রাখাইন রাজ্যের ১৭৬টি রোহিঙ্গা মুসলিম গ্রাম জনমানবশূন্য ‘সেফটি জোন’ প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান মিয়ানমারের
হুমায়ুন কবির খোকন : ‘সেফটি জোন’ (নিরাপদ অঞ্চল) তৈরি করতে বাংলাদেশের দেওয়া প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে মিয়ানমার সরকার। মিয়ানমারের ভেতরে সীমান্তের কাছে ওই অঞ্চল তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিল বাংলাদেশ। মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সুচির কার্যালয়ের মুখপাত্রের বরাত দিয়ে দেশটির জাতীয় দৈনিক মিয়ানমার টাইমস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। স্টেট কাউন্সিলর অফিসের মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ইউ জ্য তে বলেছেন, নিরাপদ অঞ্চল তৈরির পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান করেছে সরকার। একবার প্রতিষ্ঠা হয়ে গেলে আন্তর্জাতিক কর্তারা এর নিয়ন্ত্রণ নেবেন। জাগো নিউজ
গত সপ্তাহে রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব রেড ক্রসের মাধ্যমে নিরাপদ অঞ্চল তৈরির জন্য মিয়ানমারকে একটি প্রস্তাব পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার।
গত বুধবার রাজধানী নেইপিদোতে এক সংবাদ সম্মেলনে নিরাপদ অঞ্চল তৈরির প্রস্তাবের ব্যাখ্যা করেন ইউ জ্য তে। একইসঙ্গে দেশটির নেত্রী অং সান সুচি নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের আসন্ন অধিবেশনে কেন অংশ নেবেন না সে বিষয়েও কথা বলেন তিনি। সুচির কার্যালয়ের এই মুখপাত্র বলেন, রাখাইন রাজ্যের দুটি সম্প্রদায়ের পুনর্বাসন ও মানবিক সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা করার লক্ষ্যেই জাতিসংঘের সম্মেলনে অংশ নেওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করেছেন স্টেট কাউন্সেলর সুচি।
এদিকে ভারতের হিন্দুস্তান টাইমস গতকাল দেশটির প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইউ জ্য তের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, নতুন করে সহিংসতা শুরুর পর রাখাইন রাজ্যের ১৭৬টি রোহিঙ্গা মুসলিম গ্রাম এখন জনমানবশূন্য। রাখাইনের তিনটি শহরতলিতে মোট ৪৭১টি গ্রাম রয়েছে। এর মধ্যে ১৭৬টি গ্রামে কোনো মানুষ নেই। আশপাশের ৩৪টি গ্রাম থেকেও লোকজন পালিয়ে চলে যাচ্ছে। তারা প্রতিবেশী দেশগুলোয় গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে। প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র অবশ্য ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহার করেননি।
জ্য তে আরও বলেন, যারা পালিয়ে গেছে, তাদের সবাইকে ফিরতে দেওয়া হবে না। তাদের যাচাই-বাছাই করা হবে। যাচাই-বাছাই শেষে তাদের দেশে ফিরতে দেওয়া হবে। মুসলিম রোহিঙ্গা বিদ্রোহীরাই বাড়ি-ঘরে আগুন দিচ্ছেÑ মিয়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে এমন দাবি করা হলেও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা জানিয়েছে, এরইমধ্যে এই সহিংসতার শিকার হয়ে প্রায় তিন হাজার রোহিঙ্গা প্রাণ হারিয়েছেন। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী