রোহিঙ্গা নিধন বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ চাই
ব্যারিস্টার মো. আকবর আমিন বাবুল
রোহিঙ্গাদের জাতিগতভাবে নিশ্চিহৃ করার লক্ষে মিয়ানমার সরকার কর্তৃক বর্বরোচিত ঘটনা ঘটানো হয়েছে। যার ফলে আমাদের দেশের পাবর্ত্য চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার সীমান্তের নাফ নদীর অববাহিকায় আজকে যে দৃশ্য দেখা যাচ্ছে তা খুবই বেদনাদায়ক ও মর্মান্তিক। আসছে অনেক অসহায় মানুষ, কেউ হয়তো লাশ হয়ে, কেউ হয়তো অর্ধ লাশ হয়ে।
নারী, শিশু, বৃদ্ধ সবাই আসছে জীবন বাঁচানোর জন্য। বাংলাদেশ সরকারের আজকের যে ভূমিকা, বলতে গেলে, এটি একটু পিছনে অবস্থানের ভূমিকা। প্রথমে সরকার একটা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিল। ভাবছিলো এদেরকে আসতে দেওয়া যাবে না। এদেরকে আসাটা বন্ধ করে দিতে হবে। মিয়ানমার যে রকম অসভ্য, বর্বর ও মানবতাবিরোধী কার্যক্রম চালাচ্ছে, এই সময়ে বাংলাদেশ সরকারের নিরব থাকাটা অনুচিত। একরকম অসম্ভব।
বাংলাদেশ মনে করেছে, বিশ্ব জনমত যখন রোহিঙ্গাদের পক্ষে তখন আমরা নিরব থাকাটা ঠিক হবে না। সরকার তখন তার পলিসি পরিবর্তন করে তাদেরকে আসার একটা জায়গা করে দিয়েছে। এখন এই জায়গা করে দিতে গিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, ওরা কীভাবে থাকছে? প্রাথমিক অবস্থায় বাংলাদেশ টোটালই ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশ দেশের অভ্যন্তরীণ জনগণের চাপে হোক, আন্তর্জাতিক চাপে হোক পলিসি পরিবর্তন করেছে। মনে রাখা দরকার যে, এই সমস্যাটা কিন্তু আজকের নয়।
এটা পুরানো সমস্যা। আগে একবার রোহিঙ্গারা এসেছিল। আমার যতদূর মনে পড়ে, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সাহেব সেখানে গিয়ে সেটেল্ড করার চেষ্টা করেছিলেন। তিনি সাফল্যতার সাথে সেটাকে সমাধান করতে পেরেছিলেন।
রোহিঙ্গারা আমাদের প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের একটি জাতিসত্তা । এই জাতিসত্তার উপরে জাতিগত নিধনযজ্ঞ চলছে। যেহেতু আমাদের সংবিধানে প্রবিধান আছে, আমরা যেহেতু স্বাধীনতাকামী, এই জাতিগত নিধনযজ্ঞ’র বিরুদ্ধে আমাদের নিপীড়িত মানুষের পাশে থাকার প্রয়োজন রয়েছে এবং এটি আমাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব। আমাদের সংবিধানে এটির বাধ্যবাধকতা রয়েছে। দূরদর্শ কূটনৈতিক তৎপরতা ছাড়া সাফল্যের কোনো পথ নেই। জাতিগত নিধনযজ্ঞ বন্ধে এবং রোহিঙ্গাদের নিজের দেশ মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে কার্যকর পদক্ষেপ চাই।
পরিচিতি: লেখক, গবেষক ও এডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
মতামত গ্রহণ: মোহাম্মদ আবদুল অদুদ
সম্পাদনা: আশিক রহমান