পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের ৩৮ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি
ডেস্ক রিপোর্ট : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট বাবদ ৩৭ কোটি ৮০ লাখ ৭০ হাজার ৯৬৩ টাকা ফাঁকি দিয়েছে। ২০১০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে এ ভ্যাট ফাঁকি দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি মূল্য সংযোজন কর (মূসক) নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের এক নিরীক্ষা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। জাগো নিউজ
ভ্যাট বাবদ সরকারের কোষাগারে মোটা অংকের টাকা জমা না করে ফাঁকি দেয়ায় পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সকে মূল্য সংযোজন কর আইন ১৯৯১ অনুযায়ী মোটা অংকের সুদ গুণতে হবে। ফাঁকি দেয়া ভ্যাটের বিপরীতে প্রতিষ্ঠানটিকে সুদ বাবদ পরিশোধ করতে হবে ৩০ কোটি ২ লাখ ৮ হাজার ৭৬০ টাকা। সে হিসাবে বীমা কোম্পানিটির কাছে সরকারের মূসক বাবদ পাওনা রয়েছে ৬৭ কোটি ৮২ লাখ ৭৯ হাজার ৭২৪ টাকা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পাইওনিয়র ইন্স্যুরেন্স বাতিল করা এম আর, সি এ ফার্মের বার্ষিক অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী বিভিন্ন খাতে উৎসে কর্তনযোগ্য মূসক, অফিস/স্থাপনা ভাড়া এবং এজেন্সি কমিশন ও কমিশন অন রি-ইন্স্যুরেন্স সিডেড’র বিপরীতে মূসক ফাঁকি দিয়েছে।
বীমা কোম্পানিটি ভ্যাট বাবদ সবচেয়ে বেশি ফাঁকি দিয়েছে এজেন্সি কমিশন ও কমিশন অন রি-ইন্স্যুরেন্স সিডেড-এর বিপরীতে। এ খাতে প্রতিষ্ঠানটির ফাঁকি দেয়া ভ্যাটের পরিমাণ ৩৭ কোটি ৬৪ লাখ ৯২ হাজার ৪৩৪ টাকা। এই ফাঁকি দেয়া ভ্যাটের ওপর সুদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৯ কোটি ৯২ লাখ ২৬ হাজার ৯১৪ টাকা। পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স অন্য যে খাতে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে এর মধ্যে সি এ ফার্মের বার্ষিক অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী বিভিন্ন খাতে উৎসে কর্তনযোগ্য ভ্যাট পরিশোধ করা হয়নি নয় লাখ ৯৭ হাজার ৯১২ টাকা।
এছাড়া অফিস/স্থাপনা ভাড়ার বিপরীতে বীমা কোম্পানিটি ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে এক লাখ ৬০ হাজার ৪৬ টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, নিরীক্ষা প্রতিবেদনে পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে মোটা অংকের ভ্যাট ফাঁকি দেয়ার তথ্য উঠে আসায় গত ২ আগস্ট বীমা প্রতিষ্ঠানটির প্রতিনিধিদের বক্তব্য গ্রহণ করে মূসক নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। অধিদফতরের পক্ষে সে বক্তব্য গ্রহণ করেন সহকারী পরিচালক পারভীন বেগম চৌধুরী। আর প্রতিষ্ঠানের পক্ষে জেনারেল ম্যানেজার ধ্রুব কুমার গুহ ও সহকারী জেনারেল ম্যানেজার রেজোওয়ানুল করিম উপস্থিত ছিলেন।
ওই বৈঠকে অধিদফতরের পক্ষ থেকে পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্সের কাছে যেসব ক্ষেত্রে সরকারের রাজস্ব পাওনা রয়েছে সে তথ্য উত্থাপন করা হয়। তবে কোম্পানির প্রতিনিধিরা ওই রাজস্ব পরিশোধ না করার বিপরীতে কোনো আইনানুগ সন্তোষজনক বক্তব্য দিতে পারেনি। ফলে নিরীক্ষা দলের উত্থাপন করা আপত্তি আইনানুগভাবে সঠিক বলে প্রতিয়মান হয় এবং প্রতিষ্ঠানটির ৩৭ কোটি ৮০ লাখ ৭০ হাজার ৯৬৩ টাকা ফাঁকি দেয়ার তথ্য পাওয়া যায়। সম্পাদনা : মোনা হক