বাংলাদেশকে নিয়ে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গভীর ষড়যন্ত্র?
বিশ্ববাসীর চোখকে ফাঁকি দিয়ে মিয়ানমার অতি গোপনে গত বারো বছর থেকে উত্তর কোরিয়া থেকে পারমাণবিক প্রযুক্তি অর্জনের সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানালেও ভারত ও চীন নিরবতা পালন করে যাচ্ছে। মিয়ানমারে গণতন্ত্র রয়েছে, এটা সবাই মনে করেন কিন্তু এমন গণতন্ত্র রয়েছে যা সেনাবাহিনী দ্বারা নির্ধারিত হয়ে থাকে। এছাড়া মিয়ানমারে কোনো ধর্ম বিশ্বাসীরা থাকবেন এটা নির্ধারণ করেন উগ্রবৌদ্ধ সন্যাসীরা। এরা নিজেদের ছাড়া অন্য ধর্ম বিশ্বাসীদের তীব্র ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখে থাকেন। মানুষ হিসেবে তাদেরকে স্বীকৃতি দিতেও রাজি নন। তারা মনে করেন তারা গৌতমবুদ্ধের আধ্যাত্মিক সন্তান। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে গৌতমবুদ্ধ ছিলেন শান্তি প্রিয় বাণী প্রচারকারী। কিন্তু তার বাণীটি মিয়ানমারের বৌদ্ধ সন্যাসীরা ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করেছেন। মিয়ানমারের সেনা গোয়েন্দা সংস্থা পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবানে উপজাতিদের অতি গোপনে সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। মাঝে মাঝে তারা ধরা পড়েন কিন্তু কিভাবে তাদের কাছে সামরিক সরঞ্জাম এলো সেটা দেশবাসী আর জানতে পারেন না। মিয়ানমারের সেনা গোয়েন্দা সংস্থা নতুন একটি উগ্রবাদী সংগঠন গড়ে তুলেছে যার নাম ‘৯৬৯’। এদের কাজ হচ্ছে আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামকে জ্বলন্ত অগ্নিকু-ে পরিণত করা। এরা বাঙালিদের ও বিদেশি পর্যটকদের অপহরণ করা, ধর্ষণ করা, চাঁদাবাজি করা ও খুন করাকে স্বাধীনতার আন্দোলন মনে করে। মূল কাজটি অর্থাৎ এই দুষ্কর্মের পরিকল্পনাটি করে থাকেন মিয়ানমারের সেনা গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। এরাই রাখাইন প্রদেশে অসহায় রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর অত্যাচার গত ৪০ বছর থেকে করে আসছেন। বিশ্ববিবেকের নিরবতাকে কাজে লাগিয়ে মিয়ানমারের মূল ক্ষমতাটা এখনো সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। মিয়ানমারে যে গণতন্ত্র আমরা দেখতে পাই সেটি মূলত কাগজী গণতন্ত্র। ‘৯৬৯’ এর সংগঠনটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন আদিবাসী মারমা সম্প্রদায়ের কয়েকজন। এদের প্রধানকে বর্তমানে বার্মিজ বিন লাদেন নামে ডাকা হচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তিপ্রিয় বৌদ্ধদের এই সংগঠনটি উগ্রবাদের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। যে কারণে সেখানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, সেনা গোয়েন্দা সংস্থা, বিজিবির উপস্থিতি জরুরি হয়ে দেখা দিয়েছে। এছাড়া দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার টহল অতি প্রয়োজন। শুধু দিনে নয় রাতের বেলায়ও হেলিকপ্টারের অভিযান প্রয়োজন। সন্ত্রাসীরা স্থান যদি পরিবর্তন করতে চান তাহলে হেলিকপ্টারের ক্যামেরায় তা ধরা পড়ে যাবে। মিয়ানমার চাচ্ছে বাংলাদেশের পাবর্ত্য চট্টগ্রামকে বৌদ্ধদের একটি স্বাধীনদেশ হিসেবে গড়ে তুলতে। যে কারণে শান্তিপ্রিয় বৌদ্ধদের সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে, সামরিক সরঞ্জাম দিয়ে বাংলাদেশের ভেতরে অরাজকতা সৃষ্টি করছে। যদি এখন থেকে এই সংগঠনটিকে নিয়ন্ত্রণে না আনা যায় তাহলে এরাও শান্তিবাহিনীদের মতো নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। বাংলাদেশের যেসব উগ্রবাদী বৌদ্ধরা সন্ত্রাস প্রিয় তারা এই সংগঠনে যোগ দিচ্ছেন। এরা ধর্মের নামে মিয়ানমারের তৈরি ইয়াবা বাংলাদেশে নিয়ে আসছেন আর সবাই জানেন মিয়ানমারে যেসব কারখানায় ইয়াবা তৈরি হয় তার মূল মালিকরা হচ্ছেন মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। মিয়ানমারের সঙ্গে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দুর্গম অঞ্চলে এই সন্ত্রাসীদের আগমনটা বেশি। খুব দ্রুত তারা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে যায় এবং দ্রুত মিয়ানমারে পালিয়ে যায়। যদি এখন থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনা গোয়েন্দা সংস্থার নজরদারি বাড়ানো না যায় তাহলে এই সংগঠনটিকে আর কখনোই নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে না। এরাই মিয়ানমারে গিয়ে সেখানকার খুনি বৌদ্ধ সন্যাসী, সেনাসদস্য, পুলিশ সদস্য ও রাখাইন উপজাতিদের রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর অত্যাচার করার হত্যা করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। বাংলাদেশ এখন থেকে যদি নিজের ভূ-খ-কে চারপাশের শত্রু দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার আগেই সর্তক না হয় তাহলে সবকিছু আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে। প্রমাণিত হয়েছে চীন ও ভারত আমাদের কেমন বন্ধু অর্থাৎ এই দুই বন্ধু দেশের কথা ও কাজের কোনো মিল নেই। যা করার আমাদের নিজেদেরই করতে হবে। সরকারকে মনে রাখা উচিত যে জনগণ তাদের এ বিষয়ে সাহায্য করার জন্য জীবন দিতেও প্রস্তুত আছেন।
লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট/সম্পাদনা: আশিক রহমান