ফ্লোরিডায় আছড়ে পড়লো ইরমা, বাড়ছে ঝড়ের বেগ
মোনা : আটলান্টিক মহাসাগরে স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ও ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড় ইরমা গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় আঘাত হানতে শুরু করেছে। আপাতত তার গতিবেগ অপেক্ষাকৃত কিছুটা কম। গতকাল বোববার ভোরের আলো ফোটার আগেই তা-ব শুরু করেছে হ্যারিকেন ইরমা। বিবিসি ও আনন্দবাজার
ইরমা আছড়ে পড়তেই প্রতি ঘণ্টায় ১৩০ মাইল বা ২০৯ কিলোমিটার বেগে হাওয়া বইতে শুরু করে। এর গতি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। ইরমা আছড়ে পড়তেই সমুদ্র উত্তাল, আকাশ অন্ধকার, ভারি বৃষ্টি শুরু হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, আগাম সতর্কতা হিসেবে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে গোটা ফ্লোরিডায়। ফ্লোরিডা উপকূল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ৬৫ লাখের বেশি বাসিন্দাকে।
ফ্লোরিডার গভর্নর রিক স্কট গতকাল জানান, ঘূর্ণিঝড়টি আকারে পুরো ফ্লোরিডা রাজ্য থেকেও বড়। দক্ষিণ-পূর্ব এলাকায় প্রচ- ঝড় হচ্ছে। উপকূলের দিকে ২০৯ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইছে। বাড়িঘর ডুবিয়ে দেওয়ার মতো জলোচ্ছ্বাস হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, ইরমার তা-ব শুরু হয়ে গেলে আর উদ্ধারকারী দল পাঠানো যাবে না, তাই যত দ্রুত সম্ভব নিরাপদ জায়গায় চলে যেতে বাসিন্দাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগেভাগেই তাই বাড়ির জানালা-দরজা কাঠের টুকরো লাগিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন বাসিন্দারা। ঘরে জমিয়েছেন বালির বস্তা। অনেক বেশি করে খাবার এবং জল সংগ্রহ করে রাখার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বিমানের ওঠানামাও। শহরের স্কুলগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে সেগুলোকে ত্রাণ শিবির হিসেবে কাজে লাগানোর প্রস্তুতি নিয়েছে ফ্লোরিডা সরকার। এই সমস্ত শিবিরে মজুত রাখা হয়েছে জীবনদায়ী ওষুধ। ২৪ ঘণ্টা উপস্থিত থাকবেন চিকিৎসক।
আমেরিকার রাষ্ট্রীয় দুর্যোগ মোকাবিলা সংস্থার পরিচালক ব্রক লং বলেন, বিপজ্জনক হিসাবে চিহ্নিত এলাকাগুলো থেকে সবাইকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশ, নিরাপত্তা বাহিনী, সেনা সবাইকে তৈরি রাখা হয়েছে।
দক্ষিণ ফ্লোরিডার উপর দিয়ে ইরমার সবচেয়ে ভয়ানক অংশটি যাওয়ার আশঙ্কা করা হয়। ফলে সেখান থেকে সবাইকেই নিরাপদ দূরত্বে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
আমেরিকার ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস সূত্রে খবর, আপাতত ক্যাটেগরি-৪-এ রয়েছে ইরমা। গতি বাড়িয়ে ক্যাটেগরি-৫ বা প্রায় ২৫০ কিলোমিটার গতিবেগে ইরমা তছনছ করতে পারে ফ্লোরিডাকে। ইতিমধ্যেই কিউবার ক্যামাগুয়ে দ্বীপপুঞ্জে ইরমার তা-বে প্রাণ হারিয়েছেন ২৫ জন। ধ্বংস ক্ষয়ক্ষতির ছবিটা আরও ভয়ানক বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।