ব্যর্থতার শেষ আছে, সাফল্যের কোনো শেষ নেই!
জান্নাতুল নাঈম প্রীতি
বাংলাদেশের প্রতিটি মেয়ের উচিত এই মেয়েটিকে চেনা! ২০১৩ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় সেই মেয়েটিকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি দিল যে মেয়েটি মাত্র নয় বছর বয়সে ধর্ষণের শিকার হয়েছিল। মাত্র চৌদ্দবছর বয়সে ধর্ষণের ফলে সে জন্ম দিয়েছিল নিজের প্রথম সন্তান, যে জন্মের দ্বিতীয় সপ্তাহেই মারা গিয়েছিল!
একে তো মেয়ে, তার ওপর আফ্রিকান জাতের। দারিদ্র্য, অবহেলা, অপবাদ, কালো গায়ের রঙ- এমন কিছু নেই যা নিয়ে তাকে গালি শুনতে হয়নি। কিন্তু মেয়েটি থেমে থাকেনি, দুঃসময়গুলো পার করে হয়ে উঠেছে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় টকশো’র উপস্থাপিকা, সাংবাদিক এবং বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারী। মেয়েটির নাম অপরাহ উইনফ্রে, যাকে আদর করে ডাকা হয়Ñ কুইন অফ অল মিডিয়া!
পৃথিবীর সবচেয়ে অসাধারণ শো এর নাম যদি হয় অলিম্পিক গেমস, তাহলে গণমাধ্যমের সবচেয়ে জনপ্রিয় শো এর নাম- অপরাহ উইনফ্রে শো! অপরাহকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল কিভাবে গণমাধ্যমের মাধ্যমে ভালো কিছু করার কথা ভেবেছিলে? অপরাহ জানিয়েছিলেনÑ১৯৯৪ সালে আমি একজন ছোট্ট মেয়ের ইন্টারভিউ নিয়েছিলাম। সে মেয়েটি অভাবগ্রস্ত ব্যক্তিদের সাহায্য করার জন্য চাঁদা আদায়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে নিজে নিজেই হাজার ডলার পর্যন্ত জোগাড় করেছে। তখন আমার মনে হলো, যদি এই নয় বছরের মেয়েটি একটা ঝুড়ি ও বিশাল হৃদয় নিয়ে এমন কাজ করতে পারে, তবে আমি কেন পারব না? তখন আমি দর্শকদের অনুরোধ করলাম, তাদের সাধ্যমতো সাহায্য করতে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সংগ্রহ একসময় তিন মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেল। এই টাকা থেকে আমরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি স্টেটের একজন করে শিক্ষার্থীকে সাহায্য করতে শুরু করলাম।
হাভার্ডে দেওয়া ভাষণে অপরাহ বলেছিলেন, জীবনের একটা বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে এমন একটা জীবনবৃত্তান্ত তৈরি করা, যেখানে তুমি কী হতে চাও, তাও বলবে। তুমি কী অর্জন করেছ, সেটা নয়, বরং তুমি কীভাবে অর্জন করেছ।
সত্যিই তাই, প্রতিটি সফল মানুষ কি অর্জন করেছে সেটা আমরা দেখি, কিন্তু কীভাবে অর্জন করেছে সেটা দেখি না। অথচ জিতে যাওয়ার গল্প লেখা হয় হেরে যাওয়ার গল্পে। কারণ ব্যর্থতার শেষ আছে, সাফল্যের কোনো শেষ নেই! ফেসবুক থেকে