সঠিক কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ ও তার সাফল্যের ভিত্তিতে সফল সামরিক পদক্ষেপের মধ্যদিয়ে কার্যকর ভূমিকা পালন করে হিরোতে পরিণত হন, তেমনিভাবে শেখ হাসিনাও সঠিক কূটনৈতিক ও সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে রোহিঙ্গা-সঙ্কট নিরসনে ভূমিকা রেখে বিশ্ব-রাজনীতের নেতৃত্বের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারেন।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছেÑ শেখ হাসিনার সেই বিশ্বদৃষ্টিভঙ্গী, যোগ্যতা, দক্ষতা ও সর্বোপরি সদিচ্ছা আছে কিনা। থাকলে, শেখ হাসিনার উচিত অতিসত্বর চট্টগ্রামে সফর করে সরেজমিনে শরণার্থী শিবিরগুলো পরিদর্শনের মাধ্যমে নিপীড়িত মানুষগুলোর প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করে যথাসাধ্য সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া।
শেখ হাসিনার উচিত হবে, তার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়ে তার জন্যে বিশ্বব্যাপী একটি কূটনৈতিক সফরের আয়োজন করা এবং সেই সফরে কাক্সিক্ষত সাফল্যের ক্ষেত্র তৈরি করা। আর বিশ্বব্যাপী বাঙালিদের উচিত হবে, শেখ হাসিনার সফরকালে বার্মার গণহত্যার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অব্যাহত রাখা।
শেখ হাসিনা যদি উপরের পরামর্শ অনুসরণ করেন, তিনি অচিরেই বর্মী নেত্রী অং সান সু চিকে ইতিহাসের ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করে বিশ্ব-পরিসরে অসমান্তরাল স্টেটসওম্যান হয়ে উঠতে সক্ষম হবেন। বিশ্ব এখন রোহিঙ্গা প্রশ্নে একজন কার্যকর বিশ্বনেতার ইতিবাচক ভূমিকা দেখতে চাচ্ছে।
এই পোস্টে দেওয়া আমার পরামর্শটি ব্যক্তি শেখ হাসিনার প্রতি নয়, এটি স্বাধীন বাঙালি জাতির স্বাধীন নেতৃত্বের জন্যে। কিন্তু শেখ হাসিনা যদি স্বদেশে স্বজাতিকে দুঃশাসনে শৃঙ্খলিত করে শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্যে ভারতের সেবাদাসী হন, তার পক্ষে আমার পরামর্শ মানা দুঃসাধ্য।
লন্ডন, ইংল্যান্ড, ফেসবুক থেকে