বাপেক্স- পেট্রোবাংলার সঙ্গে নাইকোর চুক্তি বাতিল যথার্থ
অধ্যাপক এম শামছুল আলম
এই সেক্টরে যে দুর্নীতি আর অনিয়মের বাসা বেঁধেছে এবং শুরু থেকেই বলা যেতে পারে, দীর্ঘদিন ধরে ধারাবাহিক ভাবে এইগুলো বেগবান হচ্ছে। কোনো প্রতিকার করা যাচ্ছে না। অন্ততঃ এই রায়ে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপিত হলো। আর তা ছাড়া, গ্যাসের অভাবে যেভাবে জ্বালানী নিরাপত্তাহীন অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। তাছাড়া ছাতকে যে গ্যাস পুড়ে গেছে, এতে অবকাঠামো নষ্ট হয়ে গেছে। ওই ক্ষেত্র থেকে আর গ্যাস তোলার কোনো সুযোগ নেই বা অকার্যকর হয়ে গেছে। গ্যাসের ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় ১ শত ১৭ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ হিসেবে নাইকোর কাছ থেকে পাওয়ার পথ সুগম হলো। বিদেশি কোম্পানীর কাছ থেকে ক্ষতি পূরণ আদায়ের ব্যবস্থা আমাদের ছিল না। বিদেশি কোম্পানীর সঙ্গে কোনো চুক্তি হলে সেই চুক্তি বাতিল হতে পারে, এই দৃষ্টান্ত দেশে ছিলনা। এটা নজিরবিহীন ছিল। এটা যে বাতিল চাওয়া যায়, বাতিল করা যায়, বাতিল হয় এটাতো দৃষ্টান্ত ছিল না। এই দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠিত হলো। এই ব্যাপারগুলো বলতে পারি যে, আমাদের জাতীয় সক্ষমতার আরেকটা ছবি আমি দেখতে পাই বা আমি দেখছি। একটা জাতি বিদেশি কোম্পানীর সঙ্গে চুক্তি করে তা বাতিল করার ক্ষমতা রাখে না, এই রকম যখন সেই জাতির ধারণা জন্মে সেই জাতির একজন নাগরিক হিসেবে জাতীয়তা বোধ থেকে তারা একটা হীনমন্নতায় ভোগছে। এটা আমি বা আমার জাতির জন্য লজ্জাজনক।
আজকে অত্যন্ত সেই জায়গা থেকে স্বস্তি পাচ্ছি। এবং আমি গর্ববোধ করছি যে আমরা সেটা পারি। আমাদের শাসন বিভাগের যত সীমাবদ্ধতা থাকুক, তাদের চরিত্র যত নষ্ট হয়ে যাক, সার্বিক ভাবে আমাদের জাতীয় সক্ষমতা এখনো নষ্ট হয়নি। যে আমরা আসলে এর প্রতিকার পেতে অক্ষম বা অযোগ্য। প্রথমত যে পদক্ষেপ নিতে পারে সেটা হচ্ছে যে, সরকার যে ক্ষতিপূরণ চেয়েছে। সেটা সরকার পেশ করেছে। বিদেশে বিনিয়োগ বিরোধ নিষ্পত্তি সালিশে আদালতে জোরে সোরে চেষ্টা চালাতে পারে। যদি সেই চেষ্টায় আগে যে এডভোকেট নিয়োগ করেছিলেন তাদের ভূমিকা নিয়ে বিতর্ক আছে। তাদের ভূমিকা এবং তাদের সততা ও তাদের সচ্ছতা বির্তকিত। এখন যথাযথ ভাবে আইনি প্রক্রিয়া যাতে ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায়, সে ব্যাপারে যথাযথ উদ্যোগ নেওয়া যায়। যারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ছিল, যে সমস্ত কর্মকর্তা ব্যক্তিবর্গ, যেহেতু কোর্টের নিদের্শনা আছে এই দুর্নীতির সাথে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। কোর্টের যে নিদের্শনা তা বাস্তবায়নে সরকার উদ্যোগ নিতে পারে প্রশাাসনিক ভাবে, পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত করে চিহিৃতদের বিচারের হাতে সোপর্দ করতে পারে।
পরিচিতি: জ্বালানী বিশেষজ্ঞ
মতামত গ্রহণ: সাইফুল ইসলাম
সম্পাদনা: মোহাম্মদ আবদুল অদুদ