গৌরী লঙ্কেশের আগে খুন হয়েছেন যে সাংবাদিকরা
কলকাতা টুয়েন্টিফোর : রাজনীতিবিদ থেকে ধর্মগুরু বিভিন্ন ব্যক্তির অপকর্ম জনসমক্ষে তুলে ধরায় ভারতে প্রাণ দিতে হয়েছে একাধিক সাংবাদিককে। যার সর্বশেষ শিকার হয়েছেন প্রখ্যাত সাংবাদিক তথা সমাজসেবী গৌরী লঙ্কেশ। হিন্দু কট্টরবাদী ও সরকারের ব্যর্থতা প্রসঙ্গে সরব ছিলেন তিনি। এ কারণে গত ৫ সেপ্টেম্বর রাতে বেঙ্গালুরুর রাজা রাজেশ্বরী এলাকায় নিজ বাড়িতে আততায়ীরাদের গুলিতে প্রাণ হারান তিনি। খুনিরা খুব কাছ থেকে তাকে লক্ষ্য করে সাত/আট রাউন্ড গুলি করে। এ ঘটনায় বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
রাম চন্দ্র ছত্রপতি : অন্যায়ের বিরুদ্ধে কলম ধরায় শুধু গৌরী লঙ্কেশ একা নন, এমন শাস্তি পেয়েছেন একাধিক সাংবাদিক। এদেরই একজন রাম চন্দ্র ছত্রপতি। হরিয়ানার সিরসায় পুরা নামে এক স্থানীয় সংবাদপত্রে কাজ করতেন তিনি। ডেরা সচ সৌদার বাবা গুরমিত রাম রহিম সিংয়ের ধর্ষণকা- তিনিই প্রথম জনসমক্ষে উন্মোচন করেন। ধর্ষক বাবার বিরুদ্ধে অজ্ঞাতপরিচয় তরুণীর লেখা চিঠি তিনিই প্রথম প্রকাশ্যে আনেন। এজন্য ২০০২ সালের ১৪ অক্টোবর ২ আততায়ীর গুলিতে খুন হন তিনি। তবে ছত্রপতির ত্যাগ বৃথা যায়নি। এত বছর পরে হলেও এখন জেলের ঘানি টানছেন ধর্ষক বাবা রাম রহিম।
রাজদেব রঞ্জন : জনতা দলের প্রাক্তন সাংসদ মহম্মদ সাহাবুদ্দিনের অপকর্ম প্রকাশ করায় প্রাণ দিতে হয়েছে বিহারের দৈনিক সিওয়ানের সাংবাদিক রাজদেব রঞ্জনকে। অবশ্য এজন্য সাজাও পেতে হয়েছে সাহাবুদ্দিনকে। তার স্থান হয় তিহার জেলে।স নরেন্দ্র ধাবলকর : ধর্মের নামে অন্ধবিশ্বাস ছড়ায় এমন ধর্মগুরুদের বিরুদ্ধে সরব ছিল নরেন্দ্র ধাবলকরের কলম। সে কারণে নিজের শহর পুনের রাস্তায় তাকেও প্রাণ দিতে হয়। ২ যুবক প্রকাশ্যে তাকে ৩ রাউন্ড গুলি করে হত্যা করে।
কালবর্গি : লেখনির মাধ্যমে সনাতন ভারতীয় সংস্কৃতির সঙ্গে আধুনিকতার মেলবন্ধন ঘটাতে চেয়ে অনেকের চক্ষুশূল হয়েছিলেন কালবর্গি। এ জন্য ধারওয়াদের নিজ বাড়িতেই খুন হতে হয় তাকে। ২০১৫ সালের আগস্টে এক আততায়ী তাকে গুলিতে মারা যান তিনি।
সন্দীপ কোঠারি : বে আইনি জমিদখল ও বে আইনি খনন নিয়ে সোচ্চার ছিলেন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক সন্দীপ কোঠারি। একটি বড়সড় দুর্নীতির পর্দা ফাঁস করায় মধ্য প্রদেশের বালাঘাটে খুন হন তিনি।
জগেন্দ্র সিং : উত্তর প্রদেশের মন্ত্রী রামমূর্তি সিং বর্মার বিরুদ্ধে লেখার জন্য মারা যান সাংবাদিক জগেন্দ্র সিং। ২০১৫ সালের ৮ জুন তাকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় রামমূর্তি সিং বর্মাকে অভিযুক্ত করা হলেও পুলিশ জানায় হত্যা নয়, গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন জগেন্দ্র সিং।
গোবিন্দ পানসারে : বর্ষীয়ান সিপিআই নেতা গোবিন্দ পানসারের মৃত্যু রহস্যের জট এখনও খোলেনি। রাজনীতির ক্ষেত্রে তার যুক্তিসঙ্গত দৃষ্টিভঙ্গি অনেকের ক্ষতি করেছিল। এজন্য কোলাপুরে ২০১৫ সালের ১৬ ফেব্র“য়ারি প্রাতঃভ্রমণ করতে গিয়ে আর ফিরে আসেননি তিনি। সম্পাদনা : মোনা